ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
স্বপ্নদোষ হলে গোসল ফরজ হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
হযরত উম্মে সালমা রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ أَنَّهَا قَالَتْ جَاءَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ امْرَأَةُ أَبِي طَلْحَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ : ( إِنَّ اللَّهَ لَا يَسْتَحْيِي مِنْ الْحَقِّ هَلْ عَلَى الْمَرْأَةِ مِنْ غُسْلٍ إِذَا هِيَ احْتَلَمَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَمْ إِذَا رَأَتْ الْمَاءَ )
তিনি বলেন,হযরত আবু তালহা রাযি এর স্ত্রী উম্মে সুলাইম রাযি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট এসে বললেন,ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ! নিশ্চয় আল্লাহ হককে প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না,মহিলার উপর কি গোসল ফরয হবে, যখন মহিলার স্বপ্নদোষ হবে?
রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,হ্যা মহিলার উপরও গোসল ফরয হবে,যখন মহিলা পানিকে দেখবে।(সহীহ বোখারী-৩৭৩,সহীহ মুসলিম-৪৭১)
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ خَالِدٍ الْخَيَّاطُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ الْعُمَرِيُّ، عَنْ عُبَيْدِ اللهِ، عَنِ الْقَاسِمِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الرَّجُلِ يَجِدُ الْبَلَلَ وَلَا يَذْكُرُ احْتِلَامًا قَالَ " يَغْتَسِلُ " . وَعَنِ الرَّجُلِ يَرَى أَنَّهُ قَدِ احْتَلَمَ وَلَا يَجِدُ الْبَلَلَ قَالَ " لَا غُسْلَ عَلَيْهِ " . فَقَالَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ الْمَرْأَةُ تَرَى ذَلِكَ أَعَلَيْهَا غُسْلٌ قَالَ " نَعَمْ إِنَّمَا النِّسَاءُ شَقَائِقُ الرِّجَالِ "
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, যে ঘুম থেকে জেগে (বীর্যপাতে দরুণ কাপড়) ভিজা দেখতে পায় অথচ স্বপ্নদোষের কথা তার স্মরণ হচ্ছে না। তিনি বললেন, তাকে গোসল করতে হবে। এটাও জিজ্ঞাসা করা হল যে, এক ব্যক্তির তার স্বপ্নদোষ হয়েছে বলে মনে পড়ছে, অথচ কাপড়ে কোন ভিজা দেখতে পেল না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে গোসল করতে হবে না। উম্মু সুলাইম (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! নারীরাও (পুরুষের) অনুরূপ কিছু দেখতে পেলে তাদেরও কি গোসল করতে হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, নারীরা তো পুরুষের মতই।
তিরমিযী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ কেউ জাগ্রত হয়ে কাপড় ভিজা পেলো কিন্তু স্বপ্ন দোষের কথা স্মরণ হচ্ছে না, হাঃ ১১৩), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ কারো স্বপ্ন দোষের কথা মনে হচ্ছে কিন্তু কাপড় ভিজা দেখলো না হাঃ ৬১২), আহমাদ (৬/২৫৬), দারিমী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, কেউ কাপড় ভিজা দেখলো কিন্তু স্বপ্ন দোষের কথা স্মরণ করতে পারলো না, এরূপ অবস্থায় করণীয় কি? হাঃ ৭৫৬,আবু দাউদ ২৩৬),
স্বপ্নদোষের কারণে গোসল ফরয হবে।মনে থাকুক বা নাই থাকুক।যদি জাগ্রত হওয়া পর বীর্যের আছর পরিলক্ষিত হয়,তাহলে এক্ষেত্রে গোসল ফরয হবে।
অন্যথ্যায় নয়।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর বীর্যের আছর পরিলক্ষিত না হলে এক্ষেত্রে গোসল ফরজ হবেনা।
তবে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর ভেজা দেখলে,সেটি মযি নাকি বির্য সেই ব্যপারে সন্দেহ হলে ফরজ গোসল করে নিবে।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(০২)
এক নং প্রশ্নের জবাব হিসেবে যতবার তার উপর গোসল ফরজ হয়েছিলো,সেটির আনুমানিক একটি হিসাব করে সেই ফজর নামাজ গুলির কাজা আদায় করবে।
(০৩)
মূলত মাগরিবের আযান এর সময় থেকেই রুম বন্ধ করা সুন্নাত।
তবে নিরাপত্তা থাকলে ও বিশেষ প্রয়োজনে রুম খোলা থাকলে গুনাহ হবেনা।
রুম বন্ধ করার পর পরবর্তীতে বিশেষ প্রয়োজনে রুমের দরজা খোলা যাবে।
তবে এভাবে খুলে রাখা যাবেনা।
খুলে আবার বন্ধ করতে হবে। তবে নিরাপত্তা থাকলে ও খুলে রাখার বিশেষ প্রয়োজন থাকলে তাহা ভিন্ন কথা।
(০৪)
তার কি পুরো ওয়াক্ত জুরেই সাদা স্রাব নির্গত হয়?
নামাজের পুরো ওয়াক্তের কোনো সময়েই কি সে পবিত্র অবস্থায় ছোট সুরা দিয়ে হলেও নামাজ আদায় করতে পারছেনা?
যদি তাই হয়,সেক্ষেত্রে সে মা'যুর।
সে প্রশ্নে উল্লেখিত নিয়মে নামাজ আদায় করতে পারবে।
(০৫)
এক দিরহাম (৫ টাকার কয়েন সমপরিমাণ) থেকে কম লাগলে নামাজ হয়ে যাবে।
এক দিরহাম সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি লাগলে নামাজ হবেনা।
তবে সে মা'যুর হলে এমতাবস্থায়ও নামাজ হয়ে যাবে।
(০৬)
ঐ নামাজ গুলি পুনরায় আদায় করতে হবেনা।
তবে এর পরবর্তীতে এমন হলে শেষে সেজদায় সাহু আদায় করবে।
(০৭)
সে এখন প্রস্রাবের চাপ নিয়েই নামাজ পড়তে পারবেন।
(০৮)
না,এগুলো রহমতের ফেরেশতা প্রবেশের প্রতিবন্ধক নয়।
(০৯)
এটা সত্য নয়।
এটি বানোয়াট কথা।
(১০)
সেক্ষেত্রে তার রুমে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন।
(১১)
এটি নাপাক নয়।
নাপাক না লাগলে কাপড় নাপাক হয়না।
(১২)
ফল ঢেকে রাখতে হবেনা।
তবে রাতে খাবার ঢেকে রাখা সুন্নাত।
না ঢাকলে শয়তান তাতে ভাগ নেবে,এ কথা সহীহ নয়।
★শয়নের পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে নিম্নে বর্ণিত কাজগুলো করা সুন্নাত।
১. দরজা বন্ধ করা। ২. মশক বা পানির পাত্র এবং খাদ্য দ্রব্যের পাত্র ও অন্যান্য পাত্রসমূহ ঢেকে রাখা। যদি ঢাকার জন্য কোন বস্তু না পাওয়া যায়, তাহলে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়ে তার মুখে একটি লাঠি বা ছড়ি রেখে দেয়া, ৩. বাতি নিভানো। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৬২৩-২৪)