উত্তরঃ-
মুল্লা আলী কারী রাহ,স্বপ্নের ইতিবৃত্ত আলোচনা করতে যেয়ে বিশিষ্ট উলামায়ে কেরামগণের উক্তি বর্ণনা করে বলেন,
ইমাম নববী রাহ স্বপ্নের আরবী প্রতিশব্দের শাব্দিক ব্যাখ্যা নিয়ে বলেন,
ﻗﺎﻝ اﻟﻨﻮﻭﻱ: ﻣﻘﺼﻮﺭﺓ ﻣﻬﻤﻮﺯﺓ ﻭﻳﺠﻮﺯ ﺗﺮﻛﻬﺎ ﺗﺨﻔﻴﻔﺎ. ﻗﻠﺖ: اﻟﺼﻮاﺏ ﺇﺑﺪاﻟﻬﺎ ﺃﻭ ﺗﺨﻔﻴﻔﻬﺎ، ﻭﺃﻣﺎ ﺗﺮﻛﻬﺎ ﻓﻐﻴﺮ ﺻﺤﻴﺢ ﺭﻭاﻳﺔ ﻭﺩﺭاﻳﺔ.
আল্লামা যামাখশারী রাহ বলেন,
ﻭﻗﺎﻝ اﻟﻜﺸﺎﻑ: اﻟﺮﺅﻳﺎ ﺑﻤﻌﻨﻰ اﻟﺮﺅﻳﺔ ﺇﻻ ﺃﻧﻬﺎ ﻣﺨﺘﺼﺔ ﺑﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﻨﻬﺎ ﻓﻲ اﻟﻤﻨﺎﻡ ﺩﻭﻥ اﻟﻴﻘﻈﺔ، ﻓﻼ ﺟﺮﻡ ﻓﺮﻕ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ ﺑﺤﺮﻑ اﻟﺘﺄﻧﻴﺚ ﻓﻴﻬﺎ ﻣﻜﺎﻥ ﺗﺎء اﻟﺘﺄﻧﻴﺚ ﻟﻠﻔﺮﻕ، ﻛﻤﺎ ﻗﻴﻞ ﻓﻲ اﻟﻘﺮﺑﻰ ﻭاﻟﻘﺮﺑﺔ. ﻭﻓﻲ اﻟﻘﺎﻣﻮﺱ: اﻟﺮﺅﻳﺔ اﻟﻨﻈﺮ ﺑﺎﻟﻌﻴﻦ ﻭاﻟﻘﻠﺐ، ﺭﺃﻳﺘﻪ ﺭﺅﻳﺔ ﻭﺭﺅﻳﺎ، ﻭاﻟﺮﺅﻳﺎ ﻣﺎ ﺭﺃﻳﺘﻪ ﻓﻲ ﻣﻨﺎﻣﻚ.
স্বপ্নের অর্থ সম্পর্কে বিশিষ্ট অভিধান প্রণেতা আল্লামা ওয়াহীদি রাহ বলেন,
ﻭﻗﺎﻝ اﻟﻮاﺣﺪﻱ: اﻟﺮﺅﻳﺎ ﻣﺼﺪﺭ ﻛﺎﻟﺒﺸﺮﻯ ﻭاﻟﺴﻘﻴﺎ ﻭاﻟﺸﻮﺭﻯ، ﺇﻻ ﺃﻧﻪ ﺻﺎﺭ اﺳﻤﺎ ﻟﻬﺬا اﻟﻤﺘﺨﻴﻞ ﻓﻲ اﻟﻤﻨﺎﻡ ﺟﺮﻯ ﻣﺠﺮﻯ اﻷﺳﻤﺎء،
স্বপ্নের হাক্বীক্বত সম্পর্কে আল্লামা মাযরি রাহ বলেন,
ﻭﻗﺎﻝ اﻟﻤﺎﺯﺭﻱ: ﻣﺬﻫﺐ ﺃﻫﻞ اﻟﺴﻨﺔ ﺃﻥ ﺣﻘﻴﻘﺔ اﻟﺮﺅﻳﺎ ﺧﻠﻖ اﻟﻠﻪ ﻓﻲ ﻗﻠﺐ اﻟﻨﺎﺋﻢ اﻋﺘﻘﺎﺩاﺕ ﻛﺨﻠﻘﻬﺎ ﻓﻲ ﻗﻠﺐ اﻟﻴﻘﻈﺎﻥ، ﻭﻫﻮ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻳﻔﻌﻞ ﻣﺎ ﻳﺸﺎء ﻻ ﻳﻤﻨﻌﻪ ﻧﻮﻡ ﻭﻻ ﻳﻘﻈﺔ، ﻭﺧﻠﻖ ﻫﺬﻩ اﻻﻋﺘﻘﺎﺩاﺕ ﻓﻲ اﻟﻨﺎﺋﻢ ﻋﻠﻢ ﻋﻠﻰ ﺃﻣﻮﺭ ﺃﺧﺮ ﺗﻠﺤﻘﻬﺎ ﻓﻲ ﺛﺎﻧﻲ اﻟﺤﺎﻝ ﻛﺎﻟﻐﻴﻢ ﻋﻠﻰ اﻟﻤﻄﺮ
ভাবার্থ-
আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের ভাষ্যমতে স্বপ্নের মূল রহস্য হল যে,আল্লাহ তা'আলা কর্তৃক ঘুমন্ত ব্যক্তির অন্তরে কিছু খেয়ালাত সৃষ্টি হয় যেভাবে জাগ্রত ব্যক্তির অন্তরে সৃষ্ট থাকে।
আল্লাহ ঐ পবিত্র সত্তা যিনি যা ইচ্ছা তাই করেন,যাকে ঘুম বা তন্দ্রা বাধা দিতে পারেনা।
ঘুমন্ত ব্যক্তির মধ্যে ঐ সমস্ত খেয়ালাতের উপস্থিতি তার পরবর্তি জীবনযাত্রার উপর ইঙ্গিত বহন করে।
যেমন আকাশের মেঘ বৃষ্টিপাতের উপর প্রমান বহন করে থাকে।
মিরকাত-৪৬০৬হাদীসের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য
হযরত ইবনে যামল(/যিমল)রাযি. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺯَﻣْﻞٍ ، ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢَ ﺍﺳْﺘَﻘْﺒَﻞَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﺑِﻮَﺟْﻬِﻪِ ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳُﻌْﺠِﺒُﻪُ ﺍﻟﺮُّﺅْﻳَﺎ ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : " ﻫَﻞْ ﺭَﺃَﻯ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺭُﺅْﻳَﺎ ؟ " ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﺯَﻣْﻞٍ : ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﺃَﻧَـﺎ ﻳَﺎ ﻧَﺒِﻲَّ ﺍﻟﻠَّﻪِ . ﻓَﻘَﺎﻝَ : " ﺧَﻴْﺮٌ ﺗَﻠَﻘَّﺎﻩُ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﺗَﻮَﻗَّﺎﻩُ ، ﻭَﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻨَﺎ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﻷَﻋْﺪَﺍﺋِﻨَﺎ ، ﻭَﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ، ﺍﻗْﺼُﺺ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহিস সালাম যখন ফজরের নামায পড়তেন,তখন তিনি মানুষের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহিস সালাম এর স্বপ্ন শোনা বড়ই পছন্দনীয় ছিলো।
অতঃপর উপস্থিত জনতাকে লক্ষ্য করে বললেন,তোমাদের মধ্যে কি কেউ আজ স্বপ্ন দেখেছো?
ইবনে যামল বললেন, হে 'রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম' আমি দেখেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম নিম্নোক্ত দু'আ টি পড়লেন,
ﺧَﻴْﺮٌ ﺗَﻠَﻘَّﺎﻩُ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﺗَﻮَﻗَّﺎﻩُ ، ﻭَﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻨَﺎ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﻷَﻋْﺪَﺍﺋِﻨَﺎ ، ﻭَﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ،
(আ'মলুল ইয়াওমি ওয়াল-লাইল-৭৬৬)
আপনার নানী সম্ভবত দুরের কোথাও সফর করবেন।
وَمن رأى أَنه يعاشر الْأَمْوَات فَإِنَّهُ يُسَافر سفرا بَعيد
তরজমাঃ- যে ব্যক্তি স্বপ্নে দেখবে যে, সে মৃতব্যক্তির সাথে সফর করছে সে দূরদেশ সফর করবে।
জামে-উ তাফসিরিল আহলাম,১/১৩৩;
وحكي عن بعضهم) إن من رأى كأنه صاحب ميتاً فإنّه يسافر سفراً بعيداً يصيب فيه خيراً كثيراً
তরজমাঃ- কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম থেকে বর্ণিত আছে,যদি কেউ স্বপ্নে দেেখ যে সে মৃতব্যক্তির সাথি হচ্ছে তাহলে সে দূরদেশ ভ্রমণ করবে এবং অনেক নিয়ামত অর্জন করবে।
মুনতাখাবুল কালাম ফি তাফসিরিল আহলাম,১/১০৮;
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার আম্মুর নতুন জীবনের সূচনা হবে।আগের জীবনের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন আসবে।
এবং উনি দূরের কোথাও সফর করবেন।
আপনি কিছু সদকাহ করবেন।মাকে ইবাদত করতে বলবেন।