আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
53 views
in সালাত(Prayer) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম,
১. কোনো ব্যক্তি জন্ডিসের কারণে দাড়াতে গেলে বমির বেগ হয়, বমি চলেও আসে কখনো, এছাড়াও কোমরের দিকে প্রচন্ড ব্যাথা হয়,নড়তেও কষ্ট হয়। এই দুই কারণে সে ফরজ সালাত বসে সালাত আদায় করলে কি তা জায়েজ হবে?
২. ওয়াক্তের শুরুর দিকে অবস্থা বেশি খারাপ থাকায় বসে সালাত আদায় করে কিন্তু ওয়াক্তের মাঝে বা শেষ দিকে যদি দাড়াতে পারবে বলে মনে করে তাহলে কি নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে?
৩. প্রেগ্ন্যাসির শেষের দিকে শরীর ভারী হওয়ায় কখনো ফরজ সালাত দাঁড়িয়ে শুরু করলে যদি দেখা যায় হুট করেই খারাপ লাগা শুরু হয়, মাথা ঘুরে বা শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, পা কাপে তখন সেই রাকাতের বাকি অংশ বা পরবর্তী রাকাত থেকে বসে সালাত আদায় করতে পারবে কি?

৪. কাপড়ে দৃশ্যমান নাপাকি ছিল, সাবান দিয়ে ঘষে উঠিয়ে বালতির একই পানিতে কয়েকবার চুবিয়ে নিংড়ে নিলে সেই কাপড় দিয়ে নামাজ পড়া যাবে? যদি নাপাকি উঠে যায়? নাকি পানি বদলিয়ে তিন বার ই ধুতে হবে?
৫. জুতা/বালতি/মগে প্রস্রাব/বমি লেগেছে। পাক হবার জন্য এগুলোকেও তিনবার করে ধুয়ে প্রতিবার পানি ঝরাতে হবে? নাকি ভালোভাবে একবার ধুলে যদি নাপাকি চলে যায় তাতেই হবে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَتْ بِي بَوَاسِيرُ، فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الصَّلاَةِ، فَقَالَ: «صَلِّ قَائِمًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ»

আমার একবার অর্শগেজ হয়ে গেলো।আমি এমন অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট নামায পড়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে জিজ্ঞাসা করলাম।তখন তিনি প্রতিউত্তরে বললেন,তুমি দাড়িয়ে নামায পড়বে,তারপর দাড়ানো সম্ভব না হলে বসে বসে নামায পড়বে।যদি বসেও সম্ভব না হয় তাহলে হেলান দিয়ে নামায আদায় করবে।(সহীহ বোখারী-১১১৭)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
ولو كان قادرا على بعض القيام دون تمامه يؤمر بأن يقوم قدر ما يقدر 
যদি কেউ নামাযে কিছু সময় কিয়াম করার পর  অক্ষম হয়ে যায়,এবং এরপর আর দাড়াতে সক্ষম না হয়,তাহলে তার জন্য হুকুম হল যে, সে নামাযে ততটুকুই দাড়াবে যতটুকু তার জন্য সম্ভব হবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩৬)

আরো জানুন-

যদি কোনো ব্যক্তি রুকু সেজদায় যেতে পারে,কিন্তু রুকু সেজদা থেকে উঠতে না পারে।তাহলে এমন ব্যক্তি প্রথম রাকাত দাড়িয়ে পড়ার পর পরবর্তী রা'কাত সমূহ বসে পড়বে। 

মাযুর ব্যক্তিদের জন্য জমিনে বসে নামায আদায় করাই উত্তম ও মাসনূন তরীকা।এর উপরই সাহাবায়েকেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুম  এবং পরবর্তীদের আমল চলে আসছে। চেয়ারে বসে নামায আদায় করার রেওয়াজ কেবল শুরু হয়েছে।খায়রুল কুরূনে এর নযীর নেই। অথচ সে যুগে মাযুরও ছিল চেয়ারও ছিল।

আরো জানুনঃ- 

প্রথম রাকাত দাড়িয়ে পড়ার পর পরবর্তী রা'কাতে উঠতে এধরনের ব্যথা হলে সেক্ষেত্রে প্রথম রাকাত দাড়িয়ে পড়ার পর পরবর্তী রা'কাতে সমূহ বসে পড়বে। 

আর যদি ১ম রাকাত এভাবে দাঁড়িয়ে পরে রুকু/সেজদায় যেতে এ ধরনের ব্যথা হয়,সেক্ষেত্রে শুরু থেকেই বসে নামাজ আদায় করবে।

চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি প্রথম রাকাত দাড়িয়ে পড়ার পর পরবর্তী রা'কাতে সমূহ বসে পড়তে পারবে।

(০২)
এক্ষেত্রে পুনরায় নামাজ আদায় করতে হবেনা।

তবে ওয়াক্তের শেষে অবস্থা ভালো হওয়া আশংকা পূর্ব থেকেই থাকলে সে ব্যাক্তি ওয়াক্তের শুরুতে নামাজ আদায় না করে অপেক্ষা করবে।

(০৩)
তখন সেই রাকাতের বাকি অংশ বা পরবর্তী রাকাত থেকে বসে সালাত আদায় করতে পারবে।

তবে এক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে এক্ষেত্রে দ্রুত রুকু করে উঠে সেজদায়ে চলে যাবে,তারপর পরবর্তী রাকাত গুলি বসে আদায় করবে 

(০৪)
এক্ষেত্রে পানি বদলিয়ে নতুন পানি দিয়ে একবার ধৌত করবেন।
তাহলেই সেটি পাক হয়ে যাবে।

(০৫)
★বালতি,মগ বা বদনা বা গ্লাস যেসকল জিনিস পানি রাখার পাত্র কিন্তু নাপাকি শোষন করতে পারে না। এগুলো পাক করার নিয়ম হলোঃ-
একবার বেশি করে পানি দিয়ে এমন ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে,যাতে মন নিশ্চিত হয়ে যায় যে নাপাকি ধুয়ে চলে গিয়েছে। 

★চামড়ার জুতায় নাপাকি লাগলে তাহা তিনবার ধোয়া লাগবে,এবং প্রত্যেক বার পানি নিংড়িয়ে পড়া পর্যন্ত শুকিয়ে নিতে হবে। 

★প্লাস্টিক,বার্মেজ সহ অন্যান্য জুতা স্যান্ডেলে নাপাকি লাগলে পাক করার পদ্ধতিটা জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...