আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
206 views
in সালাত(Prayer) by (61 points)
আসসালামু 'আলাইকুম।

ক) মুসাফির কসর আদায় শুরু করবে কখন থেকে? যাত্রা শুরু হওয়ার পর? নাকি নিজের এলাকা ত্যাগ করার পর? যেমন কেউ চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে (১৫ দিন কম থাকার নিয়্যাতে) রওনা দিল। শহর অতিক্রম করার আগেই সালাতের ওয়াক্ত শুরু হয়ে গেল। এখন সে কসর আদায় করবে কি-না?
খ) নিজ এলাকা বলতে সাধারণত কতটুকু নির্ধারিত হবে? গ্রাম, থানা নাকি জেলা?

গ) মুসাফির যদি জামাতে চার রাকাআত বিশিষ্ট সালাত আদায় করে তবে পুরোটাই আদায় করবে কি?

ঘ) চার রাকাআত বিশিষ্ট সালাতের জামাতে যদি মুসাফির দুই রাকাআত মিস করে ফেলে এবং বাকি দুই রাকাআত পায়, তবে সে ইমামের সাথে সালাম ফেরাবে? নাকি বাকি দুই রাকাআত একা পড়ে দিবে?

ঙ) মুসাফির যদি চার রাকাআত বিশিষ্ট সালাতের চার রাকাআতই আদায় করে, তবে তার সালাত কি মাকরূহ হবে?

চ) সফর অবস্থায় নফল সালাত পড়া উচিত কি-না?
ছ) মুসাফির কি মুকিমের ইমাম হতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (575,550 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
 بسم الله الرحمن الرحيم 
,
(০১) 
সফরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবার পর যে শহরে বসবাস করছেন,বা যে গ্রামে বসবাস করছেন, সে শহর বা গ্রামের সিমানা অতিক্রম করার দ্বারাই আপনি মুসাফির বলে সাব্যস্ত হয়ে যাবেন। ততক্ষণ পর্যন্ত মুসাফির বলেই গণ্য হবেন যতক্ষণ আবার স্বীয় শহর বা গ্রামের সীমানা প্রবেশ না করেন।

فى تنوير الابصار- (من خرج من عمارة موضع إقامته) قاصدا مسيرة ثلاثة أيام ولياليها بالسير الوسط مع الاستراحات المعتادة صلى الفرض الرباعي ركعتين حتى يدخل موضع مقامه (الدر المختار، كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر-2/121، قاضى خان-1/164)
নিজ এলাকার সীমানা অতিক্রম করা মাত্রই ব্যাক্তি কসরের নামাজ পড়তে পারবে। 
,
কসরের নামাজের রাকাত সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
«صَلَاةُ السَّفَرِ رَكْعَتَانِ وَصَلَاةُ الْجُمُعَة رَكْعَتَانِ وَصَلَاةُ الْأَضْحَى رَكْعَتَانِ وَصَلَاةُ الْفِطْرِ رَكْعَتَانِ تَمَامٌ غَيْرُ قَصْرٍ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّكُمْ»
“সফরের সালাত দু’ রাকা‘আত, ঈদুল আদহার সালাত দু’ রাকাআত, ঈদুল ফিতরের সালাত দু’ রাকাআত, এগুলো তোমাদের নবীর মুখ নিঃসৃ্ত পরিপূর্ণ সালাত, কসর সালাত নয়।”

অনুরূপভাবে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন,
«الصَّلَاةُ أَوَّلُ مَا فُرِضَتْ رَكْعَتَيْنِ فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ وَأُتِمَّتْ صَلَاةُ الْحَضَرِ»
“সালাত যখন প্রথম ফরয হয়েছিল তখন দু’ রাকা‘আতই ফরয হয়েছিল, অতঃপর সফরের সালাতকে স্থির রাখা হয়েছে আর অবস্থানের সালাতে পূর্ণতা আনা হয়েছে”।
,
খ,
নিজ গ্রামের সীমানা।
,
গ,
মুসাফির যদি জামাতে চার রাকাআত বিশিষ্ট সালাত আদায় করে তবে পুরোটাই আদায় করতে হবে।
,
ঘ,
চার রাকাআত বিশিষ্ট সালাতের জামাতে যদি মুসাফির দুই রাকাআত মিস করে ফেলে এবং বাকি দুই রাকাআত পায়, তবে সে ইমামের সাথে সালাম ফেরাবেনা, বরং বাকি দুই রাকাআত একা পড়ে নিবে।
,
ঙ,

মুসাফিরের জন্য যোহর আসর ও ইশার ফরয নামায দুই রাকাত পড়া (কসর) ওয়াজিব;  চার রাকাত (পূর্ণ পড়া) নাজায়েয। কারণ মুসাফিরের নামাযের বিধান হল কসর।

তবে যদি ভুলে ৪ রাকাত পড়ে ফেলে তাহলে ২ রাকাত পড়ে যদি বৈঠক করে থাকে তাহলে প্রথম ২ রাকাত ফরয হবে, আর বাকি ২ রাকাত নফল হিসেবে ধর্তব্য হবে। কিন্তু সালাম ফিরাতে দেরী হওয়ায় সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। যদি নামাযের শেষে সেজদায়ে সাহু দেয়, তাহলে নামায হয়ে যাবে। আর যদি সেজদায়ে সাহু না দেয়, তাহলে নামায পুনরায় পড়তে হবে।

যদি ২ রাকাতের পর বৈঠক না করে থাকে, তাহলে নামায হয় নি, নামাযটি পূণরায় পড়তে হবে।

আয়েশা রাযি. বলেন,
فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ
মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)
,
চ,
নিরাপদের সাথে থাকলে সময় সুযোগ থাকলে নফল নামাজ পড়ে নিতে পারেন।
কোনো সমস্যা  নেই । 

আরো জানুনঃ 

,
ছ,
মুসাফির  মুকিমের ইমাম হতে পারে।

যদি ইমাম মুসাফির থাকেন,এবং মুক্তাদিরা মুকিম থাকেন,তাহলে ইমাম সাহেব কসর করে সালাম ফিরিয়ে নেবেন।এবং মুকিম মুক্তাদিরা চার রা'কাত একা একা সমাপ্ত করবেন।তথা অবশিষ্ট দুই রা'কাতকে মুক্তাদিরা একা একা পড়ে নিবেন।

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...