আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
164 views
in সালাত(Prayer) by (37 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
১.গতকাল মাগরিবের নামাজ সময় আমার মাথা একটু ব্যথা করছিল। প্রথমে দুই বার করে ফরজ নামাজ পড়েছি। তাও মনের মধ্যে একটু খুঁতখুঁত লাগছিল। পরে ৩য় বার আবার নামাজটা পড়লাম। কিন্তু ৩য় বার পড়ার সময় সূরা ফাতিহা পড়ার সময় আমি হঠাৎ করে ভুলে যায়। এরপর আমার যেদিকে প্রবল ধারণা হয় সেই লাইন থেকে তিলাওয়াত করি।এরপর শেষ বৈঠকে দরুদ পড়ার সময় ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ বলার পরে গুলায় যায় আসলে শেষেরটা বললাম না প্রথমটা বললাম। যেদিকে প্রবল ধারণা  হয় সেদিকে ভেবে নামাজ শেষ করি। আমার নামাজ কি হয়েছে?
২.নামাজের মধ্যে যদি দরুদ  পড়ার সময়, ,   ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ বলার পরে যদি  সন্দেহ হয়  প্রথমটা বললাম নাকি শেষেরটা  তাহলে কি প্রবল ধারণার উপর আমল করতে হবে?? যদি কোন দিকে প্রবল ধারণা না থাকে তাহলে কি করব?? যদি আমি অর্ধেক দরুদ পড়ে নামাজ শেষ করি তাহলে নামাজ হবে?

৩. গতকালই এশা ও ফজরের নামাজ পড়ার সময় যখন ১ম  সাহু সিজদা দিই ,,, তখন সাহু সিজদা দিতে দিতে হঠাৎ একটা কথা মনে করে একটু অমনোযোগী হয়ে যায়। তখন থেকে মনের মধ্যে সন্দেহ লাগছে যে আমার নামাজটা  হয়েছে। আমি কি প্রথম সাহু সিজদাই দিচ্ছিলাম? আমার নামাজ কি হয়েছে??  সাহু সিজদা নিয়ে সন্দেহ হলে কি করণীয়?
৪. সামিআল্লাহ হুলিমান হামিদা উচ্চারণের ক্ষেত্রে আল্লাহ বলার সময় আমি যদি আইনের পরিবর্তে হামজা উচ্চারণ  করি তাহলে কি সালাত হবে? অনেক সময় যখন রুকু থেকে উঠি তখন  এইটা বলার সময় একটু মাখরাজ নিয়ে সন্দেহ হয়। এখন দাঁড়িয়ে এটি আবার বলি। এতে কি নামাজ বাতিল হবে?
৫. অনেক সময় দ্বিতীয় সিজদা  দেওয়ার পর যখন  দাঁড়িয়ে যায়,, তখন সিজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হয়। আবার অনেক সময় ২য় সিজদা দিয়ে বৈঠক করার সময় ঐ সিজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হয়। তখন কি করব?
৬.আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
আমার নামাজে খুব ওয়াসওয়াসা হয়। আমার প্রায় প্রতি ওয়াক্ত নামাজেই কোন না কোন বিষয় নিয়ে সন্দেহ হয়। এরপরে এগুলো নিয়ে আমি ভাবতে থাকি যার কারনে আমি স্বাভাবিক ইবাদত করতে পারি না। আমি নামাজে  একটু  অমনোযোগী হলেই ভুলে যাই কি পড়ছি না পড়ছি?? সালাতে কোন কথা মনে আসলেই আমি ভুলে যাচ্ছি আমি কি পড়ছি। প্রত্যেক সালাতেই প্রায় এমন সমস্যা হচ্ছে। ভিন্ন ভিন্ন ওয়াক্তের  সালাতে ভিন্ন ভিন্ন  বিষয় নিয়ে সন্দেহ কাজ করে। কখনো কখনো আমি একই সালাত পুনরায় পড়ি। তারপরেও মন থেকে সন্দেহ যায় না। ভুলে যায় রাকাত সংখ্যা,,সিজদা সংখ্যা ইত্যাদি। প্রায়ই ভুলে যায়। কখনো কখনো সালাতগুলো পুনরায় পড়ি না। আমার সালাত কি আদৌ হচ্ছে। যে সালাতগুলো আমি ওয়াসওয়াসা ভেবে পুনরায় আদায় করিনি সেগুলো কি আবার আদায় করব??

1 Answer

0 votes
by (573,780 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
https://ifatwa.info/62231/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
নামাযে রা'কাত বা সেজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে,যে ঐ ব্যক্তির কি এটা প্রথম হয়েছে না মাঝেমধ্যে এমন হয়।যদি প্রথমবার বা কদাচিৎ হয়ে তাহলে উনি আবার প্রথম থেকে শুরু করে নতুনভাবে পড়ে নিবেন।
(মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ২/২৮)

যে ব্যক্তির প্রায় সময় সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ তার অভ্যাসে পরিণত হয়, ওই ব্যক্তি যেদিকে তার মন বেশি যায় (প্রবল ধারণা হয়), সেটার ওপর আমল করবে। যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তাহলে অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যার ওপর আমল করবে এবং প্রত্যেক রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে, শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ دَاوُدَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يَدْرِ كَمْ صَلَّى ثَلاَثًا أَمْ أَرْبَعًا فَلْيَطْرَحِ الشَّكَّ وَلْيَبْنِ عَلَى مَا اسْتَيْقَنَ ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ فَإِنْ كَانَ صَلَّى خَمْسًا شَفَعْنَ لَهُ صَلاَتَهُ وَإِنْ كَانَ صَلَّى إِتْمَامًا لأَرْبَعٍ كَانَتَا تَرْغِيمًا لِلشَّيْطَانِ " .

মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালাফ (রহঃ) ..... আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন রাকাআত আদায় করা হলো না চার রাকাআত আদায় করা হলো- সালাতের মধ্যে তোমাদের কারো এরূপ সন্দেহ হলে সে যে কয় রাক’আত আদায় করেছে বলে নিশ্চিত হবে (তিন রাকাআত) সে কয় রাকাআতকে ভিত্তি ধরে অবশিষ্ট করণীয় করবে। এরপর সালাম ফিরানোর পূর্বে দুটি সিজদা করবে। (এখন) সে যদি পাঁচ রাকাআত আদায় করে থাকে তাহলে এ দু' সিজদা দ্বারা তার সালাতের জোড়া পূর্ণ হয়ে যাবে। আর যদি তার সালাত চার রাকাআত হয়ে থাকে তাহলে (এই) সিজদা দুটি শয়তানের মুখে মাটি নিক্ষেপের শামিল হবে। (মুসলিম ১১৫৯.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১১৫২, ইসলামীক সেন্টার ১১৬১)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার নামাজ হয়েছে।

(০২)
ফরজ,ওয়াজিব,সুন্নাত,নফল মোটকথা প্রত্যেক নামাজের শেষ বৈঠকে তাশাহুদের পর দরুদ শরীফ পাঠ করা সুন্নাত।
এটি ওয়াজিব বা ফরজ নয়।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ، حَدَّثَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، حَدَّثَنِي أَبُو هَانِئٍ الْخَوْلاَنِيُّ، أَنَّ عَمْرَو بْنَ مَالِكٍ الْجَنْبِيَّ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ فَضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ، يَقُولُ سَمِعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً يَدْعُو فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " عَجِلَ هَذَا " . ثُمَّ دَعَاهُ فَقَالَ لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ " إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِتَحْمِيدِ اللَّهِ وَالثَّنَاءِ عَلَيْهِ ثُمَّ لِيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ لِيَدْعُ بَعْدُ بِمَا شَاءَ "

মাহমুদ ইবন গায়লান (রহঃ) ..... ফাযালা ইবন উবায়দ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তি কে সালাতে দু’আ করতে শুনতে পেলেন। কিন্তু সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরুদ পাঠ করে নি। তিনি তখন বললেনঃ এতো বড় তাড়াহুড়া করে ফেললে। এরপর তিনি তাকে ডাকলেন। তাকে বা অন্যকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাত (নামায) আদায় করবে তখন যেন সে (দু’আর পূর্বে) শুরুতে আল্লাহর হামদ ও সানা সিফাত বর্ণরা করে পরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরুদ পাঠ করে এরপর যেন সে তার যা চায় সে দু’আ করবে।

সহীহ, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৪৭৭ [আল মাদানী প্রকাশনী]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এক্ষেত্রে প্রবল ধারণার উপর আমল করতে হবে।

যদি কোন দিকে প্রবল ধারণা না হয়,সেক্ষেত্রে আপনি প্রথমটা ধরে নিয়ে পরের অংশ আবারো পড়তে পারেন,অথবা বাদ দিয় দোয়া মাছুড়া শুরু করতে পারেন।
উভয়টিই আপনার ইচ্ছাধীন,কোনো সমস্যা নেই।

★যদি আপনি অর্ধেক দরুদ পড়ে নামাজ শেষ করেন, তাহলেও নামাজ হবে।

তবে ইচ্ছাকৃতভাবে বিনা ওযরে এমনটি নিয়মিত করবেননা।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার নামাজ হয়েছে বলে ধরে নিবেন। 

যদি সাহু সিজদা নিয়ে সন্দেহ হয়,এক্ষেত্রে এটি যদি নামাজের পরে হয়,সেক্ষেত্রে ওয়াক্ত থাকলে উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব।

আর ওয়াক্ত চল গেলে উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করা মুস্তাহাব।

আর যদি সন্দেহটি নামাজের মধ্যেই হয়,সেক্ষেত্রে 
প্রবল ধারণার উপর আমল করবেন। 

(০৪)
এতে নামাজ বাতিল হবেনা।

(০৫)
এক্ষেত্রে প্রবল ধারণার উপর আমল করবেন। 

কোনোদিকেই প্রবল ধারণা না হলে সেক্ষেত্রে আরো একটি সেজদাহ আদায় করবেন ও শেষে সেজদায়ে সাহু আদায় করবেন। 

(০৬)
সেগুলো আবার আদায় করতে হবেনা।

আপনি উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি অবলম্বন করে নামাজ আদায় করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (6 points)
নাম্বারিং করে একাধিক উত্তর লেখার ক্ষেত্রে প্রতি নাম্বারের শুরুতে অতি সংক্ষেপে  প্রশ্ন টি উল্লেখ করে দিলে ভালো হয়। অন্যথায় বারবার উপরে স্ক্রল করে প্রশ্ন দেখে আসতে হয়

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...