আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
139 views
in সালাত(Prayer) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু,,
প্রশ্ন:
১/ আমি ফজরের ১০ বা ১৫ মিনিট আগে উঠে ওযু করে এসে এই অল্প সময়েই তাহাজ্জুদ আদায় করে নেই,   অনেক সময় ফজরের ১ বা ২ মিনিট আগে ওযু ভেঙে যায়,,  তখন আমি আবার গিয়ে ওযু করি। এখন আমি কি এক ওযুতে তাহাজ্জুদ এবং ফজরের সালাত আদায় করতে পারবো??? ওযু ধরে রাখতে না পারার কারণে একবার তাহাজ্জুদের সময় ওযু করতে হয় আবার ফজরের ওয়াক্তে ওযু করতে হয়। এখন আমি যদি ফজরের ১০বা ১৫ মিনিট আগে ওযু করে তাহাজ্জুদ এবং ফজরের সালাত দুটাই আদায় করতে পারবে কিনা?

২/ তায়াম্মুম এর নিয়ম জানতে চাই কিভাবে তায়াম্মুম করে??

৩/ লম্বা সময় ( যেমন: ১০ বা ১২ ঘন্টা)  নিয়ে বাসে থাকার কারনে সালাতের ওয়াক্ত হলে বাসে বসে সালাত আদায় করা যাবে কিনা বা  ইশারায় সালাত আদায় করা যাবে কিনা?
৪/ অনেক সময় মার্কেটে গেলে বা ডাক্তারের কাছে গেলে দেখা যায় সালাত আদায়ের ওয়াক্ত হয়ে গেছে,, তখন যদি কোনো মসজিদে সালাত আদায় করা যাবে কিনা??
 যদিও আমাদের বাংলাদেশে মসজিদে মেয়েদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা নেই,,  তবুও সালাত যেন  কাযা করতে  না হয় তাই মসজিদে যদি আলাদা কোনে জয়গায় পর্দার সাথে সালাত আদায় করা যাবে কিনা??

৫/ যদি মসজিদে সালাত আদায় করা যায় তাহলে তায়াম্মুমের করলেই ওযু হবে কিনা? যেহেতু  বাংলাদেশের মসজিদ গুলোতে মেয়েদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা নেই তাই ওযুখানায় পর্দার ব্যবস্হাও নেই।

1 Answer

0 votes
by (564,750 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
আপনি ফজরের ১০বা ১৫ মিনিট আগে ওযু করে সে এক অযু দিয়ে তাহাজ্জুদ এবং ফজরের সালাত দুটাই আদায় করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে তাহাজ্জুদ আদায়ের পর ফজরের ওয়াক্ত আসলে আপনি ফজরের নামাজ আদায় করবেন। 

(০২)
https://www.ifatwa.info/34473/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
তায়াম্মুমের ফরজ দুটিঃ-
১। পুরো চেহারা একবার মাসেহ করা।
২। উভয় হাত কনুই পর্যন্ত মাসেহ করা। 

★তবু নিয়ত করা তায়াম্মুমের জন্য শর্ত।
নিয়ত ছাড়া তায়াম্মুম শুদ্ধ হবেনা। 

মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,

 وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤی اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡکُمۡ مِّنَ الۡغَآئِطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَیَمَّمُوۡا صَعِیۡدًا طَیِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡہِکُمۡ وَ اَیۡدِیۡکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَفُوًّا غَفُوۡرًا ﴿۴۳﴾ 

 ‘আর যদি তোমরা অসুস্থ হয়ে থাকো কিংবা সফরে থাকো অথবা তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি প্রস্রাব-পায়খানা থেকে এসে থাকে, কিংবা নারীগমন করে থাকো, কিন্তু পরে যদি পানিপ্রাপ্তির সম্ভাবনা না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও। মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ করে নাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৪৩)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْفَارِسِيُّ ، نَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ جَابِرٍ ، نَا عَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ مُطَرِّفٍ ، ثَنَا عَلِيُّ بْنُ ظَبْيَانَ ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ، عَنْ نَافِعٍ ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، عَنِ النَّبِيِّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَالَ : " التَّيَمُّمُ ضَرْبَتَانِ : ضَرْبَةٌ لِلْوَجْهِ ، وَضَرْبَةٌ لِلْيَدَيْنِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ "

আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল আল-ফারিসী (রহঃ) ... ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তাইয়াম্মুমের জন্য দুইবার মাটিতে হাত মারতে হবে, একবার হাত মেরে মুখমণ্ডল মসেহ করবে এবং দ্বিতীয়বার হাত মারে উভয় হাত কনুই পর্যন্ত মসেহ করবে।
(সুনানে দারা কুতনি ৬৬০)

عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، كَانَ يَتَيَمَّمُ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ . وَسُئِلَ مَالِكٌ كَيْفَ التَّيَمُّمُ وَأَيْنَ يَبْلُغُ بِهِ فَقَالَ يَضْرِبُ ضَرْبَةً لِلْوَجْهِ وَضَرْبَةً لِلْيَدَيْنِ وَيَمْسَحُهُمَا إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ .

নাফি' (রহঃ) হইতে বর্ণিত, আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) হস্তদ্বয়ের উভয় কনুই পর্যন্ত তাইয়াম্মুমে মসেহ করিতেন।

মালিক (রহঃ)-কে প্রশ্ন করা হইলঃ তাইয়াম্মুম কিরূপে এবং (হস্তদ্বয়ে তাইয়াম্মুম করার সময়) কোন স্থান পর্যন্ত তাহা পৌছাইবে? তিনি (উত্তরে) বলিলেনঃ একবার মাটিতে হাত রাখিবে মুখমণ্ডলের নিমিত্ত আর এক দফা রাখিবে হস্তদ্বয়ের সমূহের জন্য এবং হস্তদ্বয় উভয় কনুই পর্যন্ত মসেহ করিবে।
(মুয়াত্তা মালিক ১২১)

তায়াম্মুমের সুন্নত পদ্ধতিঃ- 
১। তায়াম্মুমের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া। (জমউল জাওয়ামে : ১/১৫৭৮৭)
২। ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৯)
৩। মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ করার মাঝখানে অন্য কোনো কাজ না করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭২)
৪। মাটির মধ্যে হাত আগে-পিছে নড়াচড়া করা। (দারাকুতনি : ৬৯৭)
৫। মাটির ওপর হাত মারার পর উভয় হাত ঝেড়ে ফেলা। (মুসলিম, হাদিস : ৫৫৩; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৫৬৩)
৬। মাটির ওপর হাত রাখার সময় আঙুলগুলো খোলা রাখা। (দারাকুতনি : ৬৯৭)

তায়াম্মুম করার ইচ্ছাকারী ব্যক্তি উভয় হাতের কাপড়গুলো কনুইয়ের ওপরে উঠিয়ে নেবে। তায়াম্মুম দ্বারা নামাজ পড়ার নিয়ত করে বিসমিল্লাহ পাঠ করবে। নিজের উভয় হাতের তালুকে আঙুলগুলো খোলা রেখে মাটির ওপর রাখবে। হাতকে মাটির ওপর সামান্য ঘষবে। তারপর উভয় হাত উঠিয়ে ঝেড়ে ফেলবে। এরপর পুরো মুখমণ্ডল মাসেহ করবে। অতঃপর আগের মতো উভয় হাতের তালু আঙুল খোলা রেখে মাটির ওপর রেখে সামান্য ঘষবে। এরপর নিজের বাঁ হাত দ্বারা ডান হাত কনুই পর্যন্ত মাসেহ করবে। এরপর ডান হাত দ্বারা বাঁ হাত কনুই পর্যন্ত মাসেহ করবে। তাতে তায়াম্মুম পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। এরপর তা দ্বারা ফরজ, নফল সব ধরনের ইবাদত আদায় করতে পারবে। (কিতাবুল আসার লি আবি ইউসুফ : ৭৭; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১/১৬০)
(কিছু তথ্য সংগৃহীত)
,
কোন কোন বস্তু দিয়ে তায়াম্মুম করা যাবে,জানুনঃ

(০৩)
যানবাহনে নামাজ আদায় করা যাবে।
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

(০৪)
এক্ষেত্রে বাসায় এসে সালাত আদায় করতে হবে।

(০৫)
এক্ষেত্রে তায়াম্মুম করা জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...