আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
238 views
in পবিত্রতা (Purity) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম,

১। আমার সাদাস্রাব কম বা বেশি পরিমাণ প্রায় সারাদিন ই নির্গত হতে থাকে।এই ধরুন,আমি আধা ঘন্টা বা বিশ মিনিট পর পর চেক করলে সাদাস্রাবের উপস্থিতি দেখতে পাই।কিছু সময় যেমন রোযা থাকা অবস্থায় এটা সারাদিনে খুব কম পরিমাণ দেখা দেয়।প্রত্যহ আমার এমন হয়,তাহলে কি আমি মাযূর বলে গন্য হবো?
২।নামাযের আগে পরিষ্কার হয়ে ওযু করে নামাযে দাঁড়ানোর পর নামাযের মধ্যেই পুনরায় সাদাস্রাব দেখা যায়,যেটা নামায শেষে আমি বুঝতে পারি আর কিছু কিছু সময় দেখা যায় না।এক্ষেত্রে কি আমি মাযুর বলে গন্য হবো?

৩।উত্তেজনা বসতো মেয়েদের শরীর থেকে যে সাদা তরল বের হয়, এর জন্য কি ফরজ গোসল করতে হবে? মেয়েদের তো পুরুষের মতো বীর্যপাত হয় না, তাহলে মেয়েদের স্বপ্ন দোষ হয়? এক্ষেত্রে কিভাবে বোঝা যাবে যে স্বপ্ন দোষ সংক্রান্ত বিষয় এটা আর এখন গোসল ফরজ আমার?

৪। নাপাকি যদি কাপড়ে দৃশ্য মান না হয় কিন্তু মন মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয় যে নাপাকি কাপড়ে বিদ্যমান আছে,সেক্ষেত্রে কি তিন বার করে পরিষ্কার করতে হবে?

৫।গোসল ফরজ হওয়া অবস্থায় নাপাকি যে কাপড়ে লাগবে সেটা তিনবার ধোয় আবশ্যক, না পরিধিয় সমস্ত কাপড়ই নাপাকের অন্তর্ভুক্ত হবে?

প্রশ্নগুলো বিস্তারিত উত্তর জানাবেন, প্লিজ।আল্লাহ আপনার ভালো কাজে উত্তম প্রতিদান দিন।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
কোনো অসুস্থ ব্যক্তি শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য শর্ত হলো,

شرط ثبوت العذر ابتداء أن يستوعب استمراره وقت الصلاة كاملا وهو الأظهر كالانقطاع لا يثبت ما لم يستوعب الوقت كله-

শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য কোনো নামাযের শুরু থেকে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত উযর স্থায়ী থাকা শর্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪০)

কোনো ব্যাক্তি মা'যুর প্রমানিত হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে পুরো সময় উক্ত ওযর পাওয়া জরুরি নয়,বরং পরবর্তী প্রতি ওয়াক্তে এক বারও যদি উক্ত ওযর পাওয়া যায়,তাহলে সে মা'যুরই থাকবে।   
,
সুতরাং যদি কোনো একটি নামাযের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত তথা  সম্পূর্ণ ওয়াক্ত আপনার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে,উক্ত সমস্যা বন্ধ না হয়,বরং চলতেই থাকে,এই উযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট ছুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,তাহলে আপনি মা'যুর। 
আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
(যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)
,
পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন
,
আর যদি আপনার ওযরটি এমন না হয়,তাহলে আপনি শরয়ী ভাবে মা'যুর প্রমাণিত হবেন না।

বিস্তারিত জানুনঃ  
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ جَاءَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم فَذَكَرَ خَبَرَهَا وَقَالَ " ثُمَّ اغْتَسِلِي ثُمَّ تَوَضَّئِي لِكُلِّ صَلَاةٍ وَصَلِّي "

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতু আবূ হুবাইশ রাযিয়াল্লাহু ‘আনহা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তার ঘটনা বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ তারপর গোসল করবে এবং প্রত্যেক সলাতের জন্য অযু করে সলাত আদায় করবে।
(আবু দাউদ ২৯৮.ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ ঋতুবতী নারীর হায়িযের ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হওয়া প্রসঙ্গে, হাঃ ৬২৪), আহমাদ (৬/৪২, ২৬২)

حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا أَبُو بِشْرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، أَنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ بِنْتَ جَحْشٍ، اسْتُحِيضَتْ فَأَمَرَهَا النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم أَنْ تَنْتَظِرَ أَيَّامَ أَقْرَائِهَا ثُمَّ تَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي فَإِنْ رَأَتْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ تَوَضَّأَتْ وَصَلَّتْ

