আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
96 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (32 points)

আসসালামু আলাইকুম।

প্রশ্ন:১:

বর্ডার এরিয়া থেকে গরু কেনা যদি নাজায়েজ হয়ে থাকে (চোরাই পদ্ধতিতে আসে), এইটা জানার পরও যদি সেইখান থেকে যদি গরু কিনি এবং সেই গরু কয়েক মাস লালন পালন করে বিক্রি করি, তাহলে কি সেই গরু বিক্রি করার মূলধন ও লাভাংশ যেই টাকা টা সেই টাকা কি হালাল হবে?

(বর্ডার ক্রস গরু কিনার কারনে পাপ হবে সেটা জানি, কিন্তু যদি ইচ্ছাক্রমে বা ভুলে কিনে ফেলি, তাহলে কি সেই গরু বিক্রি করার পর সেই গরুর মূলধন ও লাভাংশ নেওয়া হালাল হবে? যেহেতু আমি হালাল টাকা দিয়েই গরুটা কিনেছি)

 

প্রশ্ন: ২: যেহেতু আমরা জানি যে, বর্ডারের আশেপাশের অনেক গরুই চোরাই ভাবে দেশে আসে।

তাই, বাংলাদেশের গরুর ব্যাপারী যদি বর্ডার ক্রস গরু কিনে এবং ১-২ দিন পালার পর অথবা কয়েক মাস পালার পর (কয়েক মাস পালার কারণে ক্রেতার তো কিছু টাকাও খরত হয়েছে গরুর পিছে) সেইটা কোনো ক্রেতার কাছে বিক্রি করে এবং ক্রেতাও যদি শিওর ভাবে জেনে থাকে যে এইটা বর্ডার ক্রস গরু কিন্তু বাংলাদেশের গরুর বেপারী এইটা অনেকদিন পেলে তারপর বিক্রি করতেছে, তাহলে সেই গরু যদি সেই বাংলাদেশের বেপারী থেকে ক্রেতা ক্রয় করে লালন পালনের উদ্দেশ্যে, তাহলে কি সেটা জায়েজ হবে?

প্রশ্ন: ২.১: এবং বাংলাদেশের গরুর বেপারী থেকে ক্রেতা যদি কিনে সেও কয়েকদিন লালন পালন করে তারপর বিক্রি করে, তাহলে কি সেই বিকৃত মূলধন এবং লাভাংশ তার জন্যে হালাল?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


রাষ্ট্রীয় আইন-কানুন প্রতিটি নাগরিকের জন্য মান্য করা আবশ্যক-যতক্ষণ না তা শরিয়া বিরোধী হয়। 
শরীয়াহ বিরোধী আইন না হলে বিনা ওযরে তাহা না মানলে গুনাহগার হতে হবে।

ইসলামী স্কলারগন বলেছেন, 
রাষ্ট্রীয় আইন অনুসরণ না করলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, জান-মালের ক্ষতি এবং নানা দুর্ভোগে পতিত হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর মানুষের নিরাপত্তা, কল্যাণ সাধন এবং বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব-যা শরিয়তের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কেউ যদি এসব আইন লঙ্ঘন করে তাহলে সে নিজেকে নানা বিপদাপদ, শাস্তি ও লাঞ্ছনার মধ্যে নিক্ষেপ করবে-যা ইসলামে নিষেধ।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ جُنْدُبٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَنْبَغِي لِلْمُؤْمِنِ أَنْ يُذِلَّ نَفْسَهُ " . قَالُوا وَكَيْفَ يُذِلُّ نَفْسَهُ . قَالَ " يَتَعَرَّضُ مِنَ الْبَلاَءِ لِمَا لاَ يُطِيقُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  কোন মু'মিন ব্যক্তির জন্য নিজেকে অপমানিত করাটা শোভনীয় নয়। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, সে নিজেকে কিভাবে অপমানিত করে? তিনি বললেনঃ এমন কঠিন বিষয়ে লিপ্ত হওয়া যার সামর্থ্য তার নেই।

সহীহ,তিরমিযী ২২৫৪, ইবনু মাজাহ ৪০১৬, আহমাদ ২৩৪৪৪, সহীহাহ্ ৬১৩।

আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।

শাইখ বিন বায রাহ. বলেন,

أن القوانين إذا كانت لا تخالف الشرع فلا بأس بها، النظم تسمى بالقوانين وتسمى بالنظم، فكل قانون ونظام ينفع المسلمين ولا يخالف شريعة الله لا بأس به، من المرور أو في القضاء أو في أي الدوائر الحكومية أو في أي مكان.

“আইন-কানুন যদি শরিয়ত বিরোধী না হয় তাহলে তাতে কোনও সমস্যা নাই। শৃঙ্খলাকে আইন বলা হয়। সুতরাং যে সকল আইন-শৃঙ্খলা মুসলিমদের উপকার করে ও আল্লাহর আইন লঙ্ঘন করে না তাতে কোনও সমস্যা নাই। যেমন: ট্রাফিক, বিচার বিভাগ, সরকারি অফিস বা অন্য যে কোন স্থানে হোক না কেন।” 

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই গরু বিক্রি করার মূলধন ও লভ্যাংশ যেই টাকা টা, সেই টাকা হালাল হবে।

(০২)
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত হতে প্রয়োজনে জরিমানা দিয়ে হলেও উক্ত গরু বিক্রির অনুমতি নিতে হবে।
তাহলে আর কোনো সমস্যা হবেনা। 

নতুবা এভাবে বিক্রয় করলে টাকা হালাল হলেও দেশের আইন না মানার কারনে গুনাহ হবে,বিধায় এভাবে বিক্রয় জায়েজ হবেনা।

(২.১)
এক্ষেত্রে সেই বিক্রয় কৃত মূলধন এবং লভ্যাংশ তার জন্যে হালাল।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...