জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
এটা ওয়াসওয়াসা নয়।
(০২)
হ্যাঁ, অনুসরন করতে পারেন।
(০৩)
মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানা, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا
“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)
সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল, ২৩)
হাদিস শরীফে এসেছে-
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺴْﻠِﻢُ ﺑْﻦُ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺟَﺮِﻳﺮُ ﺑْﻦُ ﺣَﺎﺯِﻡٍ، ﻋَﻦْ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ ﺑْﻦِ ﺳِﻴﺮِﻳﻦَ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ ” ﻟَﻢْ ﻳَﺘَﻜَﻠَّﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﻬْﺪِ ﺇِﻻَّ ﺛَﻼَﺛَﺔٌ ﻋِﻴﺴَﻰ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﺑَﻨِﻲ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻳُﻘَﺎﻝُ ﻟَﻪُ ﺟُﺮَﻳْﺞٌ، ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ، ﻓَﺠَﺎﺀَﺗْﻪُ ﺃُﻣُّﻪُ ﻓَﺪَﻋَﺘْﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃُﺟِﻴﺒُﻬَﺎ ﺃَﻭْ ﺃُﺻَﻠِّﻲ . ﻓَﻘَﺎﻟَﺖِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻻَ ﺗُﻤِﺘْﻪُ ﺣَﺘَّﻰ ﺗُﺮِﻳَﻪُ ﻭُﺟُﻮﻩَ ﺍﻟْﻤُﻮﻣِﺴَﺎﺕِ . ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺟُﺮَﻳْﺞٌ ﻓِﻲ ﺻَﻮْﻣَﻌَﺘِﻪِ، ﻓَﺘَﻌَﺮَّﺿَﺖْ ﻟَﻪُ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﻭَﻛَﻠَّﻤَﺘْﻪُ ﻓَﺄَﺑَﻰ، ﻓَﺄَﺗَﺖْ ﺭَﺍﻋِﻴًﺎ، ﻓَﺄَﻣْﻜَﻨَﺘْﻪُ ﻣِﻦْ ﻧَﻔْﺴِﻬَﺎ ﻓَﻮَﻟَﺪَﺕْ ﻏُﻼَﻣًﺎ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ ﻣِﻦْ ﺟُﺮَﻳْﺞٍ . ﻓَﺄَﺗَﻮْﻩُ ﻓَﻜَﺴَﺮُﻭﺍ ﺻَﻮْﻣَﻌَﺘَﻪُ، ﻭَﺃَﻧْﺰَﻟُﻮﻩُ ﻭَﺳَﺒُّﻮﻩُ، ﻓَﺘَﻮَﺿَّﺄَ ﻭَﺻَﻠَّﻰ ﺛُﻢَّ ﺃَﺗَﻰ ﺍﻟْﻐُﻼَﻡَ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﺃَﺑُﻮﻙَ ﻳَﺎ ﻏُﻼَﻡُ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﺮَّﺍﻋِﻲ . ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻧَﺒْﻨِﻲ ﺻَﻮْﻣَﻌَﺘَﻚَ ﻣِﻦْ ﺫَﻫَﺐٍ . ﻗَﺎﻝَ ﻻَ ﺇِﻻَّ ﻣِﻦْ ﻃِﻴﻦ
আবূ হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তিন জন শিশু ব্যতিত আর কেউ দোলনায় থেকে কথা বলেননি। বনী ইসরাঈলে এক ব্যক্তি ছিলো যাকে ‘জুরাইজ’ বলে ডাকা হতো একদা ইবাদাতে (নফল নামাজে) রত থাকা অবস্থায় তার মা এসে তাকে ডাকলো। সে ভাবল আমি কি তার ডাকে সাড়া দেব, না কি সালাত আদায় করতে থাকবো (জবাব না পেয়ে) অতপঃর তার মা বলল, ইয়া আল্লাহ! ব্যভিচারিণীর চেহারা না দেখা পর্যন্ত তুমি তাকে মৃত্যু দিওনা। জুরাইজ তার ইবাদাত খানায় থাকতো। একবার তার কাছে একটি মহিলা আসলো, সে (অসৎ উদ্দেশ্যে ) তার সাথে কথা বলল, কিন্তু জুরাইজ তা অস্বীকার করল। তারপর মহিলাটি একজন রাখালের নিকট গেল এবং তাকে দিয়ে মনের বাসনা পূরণ করল। পরে সে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করলো। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, এটি কার থেকে? স্ত্রী লোকটি বলল, জুরাইজ থেকে লোকেরা তার কাছে আসল এবং তার ইবাদাত খানা ভেঙ্গে দিল। আর তাকে নীচে নামিয়ে আনল ও তাকে গালি গালাজ করল। তখন জুরাইজ উযূ সেরে ইবাদাত করল.. এরপর নবজাত শিশুটির নিকট এসে তাকে জিজ্ঞাসা করল। হে শিশু! তোমার পিতা কে? সে জবাব দিল সেই রাখাল। তারা (বনী ইসরাঈলের লোকেরা) বলল, আমরা আপনার ইবাদতখানাটি সোনা দিয়ে তৈরি করে দিচ্ছি। সে বলল, না বরং মাটি দিয়ে(করো) [সহীহ বুখারী,কিতাবুল-আহাদিসে আম্বিয়া, হাদীস নং-৩১৯৪]
★তবে গুনাহের কাজে মাতা পিতার আদেশ মানা জায়েজ নেই।
হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।
ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ
আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)
ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহঃ লিখেন,
ويلزم الإنسان طاعة والديه في غير المعصية وإن كانا فاسقين ، وهو ظاهر إطلاق أحمد ، وهذا فيما فيه منفعة لهما ولا ضرر ، فإن شق عليه ولم يضره : وجب ، وإلا فلا
গোনাহের কাজ ব্যতীত মুবাহ তথা বৈধ কাজে
মাতা পিতার আদেশকে মান্য করা ওয়াজিব।যদি তার ফাসিকও হয়।এটা তখন যখন তাতে মাতাপিতার ফায়দা থাকবে,এবং সন্তানের জন্য ক্ষতিকারক হবে না।যদি সন্তানের উপর কষ্টদায়ক হয় তবে ক্ষতিকারক না হয়, তাহলে তখন মাতাপিতার আদেশ মান্য করা ওয়াজিব নয়।(আল-ফাতাওয়াল কুবরা-৫/৩৮১)
আরো জানুনঃ-
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি যদি সবসময় বা আজীবন সববিষয়ে আপনার মা অথবা বাবাকে বিশ্বাস করেন,তাহলে গুনাহ হবেনা।
,
তবে তারা কোনো মিথ্যা বললে সেটি বিশ্বাস করা যাবেনা,তারা গুনাহের কোন আদেশ করলে সেটি করা যাবেনা। শরীয়াহ বিরোধী কিছু বললে তাহা মানা যাবেনা। অসত্য কোনো কথা/কাজ বিশ্বাস করা যাবেনা।