আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (1 point)

আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ,
কাজী কোম্পানি :- 
কাজী বাংলাদেশের সব থেকে বড় পোলট্রি কোম্পানি। করোনাকলীন সময় তারা খামারীদের বেহাল দশা দেখে তারা কন্টাক ফার্মিং এর কার্যক্রম শুরু করে। এখানে মূলত খামারীকে তার শ্রম, মুরগীর সেড(ঘর), কারেন্ট বিল, লিটার (কাঠের গুড়া), আর কিছু ক্ষেত্রে ঔষুধ দিয়ে ১ দিনের বাচ্চা মুরগী ৩০/৩৫ দিন
পালন করে সাধারণত ২ কেজি ওজনের করে দিতে হয়। এখানে কোম্পানি বাচ্চা, ফিড(খাবার), ঔষধ ও পর্যবেক্ষণের জন্য চিকিৎসক কিছু দিন পরপর এগুলো বিনামূল্যে দেয়া (শুধু কাজী কোম্পানী)। ভালো একটা ওজন আসার পর কোম্পানি নিজেই তা বিক্রি করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। আর খামারীকে প্রতি কেজি মুরগীর জন্য বাজার মূল্য অনুযায়ী ১২/১৫/১৭ টাকা দেয়া হয়। তো এখানে সমস্যার বিষয় হচ্ছে এখানে কি কোম্পানি আর খামারীর লেনদেনটা ভাড়া/পারিশ্রমিক দেয়া নেয়ার মতো হচ্ছে? আর যদি ভাড়া দেয়া নেয়ার মতো হয় তাহলে তো শরিয়া মোতাবেক ভাড়া নির্দিষ্ট হতে হয় কিন্তু এখানে তো পারিশ্রমিক অনির্দিষ্ট। এখানে মুরগীর ওজন যত বেশি হবে মূল্য তত বেশি পাওয়া যাবে আবার ওজন কম বা মুরগী বেশি মারা গেলে কম মূল্য পাওয়া যাবে। তো এভাবে কন্টাক ফার্মিং করা কি যায়েজ হবে ? আবার অন্য দিকে আমি যদি কোনো কর্মচারীকে বেতন ভুক্ত করে রাখি খামারে মুরগীর দেখাশোনা ও খাবার-পানি দেয়ার জন্য সেক্ষেত্রে হুকুম কি হবে?

CP সহ অন্যান্য কোম্পানি :-
এখানেও বিষয়টা অনেকটা একি শুধু পার্থক্য হচ্ছে তারা খামারির থেকে ১০০০ বাচ্চার জন্য ১ লক্ষ ১০/২০/৩০ হাজার টাকা নেয় এবং বাচ্চা, খাবার, ঔষুধ এগুলো বাজার মূল্যের তুলনা বেশ কম মূল্যে খামারিকে দেয়। যেমন এখন ফিডের বস্তার মূল্য ৩৫০০/৩৬০০ চুক্তিবদ্ধ খামারিকে ৩০০০/৩১০০ টাকায় দিবে আর বিক্রির ক্ষেত্রে চুক্তি করার সময় বাজার মূল্য অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয় আর যদি বিক্রির সময় চুক্তি করার সময়ের থেকে বাজার মূল্য বেশি থাকে তখন চুক্তি থেকে বেশি যে মূল্যটা থাকে তা কোম্পানি ও খামারি সমান ভাগ করে নেয়। উদাহরণ স্বরূপ চুক্তির সময় বাজার মূল্য ছিলো ১৬০টাকা কেজি আর বিক্রির সময় মূল্য হলো ১৮০ টাকা, তখন বাড়তি ২০টাকা অর্ধেক ভাগ পাবে খামারি আর অর্ধেক কোম্পানি। আর যদি বিক্রয়ের সময় মূল্য চুক্তির থেকে কম হয় তখন চুক্তি ভিত্তিক মূল্যই দেয়া হবে। আর বিক্রির পর কোম্পানিকে শুরুর ১ লক্ষ+ দেয়া টাকা বাদ দিয়ে বাচ্চা, খাবার আর ঔষুধের মূল্য পরিশোধ করতে হবে। আর এখানে ক্ষতিটাও খামারিকেই নিতে হবে যদি অনেক বেশি মুরগি মারা যায়। এক্ষেত্রে এর হুকুম কি ?

