আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
121 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামুয়ালাইকুম। আমার জন্য বর্তমানে একটি সম্বন্ধ এসেছে। ছেলে বিবাহিত বাচ্চা আছে দুটো।কিন্তু তার স্ত্রী মানসিকভাবে অসুস্থ কিছুদিন সুস্থ থাকে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রায় সাতবছর যাবত এই ভাবেই চলতেছে।

ছেলের এইবছর তার স্ত্রী এবং সন্তানদের মেয়ের বাবার বাড়িতে রেখে এসেছেন কারন তাকে চাকরি করতে হয় আর অনেকসময় তিনি নাকি বাচ্চাদের রেখে বাসা থেকে বের হয়ে যান যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন।  তাই বর্তমানে স্ত্রী সন্তান স্ত্রীর বাবার বাড়িতে থাকে। এমতাবস্থায় সে অন্য একটি বিবাহ করতে চায় কিন্তু সেখানে এই সব সত্যি গোপন করে কিন্তু ভাগ্যক্রমে পাত্রীপক্ষ জানতে পারে এসব তাই বিবাহের কথাবার্তা আর আগায়নি। কিন্তু ছেলে আমাকেই বিয়ে করতে চায়‌ আর তার জন্য সে যা তা করতে হয় করবে এমনটা সে নিজে বলেছে।

আমি একজন অবিবাহিত মেয়ে। মাস্টার্সে পড়ি। ছেলে ও যথেষ্ট যোগ্যতাসম্পন্ন। কিন্তু তার এই প্রথম বিবাহের জন্য আমার পরিবার কিছুতেই তার প্রস্তাবে রাজি না‌। তারা চায় যে হয় প্রথম স্ত্রী ডিভোর্স দিক নয়তো বিয়ে সম্ভব না কারন তার প্রথম স্ত্রীর পরিবার জানতে পারলে ঝামেলা করতে পারে এই ভয়ে।
আল্লাহর রহমতে আমার মনে হয় যে আমি যদি এই প্রস্তাবে সায় দি তবে তিনটা মানুষের জীবনের অনেক পরিবর্তন হবে ইনশাআল্লাহ। পাত্র,তার সন্তানদের। আর প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিতে আমি তাকে জোর করতে চাই না কারন এতে করে হয়তো সে তার পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়াবে আর বাচ্চাগুলোও (৪বছর-২বছর) ছন্নছাড়া হয়ে যেতে পারে।

এমতাবস্থায় আমি কি করা উচিত বলে আপনাদের মনে হয় আমাকে যদি পরামর্শ দিতেন খুবই উপকৃত হবো ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (564,330 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


https://www.ifatwa.info/6683 নং ফাতওয়ায় বর্ণিত রয়েছে ,
শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে,তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন
فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع 
তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)।(সুরা : নিসা, আয়াত-৩)

দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া। আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।
قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)
 আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক। 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/6683

একাধিক স্ত্রীর মাঝে দুই বিষয়ে সমতা রক্ষা করা অতীব প্রয়োজন। স্ত্রীদের সঙ্গে রাতযাপন ও ভরণ-পোষণ। 

এ দুই অধিকার সব স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমানভাবে স্বামীকে পালন করে যেতে হবে। কোন স্ত্রী সুন্দর বা অসুন্দর, আর কোনটি কুমারী বা বিধবা তা পার্থক্য করা যাবে না। 

কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি মনের ভালোবাসা বেশি হওয়া, আবার অন্য স্ত্রীর প্রতি কম হওয়া তা সমতার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা, এটি মনের বিষয়, আর মনের ওপর কারও কোনো অধিকার নেই। একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে শুধু রাতযাপন ও খরচাপাতি এ দুই বিষয়ে সমতা ধর্তব্য। এটাই হলো একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সমতা রক্ষার ইসলামি শরিয়তের বিধান। 

হাদিসে আছে, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) স্ত্রীদের মধ্যে পালাবণ্টন করতেন এবং ন্যায়বিচার করতেন। আর বলতেন, হে আল্লাহ! আমি আমার শক্তি-সামর্থ্যানুযায়ী পালাবণ্টন করলাম। সুতরাং যাতে শুধু তোমার ক্ষমতা রয়েছে, তাতে আমার শক্তি নেই। কাজেই তাতে তুমি আমাকে ভর্ৎসনা করো না। (তিরমিজি : ১১৭০, আবু দাউদ : ২১৩৬)।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি যদি এভাবে আপনাকে বিবাহ করার পর উভয় স্ত্রীর যাবতীয় খরচ,ভরনপোষণ, আর রাত যাপনের ক্ষেত্রে সমতা কায়েম করতে পারে,সেক্ষেত্রে আপনি বিবাহ বসতে পারেন।
নতুবা সেখানে বিবাহ বসলে বেইনসাফি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। 

উল্লেখ্য যে  মাতাপিতার সন্তুষ্টি ও অনুমতি নিয়ে সবাইকে অগ্রসর হতে হবে।এবং মাতাপিতার সন্তুষ্টিই দুনিয়া ও অাখেরাতের কল্যাণের উত্তম মাধ্যম।মাতাপিতাকে কষ্ট দিয়ে জীবনে সূখী হওয়া যাবে না।

তাছাড়া বৈধ ও ভালো কাজে মাতাপিতার নির্দেশ মান্য করাও ওয়াজিব।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বাবা মার সিদ্ধান্তের বাহিরে কিছু না করার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...