আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
114 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমি জেনেরাল লাইনে পড়ুয়া একজন ছেলে। দ্বীনের বুঝ আসার পর থেকে ফ্রি মিক্সিং সহ সকল হারাম পরিত্যাগ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি,,তারপরেও পরিপূর্ণ চোখের হিফাজত করতে সক্ষম হয়ে উঠতে পারিনা,,এর ফলে মাঝে মাঝে নিজের ঈমান দূর্বল হয়ে যায় আমি টের পাই।। উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো রেসাল্ট করার পর বাবা মা চায় পাবলিক ভার্সিটিতে পড়ি,,,পাবলিক ট্যাগ তাদের দরকার এমন একটা মনোভাব,,কিন্তু আমি কলেজ লাইফের মতো আবার এই ফ্রি মিক্সিংয়ে গিয়ে নিজের ঈমান আমলের রিস্ক নিতে চাচ্ছি না। ফরজ ইলম টুকুও জানি না এখনো ঠিক মতো,জেনেরালের পড়ার চাপে ইচ্ছা থাকলেও পড়া হয়না ফরজ ইলম।।
এমতাবস্থায় আমি বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাই যেখানে ছেলে মেয়ে আলাদা ক্যাম্পাস,,সহশিক্ষা নেই,,,ফ্রি মিক্সিং মুক্ত পরিবেশ,,ইসলামি নিয়মে চলে সবকিছু,,এইচসি রেসাল্ট অনেক ভালো তাই আমি ৯০% স্কলারশিপ পেয়েছি।।তাই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হয়েও নামমাত্র খরচে আমার অনার্স,মাস্টার্স করার সুযোগ,,,কিন্তু পরিবার মানতেছে না,,,তারা পাবলিক ট্যাগ চায়,,পাবলিকে না পড়লে ভবিষ্যতে কিছু করি খাওয়া যায় না ইত্যাদি,, আমি যদি শেষ পর্যন্ত আমার সিদ্ধান্ত তে অটল থাকি তাহলে বাবা মা রাজি হবেন,, কিন্তু তারা কষ্ট পাবেন,,,এতে কি আমার গুনাহ হবে?? আমাকে তারা চাইলেই ফিতনা মুক্ত পরিবেশে পড়ালেখা করার সুযোগ দিতে পারেন কিন্তু দিচ্ছেন না,,তারা বলেন যে কিছু হবে না ভার্সিটিতে গেলে,,,অথচ আমার চেনা জানা প্রায় সবাই ভার্সিটিতে গিয়ে নিজের ঈমান বিক্রি করে দিচ্ছে। এখন আমার করনীয় কি??
উল্লেখ্য,সহশিক্ষায় আমার পড়াশুনায় অনেক ক্ষতি হয়,,চোখের প্রচুর খিয়ানত হয়। এখন আমার করনীয় কি?
জাযাকাল্লাহ খাইরান

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১;
,
সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নিশ্চিত গুনাহ থেকে বাঁচতে,নিজের ঈমান আমল টিকিয়ে রাখার নিয়তে এমতাবস্থায় আপনি যদি মা বাবার অমতে বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান,সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা।

★তবে এক্ষেত্রে মা বাবার কথা মতে "পাবলিক ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে শুধুমাত্র পরীক্ষা দেয়ার সময় ভার্সিটিতে যাওয়া" এমন সুযোগ থাকলে উপরে উল্লেখিত শর্তাবলি পুরোপুরি ভাবে মেনে পাবলিক ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে শুধুমাত্র পরীক্ষা দেয়ার সময় ভার্সিটিতে যেতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...