আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
73 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
বিষয় : খাতা কলমের যৌথ  ব্যবসার মাসআলা।
আব্দুর রহিম সাহেবের খাতা কলম  বিক্রির ট্রেড লাইসেন্স আছে।  তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে খাতা কলমের নমুনা প্রদান করেন এবং সেই প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছা অনুযায়ী পছন্দকৃত নমুনার ওয়ার্ক  অর্ডার (কাজের নির্দেশনামা, পরিমান, নির্ধারিত দাম এবং কার্য সম্পাদনের সময়সীমা) নিয়ে আসেন।
ধরা যাক, তিনি "ক" প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৪৫ টি খাতার অর্ডার পেলেন যার সর্বমোট মূল্য ১৫০ টাকা। এই কাজটি সম্পন্ন করতে হলে তাকে কাঁচামাল হিসেবে কাগজ, সুতা, কাভার এবং খাতা বানানোর জন্য একটি কারখানার প্রয়োজন।  পুরো কাজটি করতে তার ১০০ টাকা পুঁজি  দরকার এবং এই পরিমান টাকা তার কাছে নাই অথবা ঘাটতি আছে।
কাজটি যেহেতু সম্পন্ন করতে হবে , তাই সে তার পরিচিত এক ভাই আব্দুল্লার কাছে  গেলো এবং ব্যাবসার লভ্যাংশ  ভাগাভাগির (৪০/৬০) প্রস্তাব করে ১০০ টাকা চাইলো। শর্ত হলো, ক্ষতি হলে  টাকা  আব্দুল্লাহর বিনিয়োগের থেকে কাটা যাবে এবং আব্দুর রহিমের পরিশ্রম বৃথা যাবে।  আব্দুল্লাহ এই প্রস্তাবে রাজি হলো।
কিন্তু আব্দুল্লাহর কাছে যে টাকা আছে তা যথেষ্ট নয় ।  তাই সে ওসামার কাছে গেলো এবং আব্দুর রহিম সাহেবের ব্যবসার বৃত্তান্ত বর্ণনা করে টাকা চাইলো।
ওসামা বলল আমি আব্দুর রহিম সাহেবকে চিনিনা এবং এতো বেশী টাকার ঝুঁকি একজন অপরিচিত মানুষের উপর নিতে পারিনা।  বরং আমি তোমাকে (আব্দুল্লাহ) চিনি এবং টাকা দিতে পারি।  তখন আব্দুল্লাহ, ওসামার কাছ থেকে ১০০ টাকা এই শর্তে আনলেন যে, লাভ এবং ক্ষতি যা হবে তা দুই জনে মিলে  সমান সমান (অর্ধেক - অর্ধেক )ভাগে ভাগ করে নিবে।
আব্দুল্লাহ ওসামার কাছ থেকে টাকা এনে  আব্দুর রহিম সাহেব নিকট গেলেন এবং  ওসামার  সাথে কৃত চুক্তির কথা বর্ণনা পূর্বক ১০০ টাকা দিলেন (৪০/৬০ শর্ত অনুযায়ী)।
আব্দুর রহিম সাহেব টাকা নিয়ে ৫০ টাকার কাগজ, ১০ টাকার সুতা, ১০ টাকার কাভার কিনে একটি কারখানার মালিককে  ২০ টাকা মজুরিতে কাগজ, সুতা ও কাভার দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে নির্দেশ প্রদান করলেন ।
নির্ধারিত সময়ের পর,আব্দুর রহিম সাহেব প্রস্তুতকৃত ৪৫ টি খাতা নিয়ে ১০ টাকা পরিবহন খরচের মাধ্যমে  "ক" প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করলেন এবং মোট  ১৫০ টাকা পেলেন।
উপরোক্ত লেনদেনে মোট ক্ষতি = ০।
এবং মোট লাভ = ৫০ টাকা (পুঁজি ১০০ টাকা এবং লাভ ৫০ টাকা )।

আব্দুর রহিম সাহেবের লাভের অংশ = ৫০ x .৪ (৪০ শতাংশ ) = ২০ টাকা
আব্দুল্লাহ এবং ওসামার যৌথ  লাভের অংশ = ৫০ x .৬ (৬০ শতাংশ ) = ৩০ টাকা

শুধু  আব্দুল্লাহ লাভের অংশ =৩০ x .৫ (৫০ শতাংশ ) = ১৫ টাকা
শুধু  ওসামার  লাভের অংশ =৩০ x .৫ (৫০ শতাংশ ) = ১৫ টাকা
ক্ষতি হলে অর্থাৎ বিক্রিত  খাতার মূল্য না পেলে/ কম পেলে , আব্দুর রহিম সাহেব কোনো টাকা পেতেন না, শুধু পরিশ্রম বৃথা যেত ।  অন্য দিকে,আব্দুল্লাহ এবং ওসামার আর্থিক ক্ষতি হতো বিনিয়োগকৃত মূলধনের সমান সমান (অর্ধেক - অর্ধেক) অংশ ।
প্রশ্ন : এই প্রকারের যৌথ কারবার ইসলামী শরীয়তে জায়েজ কি না ?
বি. দ্রঃ  আমরা সুদ মুক্ত লেনদেনের মাধ্যমে এই ব্যবসা করতে চাই।  আমাদের কারোই একক পুঁজি এই ব্যবসার জন্য যথেষ্ট নহে।  যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজন।

1 Answer

0 votes
by (717,920 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ব্যবসা বানিজ্য সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
( وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبا )
আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করোছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন।(সূরা বাকারা-২৭৫)
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَأْكُلُواْ أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ إِلاَّ أَن تَكُونَ تِجَارَةً عَن تَرَاضٍ مِّنكُمْ وَلاَ تَقْتُلُواْ أَنفُسَكُمْ إِنَّ اللّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا
হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।(সূরা নিসা-২৯)

একজনের টাকা এবং অপরজনের শ্রম, এরকম ব্যবসাকে শরীয়তে মুদারাবাহ ব্যবসা বলা হয়। মুদারবাহ ব্যবসা বৈধ। তবে শর্ত হল, পার্সেন্টিস হিসেবে চুক্তি হতে হবে। 

পার্সেন্টিছ হিসেবে উভয় চুক্তিকারী নিজ নিজ হিসসায় যতটুকুর জন্য সম্মত হবে, তারা ততটুকুই মুনাফা পাবে। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বা বস্তুকে নির্দিষ্ট  করা জায়েয হবে না। 
قال صاحب الهداية: (وَمِنْ شَرْطِهَا أَنْ يَكُونَ الرِّبْحُ بَيْنَهُمَا مُشَاعًا لَا يَسْتَحِقُّ أَحَدُهُمَا دَرَاهِمَ مُسَمَّاةً) مِنْ الرِّبْحِ لِأَنَّ شَرْطَ ذَلِكَ يَقْطَعُ الشَّرِكَةَ بَيْنَهُمَا وَلَا بُدَّ مِنْهَا كَمَا فِي عَقْدِ الشَّرِكَةِ.(الهداية-3/226)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/12438

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নে বর্ণিত বিবরণ ও পদ্ধতি অনুযায়ী উক্ত পেশা বৈধ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (717,920 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...