আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
201 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (49 points)

আসসালামু আলাইকুম 
রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়ত পুর্ববর্তী জীবন কি অনুকরণীয় নয়?
বস্তুত ড. হিশাম আল আওয়াদি রচিত "বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" বইটি যেটি মাসুদ শরীফ ভাই বাংলায় অনুবাদ করেছেন সেখানে নবীজির পুরো ৬৩ বছরের জীবনের ধারাবাহিকতা এবং অনুকরণীয় দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে।এখন অনেক ভাই বলছেন যে শুধুমাত্র নবুয়ত পরবর্তী জীবনই অনুকরণ করতে হবে।

১।নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের পূর্ববর্তী জীবন অনুকরণী নয় কি?এবং উত্তরের কারণ জানাবেন
২।উল্লেখিত বইটি পাঠ করা যাবে কি না?

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ- 
মূলকথা হল,রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নবুওয়ত প্রাপ্তির পূর্বে জীবন শরীয়তের বিধি-বিধান থেকে বাহিরে।এজন্য রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নবুওত প্রাপ্তির পূর্বের জীবনের অনুসরণ আমাদের জন্য ওয়াজিব নয়।তবে নবুওয়ত প্রাপ্তির পরও যেগুলো করেছেন,সেগুলো অবশ্যই অনুসরণীয়।কোনো বিধান ওয়াজিব হিসেবে,কোনো বিধান সুন্নত হিসেবে কোনো বিধান মুস্তাহাব হিসেবে।যেমন,ওয়াদাকে পূর্ণ করা,সর্বহারাদের সাহায্য করা,মেহমানদের সম্মান করা এবং সত্যর পক্ষালম্বন করা ইত্যাদি,এগুলো রাসূলুল্লাহ সাঃ নবুওয়ত প্রাপ্তির পূর্বেও করেছেন,আবার যেহেতু পরেও করেছেন,তাই এগুলো আমাদের জন্য অনুকরণীয়। তবে যেগুলো পূর্বে করেছিলেন,কিন্তু পরে আর করেননি,সেগুলো আমাদের জন্য অনুকরণীয় নয়।কেননা হয়তো সেগুলো মানসূখ হয়ে গেছে, সেজন্য রাসূলুল্লাহ সাঃ সেগুলোকে আর করেননি।

শায়েখ ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,
(والأمور التي جرت قبل النبوة لا تذكر للأخذ والتشريع كفعله بعد النبوة , لأن المسلمين أجمعوا على أن الذي فرض على العباد من الإيمان به صلى الله عليه وسلم ، والعمل بما جاء به ، إنما ذلك لما كان بعد النبوة .
ولهذا كان عندهم : من ترك الجمعة والجماعة ، وتخلى في الغيران والكهوف والجبال ، حيث لا جمعة ولا جماعة ، وزعم أنه يقتدي بالنبي صلى الله عليه لكونه كان متحنثا في غار حراء قبل النبوة ، فترك ما شرع له من العبادات الشرعية التي أمر الله بها ورسوله ، واقتدى بما كان يفعل قبل النبوة ـ كان مخطئا ؛ فإن النبي صلى الله عليه وسلم بعد أن أكرمه الله بالنبوة ، لم يكن يفعل ما فعله قبل ذلك ، من حيث التحنث في غار حراء أو نحو ذلك .ولم يكن أحد من أصحابه صلوات الله عليه من بعده ، يأتي لغار حراء، ولا يتخلفون عن الجمعة والجماعة في الأماكن المنقطعة ، ولا عمل أحد منهم خلوة أربعينية ، كما يفعله بعض المتأخرين ، بل كانوا يعبدون الله بالعبادات الشرعية التي شرعها لهم النبي صلى الله عليه وآله وسلم "
মর্মার্থ- 
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নবুওয়ত প্রাপ্তির পূর্বে জীবনের কাজকর্ম শরীয়তে বিধি-বিধান হিসেবে উল্লেখ করা যাবে না।কেননা মুসলমানগণ একমত যে,মানুষের জন্য ঈমান নিয়ে আসা,এবং ঈমানের তাকাযা অনুযায়ী আ'মল করা যে ফরয, এগুলোর বিধান মূলত নবুওত প্রাপ্তির পরেই এসেছে।এজন্য যারা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নবুওত প্রাপ্তির পূর্বের জীবন তথা হেরা গুহায় ধ্যানরত থাকাকে অনুকরণের হেতু দেখিয়ে নামায রোযা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ধ্যানরত অবস্থায় ঘরের কোনে বা মাজারে বসে থাকে,তারা ভূল করছে।কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ নবুওত প্রাপ্তির পর হেরা গুহায় ধ্যানরত থাকার মত আর কোনো আ'মল কখনো করেননি।এমনকি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কোনো সাহাবিও নামায রোযাকে পরিত্যাগ করে হেরা গুহায় বা অন্য কোথাও ধ্যানরত অবস্থায় সময়কে অতিবাহিত করেননি।বরং তারা নবুওয়ত প্রাপ্তির পরের জীবনকে আদর্শ মনে করে,সেই বিধি-বিধান অনুযায়ীই আ'মল করে গেছেন।(মাজমুউল ফাতাওয়া-১০/১৮)


ড,মুহাম্মদ আল আরুসী রাহ বলেন,
وأما المحدِّثون فإنهم يعتنون بذكر ما ورد عنه صلى الله عليه وسلم في كل وقت ، ولو كان قبل البعثة ، فهي تدخل في السنة على تعريف المحدثين ، الذين يعتبرون كل ما نقل عن النبي صلى الله عليه وسلم سنة ، فيروونه في كتبهم بناء على ذلك .(أفعال الرسول صلى الله عليه وسلم ودلالتها على الأحكام ، للدكتور محمد العروسي-149)
মুহাদ্দিস উলামায়ে কেরামদের নিয়ম হল,তারা রাসূলুল্লাহ সম্পর্কিত যত বিবরণই পান,সবগুলোকেই বর্ণনা করেন ও লিপিবদ্ধ করেন।তাই হাদীসের কিতাব সমূহে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নবুওত প্রাপ্তির পূর্বের ও পরের জীবনের সকল প্রকার বর্ণনাকেই তারা নিয়ে এসেছেন।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের পূর্ববর্তী জীবন অনুকরণী নয়। 
(২)উল্লেখিত বইটি পাঠ করা যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...