বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত যে,
عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ قُرَيْشًا، أَهَمَّهُمْ شَأْنُ الْمَرْأَةِ الْمَخْزُومِيَّةِ الَّتِي سَرَقَتْ فَقَالُوا مَنْ يُكَلِّمُ فِيهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا مَنْ يَجْتَرِئُ عَلَيْهِ إِلاَّ أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ حِبُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَكَلَّمَهُ أُسَامَةُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَتَشْفَعُ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللَّهِ " . ثُمَّ قَامَ فَاخْتَطَبَ فَقَالَ " إِنَّمَا أَهْلَكَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ أَنَّهُمْ كَانُوا إِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ وَإِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الضَّعِيفُ أَقَامُوا عَلَيْهِ الْحَدَّ وَايْمُ اللَّهِ لَوْ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَرَقَتْ لَقَطَعْتُ يَدَهَا "
মাখযুমী গোত্রের যে মহিলাটি চুরি করেছিল তার বিষয়টি কুরায়শদের খুবই উদ্বিগ্ন করে তোলে। তারা নিজেদের মধ্যে বলল, এই বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কথা বলবার মত কে আছে? কেউ কেউ বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একান্ত প্রিয় পাত্র উসামা ইবনু যায়দ ব্যতীত আর কেউ সাহস পাবে না। তারপর উসামা এই বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কথা বললেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি আমার কাছে আল্লাহ নির্ধরিত হদসমূহের অন্যতম হদ সম্পর্কে সুপারিশ করছ? এরপর তিনি দাঁড়ালেন এবং খুতবা দিয়ে বললেন, তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা এই জন্যই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল যে, তাদের মধ্যে প্রতিপত্তিশালী ভদ্র ঘরের কেউ যদি চুরি করত তবে তারা তাকে ছেড়ে দিত আর দুর্বল কোন ব্যক্তি চুরি করলে তার উপর হদ প্রয়োগ করত। আল্লাহর কসম, মুহাম্মদের মেয়ে ফাতিমাও যদি চুরি করত তবুও আমি অবশ্যই তার হাত কাটতাম। (ইবনু মাজাহ ২৫৪৭, নাসাঈ, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৪৩০ সুনানু তিরমিযি-১৪১৬)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম' এর যুগ সোনালি যুগ ছিল। সে সময় যেহেতু সবাই ই হক ও ইনসাফকে যথাযথ সম্মান দিতেন,তাই সে সময় ইনসাফ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হওয়ার কোনো পরিবেশ ছিলনা।
(২)
দেখুন ইউসুফ আঃ কত সুন্দর হেকমতের সাথে দাওয়াত দিচ্ছেন। সময় ও পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে দাওয়াত দিতে হবে।
وَدَخَلَ مَعَهُ السِّجْنَ فَتَيَانِ ۖ قَالَ أَحَدُهُمَا إِنِّي أَرَانِي أَعْصِرُ خَمْرًا ۖ وَقَالَ الْآخَرُ إِنِّي أَرَانِي أَحْمِلُ فَوْقَ رَأْسِي خُبْزًا تَأْكُلُ الطَّيْرُ مِنْهُ ۖ نَبِّئْنَا بِتَأْوِيلِهِ ۖ إِنَّا نَرَاكَ مِنَ الْمُحْسِنِينَ
তাঁর সাথে কারাগারে দুজন যুবক প্রবেশ করল। তাদের একজন বললঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি মদ নিঙড়াচ্ছি। অপরজন বললঃ আমি দেখলাম যে, নিজ মাথায় রুটি বহন করছি। তা থেকে পাখী ঠুকরিয়ে খাচ্ছে। আমাদের কে এর ব্যাখ্যা বলুন। আমরা আপনাকে সৎকর্মশীল দেখতে পাচ্ছি।
قَالَ لَا يَأْتِيكُمَا طَعَامٌ تُرْزَقَانِهِ إِلَّا نَبَّأْتُكُمَا بِتَأْوِيلِهِ قَبْلَ أَن يَأْتِيَكُمَا ۚ ذَٰلِكُمَا مِمَّا عَلَّمَنِي رَبِّي ۚ إِنِّي تَرَكْتُ مِلَّةَ قَوْمٍ لَّا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَهُم بِالْآخِرَةِ هُمْ كَافِرُونَ
তিনি বললেনঃ তোমাদেরকে প্রত্যহ যে খাদ্য দেয়া হয়, তা তোমাদের কাছে আসার আগেই আমি তার ব্যাখ্যা বলে দেব। এ জ্ঞান আমার পালনকর্তা আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন। আমি ঐসব লোকের ধর্ম পরিত্যাগ করেছি যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে না এবং পরকালে অবিশ্বাসী।
وَاتَّبَعْتُ مِلَّةَ آبَائِي إِبْرَاهِيمَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ ۚ مَا كَانَ لَنَا أَن نُّشْرِكَ بِاللَّهِ مِن شَيْءٍ ۚ ذَٰلِكَ مِن فَضْلِ اللَّهِ عَلَيْنَا وَعَلَى النَّاسِ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَشْكُرُونَ
আমি আপন পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের ধর্ম অনুসরণ করছি। আমাদের জন্য শোভা পায় না যে, কোন বস্তুকে আল্লাহর অংশীদার করি। এটা আমাদের প্রতি এবং অন্য সব লোকের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ। কিন্ত অধিকাংশ লোক অনুগ্রহ স্বীকার করে না।
يَا صَاحِبَيِ السِّجْنِ أَأَرْبَابٌ مُّتَفَرِّقُونَ خَيْرٌ أَمِ اللَّهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ
হে কারাগারের সঙ্গীরা! পৃথক পৃথক অনেক উপাস্য ভাল, না পরাক্রমশালী এক আল্লাহ?
مَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِهِ إِلَّا أَسْمَاءً سَمَّيْتُمُوهَا أَنتُمْ وَآبَاؤُكُم مَّا أَنزَلَ اللَّهُ بِهَا مِن سُلْطَانٍ ۚ إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ ۚ أَمَرَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ ۚ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে নিছক কতগুলো নামের এবাদত কর, সেগুলো তোমরা এবং তোমাদের বাপ-দাদারা সাব্যস্ত করে নিয়েছে। আল্লাহ এদের কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও এবাদত করো না। এটাই সরল পথ। কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না।
يَا صَاحِبَيِ السِّجْنِ أَمَّا أَحَدُكُمَا فَيَسْقِي رَبَّهُ خَمْرًا ۖ وَأَمَّا الْآخَرُ فَيُصْلَبُ فَتَأْكُلُ الطَّيْرُ مِن رَّأْسِهِ ۚ قُضِيَ الْأَمْرُ الَّذِي فِيهِ تَسْتَفْتِيَانِ
হে কারাগারের সঙ্গীরা! তোমাদের একজন আপন প্রভুকে মদ্যপান করাবে এবং দ্বিতীয়জন, তাকে শুলে চড়ানো হবে। অতঃপর তার মস্তক থেকে পাখী আহার করবে। তোমরা যে, বিষয়ে জানার আগ্রহী তার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।(সূরা ইউসুফ-৩৬-৪১)