আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
87 views
in সালাত(Prayer) by (17 points)

বিয়ের পর সফরের দূরত্ব অতিক্রম করে ৭ দিন থকার নিয়ত করে শ্বশুরবাড়ি যাওয়া হলে মুসাফির গণ্য হবে কি...? এক্ষেত্রে ৭ দিন পর পুনরায় বাবার বাড়ি এসে কয়েকদিন কাটিয়ে আবার শ্বশুরবাড়ি যাওয়া হবে ১৫ দিনের বেশি সময় স্থায়ীভাবে থাকার নিয়তে।তখন কি মুক্বিম গণ্য হবে..?
সফরের সময় যদি আসরের ওয়াক্ত এবং মাগরিবের ওয়াক্ত ফুরিয়ে যাওয়ার আসংকা থাকে এবং ঐ অবস্থায় অযু না থাকলে প্লেন কিংবা অন্য গাড়িতে সলাত আদায় করতে হবে কি..?এক্ষেত্রে গন্তব্যে পৌছে সলাত আদায় করলে কি গুনাহগার হবে..?

 

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) তে এক দিনের জন্য গেলেও পুরো নামাজ পড়তে হবে।
    
ব্যক্তি নিজের স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয়না। স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।

শরীয়তের বিধান হলো কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলেও কসর পড়তে হবে। বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয়,সেখানে গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করে,তাহলেই কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়বে।
চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত কর আদায় করবে।  
এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

আয়েশা রাযি. বলেন,

فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ

মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)

অপর হাদিসে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

.
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বিয়ের পর সফরের দূরত্ব অতিক্রম করে শশুর বাড়িতে গিয়ে ৭ দিন থাকার সময়েই সে যদি স্থায়ী ভাবে এই শশুর বাড়িতে থাকার নিয়ত করে,সেক্ষেত্রে সেখানে গিয়ে পূর্ণ নামাজ আদায় করবে।
কসর আদায় করবেনা।
কেননা শশুর বাড়িতে সে মুকিম,এটিই তার ওয়াতনে আসলি।

আর যদি সে সেই সময় পর্যন্ত শশুর বাড়িতে স্থায়ী ভাবে থাকার নিয়ত না করে থাকে,বরং নিজ বাবার বাসাতেই বা অন্যত্রে স্থায়ী ভাবে থাকার নিয়ত করে, এরপর পরবর্তী বার শশুর বাড়িতে যাওয়ার পর শশুর বাড়িতে স্থায়ী ভাবে থাকার নিয়ত করে,সেক্ষেত্রে আগের সেই ৭ দিন থাকার সময় কসরের নামাজ আদায় করবে।
কেননা এ সময়ে সে শশুর বাড়িতে মুসাফির বলে বিবেচিত হবে।
তখনও সেটি তার ওয়াতনে আসলি হয়নি।
  
বিস্তারিত জানুনঃ  

(০২)
সফর অবস্থায় যদি আসরের ওয়াক্ত, মাগরিবের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার শংকা হয়,সেক্ষেত্রে যানবাহনেই সে নামাজ আদায় করবে।
পানি না থাকলে তায়াম্মুম করবে।
এর জন্য তায়াম্মুমের বস্তু তার কাছে রাখবে বা জোগাড় করে নিবে।

অযুর পানি বা তায়াম্মুমের কোনো বস্তুর খোজ পাওয়া সত্ত্বেও সে সময়ে সালাত আদায় না করে গন্তব্যে পৌঁছে সালাত আদায় করলে গুনাহগার হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 68 views
0 votes
1 answer 52 views
...