আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
101 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (16 points)
edited by
এক বোনের প্রশ্ন,,,
আমি  দ্বীনদার ছিলাম না। নামাজ রোজা এগুলোর মধ্যেই আমার দ্বীন সীমাবদ্ধ থাকতো  । নামাজও ঠিকমতো পরতাম না।তবে হ্যা ছোট থেকে অনেকটা লাজ্জুক ছিলাম ছেলেদের সাথেও তেমন মিশতাম না কথা বলতাম না। একটা সময় আমি  হেদায়েত পাই তখন নামাজ ঠিকমতো পড়ার চেষ্টা করি। তারপর আমি পর্দা সম্পর্কে ওয়াজে কিছুটা  জানতে পারি । তখন আমি বোরকা এবং মাস্ক দিয়ে পর্দা শুরু করি। আগে আমি বোরকা পরতাম না। জীবনের প্রথম আমি বোরকা পড়ি।তারপর পর্দার জন্য হাত মুজা পা মুজা পড়া শুরু করেছি। এভাবেই স্কুলে পর্দাটা করতাম । একজন মেয়ে ফ্রেন্ডের মাধ্যমে আমি মোবাইলে ফেইসবুক খুলি। ফেইসবুকে অনেক দ্বীনিবোন ছিল তাদের পোস্টগুলো খুব ভাল্লাগতো। এই ফেইসবুকে হঠাৎ আমার এক স্কুল ক্লাসমিট ছেলের সাথে পরিচয় হয়। তখন সে আমার ফ্রেন্ড হয়ে যাই তারপর একটা সময় সে আমাকে পছন্দ করে সেটা জানায়। তারপর তার সাথে আমার কথা হতে থাকে মেসেনজারে । (আস্তাগফিরুল্লাহ)  তখনও আমি হারাম রিলেশন সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না।এভাবেই তার সাথে মেসেনজারে কথা হতো । দুইতিন মাস যাওয়ার পর মনে হচ্ছিল আমার ইবাদতে আর স্বাদ পাচ্ছি না ইবাদতের প্রতি কোনো মনোযোগ নেই কেনো এইরকম হচ্ছিল বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু  আশ্চর্যের বিষয় যেদিন আমার এইরকম হচ্ছিল ইবাদত নিয়ে সেদিন আমি ফেইসবুকে ডুকেই হারাম রিলেশন নিয়ে পোস্ট এবং ইসলামিক ভিডিও শুনি। ফেইসবুক জুরে হারাম রিলেশন নিয়ে পোস্ট ভিডিও ছিল।
তারপর আমি বুঝতে পারি  আমাদের এই সম্পর্কটা হারাম এতে আল্লাহ নারাজ।  হারাম রিলেশন অবস্থায় মারা গেলে আমার কবরে আজাব হবে। অনেকটা ভয় পাই। আমি তাঁকে বলছি হারাম রিলেশন ছাড়তে চায়  বিয়ে করতে চায়। সে বলে আমি এখন কিভাবে বিয়ে করবো?  ইত্যাদি।   কিন্তু এই দুইতিন মাসে ওই ছেলের প্রতি আমার অনেকটা ফিতনাযুক্ত মায়া সৃষ্টি হয়ে যায়। তারপর ওই ছেলের সাথে কথা বলা অফ করার চেষ্টা  করি কিন্তু  পারতেছিলাম না।আমার ইমানটাও তখন নড়বরে ছিল।  কোনো না কোনোভাবে ওর সাথে কথা হয়ে যেতো। আবার মেসেন্জারে কথা বলা শুরু করতাম।এভাবে  অনেকবার তওবা করতাম আবার ওই ছেলের সাথে কথা বলতাম এভাবেই চলছিল আমার জীবন।  কোনো ভাবেই যেনো  এ হারাম থেকে বের হতে পারছিলাম না।  (আমাদের সম্পর্কটা শুধু মেসেনজারেই সীমাবদ্ধ ছিল। আমি নিজের পিকও দিয়ে ফেলছিলাম, তাঁকে বলছি ডিলিট করার জন্য বলছে ডিলিট করেছে। আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে এসবও বলছিল কিন্তু আমি অনেক বাহানা দিয়ে এড়িয়ে গেছি। আমার বাবা দেখলে অনেক জামেলা হবে এসব বলে এড়িয়ে গেছি  )  তারপর কোনো উপায় না পেয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই। আল্লাহ আমাকে সাহায্য করেছেন। হারাম রিলেশন থেকেও বের হতে পারছিলাম না।  তারপর অনেক কান্না করতাম ওই ছেলের কথা অনেক মনে পরতো। অনেকদিন পর আবারও এই ছেলের সাথে  আমার কথা হয় । তওবা করার পরও বার বার ওই ছেলের সাথে কথা হয়ে যেতো। একটা সময় বুঝতে পারি আল্লাহর সাথে আমি ঠাট্টা করছি তখন আবারো তওবা করি  আবার  চেষ্টা  করি হারাম থেকে বাঁচার।আলহামদুলিল্লাহ  আমার মনে কি যেনো হলো, ওই ছেলের প্রতি আগের মতন মায়া কাজ করে না কেমন যেন ঘৃণা সৃষ্টি  হয় ।
আলহামদুলিল্লাহ শেষমেষ  এই হারাম থেকে বেঁচেছি আল্লাহ আমাকে বাচিয়েছেন। আমি এখন খাস পর্দা করার চেষ্টা  করি, আমি সহশিক্ষাও ছেড়ে দিছি  এবং আইওএম ভর্তি হয়েছি  দ্বীন শিক্ষার জন্য পড়তেছি  এখানে। নিজেকে শুধরানোর চেষ্টা করি।

আমার  এই হারাম রিলেশন এর গুনাহ নিয়ে অনেক ভয় লাগে।আমি জানতে চাচ্ছি,,  আল্লাহ আমাকে মাফ করবেন কি না এতবার যে আমি তওবা করার পরও ওই ছেলের সাথে কথা বলেছি? আমি শুনেছি বারবার গুনাহ করলে নাকি আল্লাহ মাফ করেন না। আর আমি কি উত্তম কাউকে পাওয়ার যৌগ্যতা রাখিনা?

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ»

হযরত ইবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহ করে নাই ব্যক্তির মত হয়ে যায়। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০] 

★স্য-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
খাঁটিভাবে তাওবা করলে আল্লাহ্ তাআলা অতীতের ছোট বড় সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তবে বান্দার কোন হক নষ্ট করে থাকলে তাওবার পাশাপাশি তাকে তার হক তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া জরুরী।

 তওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-
(বান্দার হক থাকলে আগে সেটি আদায় করে আসতে হবে,বা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে আসতে হবে।)

এক. পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া।

দুই. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।

তিন. আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।
,  
আরো জানুনঃ 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার তওবা কবুল হবে,ইনশাআল্লাহ। 
আপনি আর টেনশন করবেননা।

আপনি যেহেতু তওবা করে ফিরে এসেছেন, সুতরাং উত্তম ও দ্বীনদার কাউকে স্বামী হিসেবে পাওয়ার অবশ্যই যোগ্যতা রাখেন।

হতাশ হবেননা,উত্তম ও দ্বীনদার পাত্রের সহিত বিবাহের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া চালিয়ে যাবেন। আল্লাহ তায়ালা আপনাকে নিরাশ করবেননা,ইনশাআল্লাহ। 

নিম্নোক্ত দোয়া করবেন।

 رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর।
(সূরা ফুরকান ৭৪ নং আয়াত)

সালাতুল হাজত পড়ে দু'আ করবেন।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...