‘ইকরিমাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহশের ইস্তিহাযা হলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হায়িযের দিনসমূহে (সলাত ইত্যাদির জন্য) অপেক্ষা করার পর গোসল করে সলাত আদায় করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর অযু করে এক ওয়াক্ত সলাত আদায়ের পর রক্ত দেখা গেলে পরের ওয়াক্তের জন্য পুনরায় অযু করে সলাত আদায় করতে বললেন।
(আবু দাউদ ৩০৫)

حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ سُمَىٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ أَنَّ الْقَعْقَاعَ، وَزَيْدَ بْنَ أَسْلَمَ، أَرْسَلَاهُ إِلَى سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ يَسْأَلُهُ كَيْفَ تَغْتَسِلُ الْمُسْتَحَاضَةُ فَقَالَ تَغْتَسِلُ مِنْ ظُهْرٍ إِلَى ظُهْرٍ، وَتَتَوَضَّأُ لِكُلِّ صَلَاةٍ، فَإِنْ غَلَبَهَا الدَّمُ اسْتَثْفَرَتْ بِثَوْبٍ

আবূ বাকর (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম সুমাই সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, কা‘কা‘আ এবং যায়িদ ইবনু আসলাম (রহঃ) সুমাইকে সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাবের নিকট পাঠালেন। যাতে সুমাই তাকে জিজ্ঞেস করেন, মুস্তাহাযা কিভাবে গোসল করবে? সাঈদ (রাঃ) বললেন, মুস্তাহাযা গোসল করবে যুহর থেকে যুহর পর্যন্ত (অর্থাৎ প্রত্যেক যুহর সলাতের পূর্বে গোসল করবে)। আর ওযু করবে প্রত্যেক সলাতের জন্য। যদি অত্যধিক রক্তস্রাব হয় তাহলে যেন কাপড়ের পট্টি পরিধান করে।
(আবু দাউদ ৩০১)

আরো জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি আধা ঘন্টা বা বিশ মিনিট পর পর চেক করলে সাদাস্রাবের উপস্থিতি দেখতে পান,সুতরাং এ থেকে বুঝা যায় যে প্রতি ৩/৪ মিনিট পর পর চেক করলে আপনি সাদা স্রাব পাবেননা।

তাই প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি মা'যুর বলে গন্য হবেননা।

(০২)
যদি কোনো একটি নামাযের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত তথা  সম্পূর্ণ ওয়াক্ত আপনার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে,উক্ত সমস্যা বন্ধ না হয়,বরং চলতেই থাকে,এই উযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট ছুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,তাহলে আপনি মা'যুর। 

প্রশ্নে যেমনটি উল্লেখ রয়েছে,এমনটি যদি আপনার পুরো ওয়াক্ত জুড়েই থাকে,সেক্ষেত্রে আপনি মা'যুর বলে বিবেচিত হবেন।

(০৩)
স্বপ্নদোষ হওয়ার পর শরীরে/কাপড়ে ভেজা কিছু পেলে ফরজ গোসল করতে হবে।

জাগ্রত অবস্থায় এমনিতেই উত্তেজনা বশত সাদা তরল বের হলে সেটি বীর্য নয়।
সেক্ষেত্রে গোসল ফরজ হবেনা। 

তবে হস্তমৈথুন বা সহবাসের কারনে এমন কিছু বের হলে সেটি যদি সাদা স্রাব না হয়,তাহলে গোসল ফরজ হবে। 

(০৪)
এক্ষেত্রে নাপাকির গন্ধও পাওয়া না গেলে সেটি তিনবার ধোয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই।

(০৫)
এক্ষেত্রে নাপাকি যে কাপড়ে লাগবে,শুধু সেটা তিনবার ধোয়া আবশ্যক।
অন্য পরিধেয় কাপড় নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (8 points)
২০ মিনিট বা আধা ঘন্টা পর পর আমি চেক করি,এখন যদি ৫ বা ১০ মিনিট পর পর চেক করার পরও অল্প পরিমাণ সাদাস্রাব দেখা যায় তাহলে মাযূর হবো না?
by (565,890 points)
প্রতি ৩/৪ মিনিট পর চেক করার দরুন সাদা স্রাব না পেলে আপনি মা'যুর বলে গন্য হবেননা।

কেননা ৩/৪ মিনিটের মধ্যেই ফরজ নামাজ ছোট ছুরা দিয়ে আদায় করা সম্ভব।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 248 views
...