আমি মুরগীর সেড তৈরি করছি কাল মেঝে ঢালাই হবে ইং শা আল্লহ্‌ তাই আপনারা যদি দ্রুত এই ব্যাপারে ফতোয়াটা দেন আমি অনেক উপকৃত হবো।
আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেনো এই খামার থেকে হালাল রুজি উপার্জন করতে পারি এবং উম্মাহের জন্য ব্যয় করতে পারি।

কোনো কথা ভুল বলে থাকলে মাফ করে দিবেন আল্লাহর ওয়াস্তে। জাজাকাল্লহ খইরন।

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


ব্যবসার ক্ষেত্রে এক পক্ষের মাল,অপর পক্ষের শ্রম দেওয়াকে মুদারাবা বলা হয়।
এটি জায়েজ আছে। 

ইসলামী ফিকাহর পরিভাষায় একপক্ষের মূলধন ও অপরপক্ষের শ্রম, মেধা ও বুদ্ধির সমন্বিত রূপে যে ব্যবসা অস্তিত্ব লাভ করে তাকে মুদারাবা ব্যবসা বলা হয়। যিনি মূলধনের মালিক তাকে ‘রব্বুল মাল’ বা ‘সাহিবুল মাল’ ও যিনি শ্রমদান করেন বা উদ্যোগ নিয়ে মূলধন ব্যবহার করেন তাকে ‘মুদারিব’ বলা হয়। নবী (সা.) নবুয়ত লাভ করার আগে হজরত খাদিজা (রা.) এর সঙ্গে এ ব্যবসা করতেন, যা তিনি নবুয়ত  লাভ করার পরও কিছু দিন বহাল রেখেছিলেন। সাহাবায়ে কেরামের অনেকে এ ব্যবসা করতেন। আল্লামা কুরতুবি (রহ.) উল্লেখ করেছেন, ‘কিরাজ অর্থাৎ মুদারাবার বৈধতার ব্যাপারে মুসলমানদের মাঝে কোনোরূপ দ্বিমত নেই।’ (বিদায়াতুল মুজতাহিদ ২/২১৬)।

মুদারাবার ক্ষেত্রে শরীয়তের উসুল হলো যাহা লাভ হবে,তাহা শতকরা হারে উভয়ের মাঝে বন্টন করার চুক্তি করতে হবে।

কোনো নির্দিষ্ট টাকার চুক্তি করা যাবেনা,লোকসান হলে আগে লাভের টাকা থেকে সেটা পূরন করা হবে,অতঃপর মূলধন থেকে পূরন করা হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ     

بَاب الشَّرِكَةِ وَالْمُضَارَبَةِ

حَدَّثَنَا أَبُو السَّائِبِ، سَلْمُ بْنُ جُنَادَةَ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الْحَفَرِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ اشْتَرَكْتُ أَنَا وَسَعْدٌ، وَعَمَّارٌ، يَوْمَ بَدْرٍ فِيمَا نُصِيبُ فَلَمْ أَجِئْ أَنَا وَلاَ عَمَّارٌ بِشَىْءٍ وَجَاءَ سَعْدٌ بِرَجُلَيْنِ .

শারীকাত (অংশিদারী) ও মুদারাবা ব্যবসা

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন সাদ (রাঃ) , আম্মার (রাঃ) ও আমি গানীমাতের মালের ব্যাপারে অংশীদার হই (এই মর্মে যে, আমরা যা পাবো তা তিনজনে ভাগ করে নিবো)। আম্মার ও আমি কিছুই আনতে পারিনি। অবশ্য সাদ (রাঃ) দু’জন যুদ্ধবন্দী নিয়ে আসেন।

নাসায়ী ৪৬৯৭, আবূ দাউদ ৩৩৮৮, বায়হাকী ফিস সুনান ৪/১৯৪, ইরওয়া ১৪৭৪। 

বিস্তারিত জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত গুলোতে খামারীর কমিশন নির্দিষ্ট নেই,অনেকটা ঝুলন্ত।

খামারির কত টাকা আয় হতে পারে,তা সে নিজেও বুঝতে পারেনা।

খামারীর লভ্যাংশ মাজহুল (অজানা) হওয়ায় এ ধরনের চুক্তি জায়েজ নেই।

এক্ষেত্রে দুই ভাবে খামারীদের সাথে চুক্তি হতে পারেঃ-

এক,
মুদারাবা (এক পক্ষের মাল,অপর পক্ষের শ্রম)
মুদারাবা হিসেবে গণ্য হবে।
এক্ষেত্রে খামারিকে শুধু শ্রম দিতে হবে? 
নাকি মুরগীর সেড(ঘর), কারেন্ট বিল, লিটার (কাঠের গুড়া,ফিড ইত্যাদিও খামারিকে দিতে হবে, সবই উভয় পক্ষ মিলে বসে স্পষ্ট আকারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এখানে বলে নিতে হবে যে লাভ লোকসানে উভয়েই শরীক থাকবে,এবং খামারির লভ্যাংশ শতকরা হারে চুক্তির সময়েই নির্দিষ্ট করতে হবে। 

দুই,
খামারিকে ভাড়া হিসেবে নিতে হবে।
(এই ছুরতে খামারির শুধু শ্রমই দিতে হবে,আর কিছু নয়।)

এক্ষেত্রে খামারির দৈনিক/মাসিক/বাৎসরিক ভাড়া নির্দিষ্ট করতে হবে।

লাভ হোক আর লোকসান হোক,ভাড়া ঠিকই থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...