আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
222 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ, উস্তায।

আমার জীবনঘনিষ্ঠ কিছু ব্যাপারে পরামর্শ চেয়ে এই লেখা।

আমি ঢাকা উইনিভার্সিটির উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের; অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। এই ডিপার্টমেন্টে বিশেষভাবে যেগুলো শেখানো হয় সেগুলো ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক। "নারীবাদ", "ধর্মনিরপেক্ষতা" হলো এখানের পড়াশোনার মূল বিষয়। এখানে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত এবং ইসলামের অনেক বিধিবিধানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। সমকামিতাসহ ছেলে-মেয়ের অবৈধ মেলামেশা, বসবাসকে নরমাল বলে শিক্ষা দেয়া হয়, ইত্যাদি। প্রথমদিকে আমি এগুলো শিখে শিখে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হতেই যাচ্ছিলাম। না'উজুবিল্লাহ। আস্তাগফিরুল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা ফিরিয়ে এনেছেন।

উস্তায, আমি উইনিভার্সিটির পড়াটা কন্টিনিউ করতে চাচ্ছি না। আমার ডিপার্টমেন্টটা অপছন্দের। এখানে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া আমার কাছে বোঝা মনে হয় এবং, যেটা কিনা আমাকে শুধু একটা সার্টিফিকেট নেয়ার জন্য চালাতে হয়।  এই লাস্ট সেমিস্টারে একটা মনোগ্রাফ জমা দিতে হবে। কিন্তু, সেটা রেডি করার জন্য আমাকে নানারকম ফিতনার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আমি সেটা চাচ্ছি না। কিন্তু, এসব কথা আমি কাউকে বলতে পারিনি এখনও।

এদিকে, বাসায় আব্বু চান, আমি যেন বিসিএস ক্যাডার হই। আম্মু চান না অতোটা। কিন্তু, আব্বুর মন রক্ষার জন্য আমাকে বিসিএসটা দিতে বলেন আম্মু। কিন্তু, আমি চাকরি করতে চাই না। আমি গৃহিণী হতে চাই এবং ইসলামের গন্ডির মধ্যে থেকে দ্বীনের খেদমত করতে চাই। ইন শা আল্লাহ।

একজনের সাথে আমার বিয়ের ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে। তাকে আমি বলেছি যে, এখানে আমি মাস্টার্স করব না। সে এ ব্যাপারে নিমরাজি আছে। তাকে এটা বলা হয়নি যে, আমি অনার্স করার আগ্রহ পাচ্ছি না মোটেও। জানি না, সে জানলে কী রিয়্যাক্ট করবে।

মোট কথা, আমার এই জেনারেল লাইনে আর আগানোর ইচ্ছে নেই। ইসলামিক লাইনে অনেক অনেক পড়াশোনা করার ইচ্ছা। সেই সাথে, খুব করে চাই, আমি কুরআনের হাফেজা হবো, ইন শা আল্লাহ। যার সাথে বিয়ের কথাবার্তা চলছে, সেও একজন হাফেজ।

এখন, আমি কিছু পরামর্শ চাচ্ছি এসব ব্যাপারে। আমি মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি এসব নিয়ে।

আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তা'য়ালা আমাকে এ বছরের জুলাই মাসে; ইসলামিক অনলাইন মাদরাসায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এখানের, সেকেন্ড সেমিস্টারের স্টুডেন্ট হিসেবে এখন ধরে নেয়া যায় আমাকে।

জাযাকাল্লাহু খইরন, উস্তায।

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনার আলোচনা থেকে দু'ইটি বিষয় বুঝতে পারলাম।
এক, শিক্ষা সম্মন্ধীয়, দ্বিতীয় বিবাহ সম্মন্ধীয়।

শিক্ষা সম্মন্ধীয় প্রশ্নের জবাবে আমরা বলব,ইসলাম ও মুসলমানের স্বার্থে ফুকাহায়ে কেরাম জেনারেল শিক্ষা গ্রহণের রুখসত দিয়েছিলেন।যেহেতু আপনার শিক্ষা ধারাটি সম্পূর্ণই অনৈসলামিক। যা পড়লে ছাত্র/ছাত্রীর মন-মানষিকতা নষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাববনা রয়েছে।তাই এরকম শিক্ষা থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত সঠিক ও প্রশংসনীয়।এক্ষেত্রে মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা যাবে না।

হাদীস শরীফে এসেছে,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- 
لا طاعة في معصية إنما الطاعة في المعروف
গোনাহের কাজে কারো বশ্যতা স্বীকার করা যাবে না।(শরীয়ত যাদের বিধিনিষেধ মেনে চলার আদেশ দিয়েছে তাদের) আদেশ শুধুমাত্র বৈধ ও নেকীর কাজে মানা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

অন্য এক হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,
لَا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ
আল্লাহর অবাধ্যতায় কারো বিধিনিষেধ কে মান্য করা যাবে না।(মুসনাদে আহমাদ-১০৯৮)

চার মাযহাবের গ্রহণযোগ্য ফেকহী গ্রন্থ 'আল-মা'সুআতুল ফেকহীয়্যায়(২৮/৩২৭)' বর্ণিত রয়েছে,
"طاعة المخلوقين - ممّن تجب طاعتهم – كالوالدين ، والزّوج ، وولاة الأمر : فإنّ وجوب طاعتهم مقيّد بأن لا يكون في معصية ، إذ لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق" انتهى
শরীয়ত কর্তৃক যাদের বিধিনিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।যেমনঃ মাতাপিতা,স্বামী,এবং রাষ্ট্রীয় প্রধান বা তাদের আদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ।তাদের বিধিনিষেধ আমলে নেয়া তখনই ওয়াজিব যখন তা শরীয়ত বিরোধী হবে না।কেননা 'সৃষ্টিকর্তার নাফরমানীতে কোনো সৃষ্টজীবের অনুসরণ করা যায় না'(মর্মে হাদীসে বর্ণিত রয়েছে)

বিবাহ সম্মন্ধীয় প্রশ্নের জবাবে আমরা বলব,
আপনি দ্বীনদার পাত্রকে বেঁছে নিয়েছেন,এটাও প্রশংসনীয় উদ্যোগ ও সিদ্ধান্ত।

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ) 
চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী
তুমি দ্বীনদারীকে অগ্রাধিকার দাও।{যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)}(সহীহ বুখারী-৪৮০২,সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...