আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
246 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)

আসসালামু আলাইকুম, 

টপিক

হিসাব অনুযায়ী আমার মে মাসের ১২ তারিখ হায়েজ হওয়ার কথা।এটা আমি একটা পিরিয়ড ট্রেকার এপের মাধ্যমে হিসাব রাখি।তবে সব সময় যে সময়মতো হয় তা না।২/৩ দিন আগে পিছে হয়,তবে বেশিরভাগই দেরি করে হয়। 

১১ তারিখ রাতে আনুমানিক ১১.৪৫ এর দিকে আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে মিলিত হই।এর কিছুক্ষণ আগেই আমি ভালো করে চেক করে নিয়েছি,পিরিয়ড শুরু হয় নি তখন।উল্লেখ্য যে আমাদের প্রায় ৩ মাস পর একত্রিত হবার সুযোগ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।তো সহবাসের পর টিসু দিয়ে চেক করে দেখি হাল্কা রক্ত।এটা কি হায়েজের রক্ত ছিল নাকি অনেকদিন পর মিলিত হওয়ায় আমি বুঝতে পারছি না।আমি আগে ভালো করেই চেক করে নিয়েছিলাম,তাকেও দেখিয়েছি।সাদাস্রাব স্পষ্ট ছিল।কিন্তু মিলনের পর হাল্কা লাল দেখতে পাই।

প্রশ্ন : আমাদের কি কবিরা গুনাহ হয়েছে? তওবা করাই যথেষ্ট নাকি কাফফারা দিতে হবে?এক জায়গায় দেখলাম এক দিনার সাদাকাহ করার কথা,আমাদের তো সামর্থ্য নেই এত দেওয়ার। 

টপিক : হায়েজ হয়েছে ধরে নিয়ে আমি সলাত বাদ দেই পুরো এক দিন(১২ তারিখ)।কিন্তু আর কোনো রক্ত দেখতে পাই নি।বারবার চেক করেছি সাদাই দেখেছি প্রতিবার।তাই ১৩ তারিখ ফজরের নামাজ পড়ি।এরপর এক বোনের সাথে কথা বললে, সে বলে: একদিন হয়ে থেমে গেলেও হায়েজ।তাই যোহর থেকে সালাত পড়া বাদ দেই।যদিও মিলনের ব্যাপারটি লজ্জার জন্য আমি শেয়ার করি নি তার সাথে।এরপর ১৩ তারিখ যোহর থেকে এখন অবধি সালাত বন্ধ।পিরিয়ড হবার যত লক্ষণ(পেট ব্যাথাসহ অন্যান্য) সবই আমার মধ্যে বিদ্যমান কিন্তু আমি কোনো রক্ত দেখি নি ওই মুহুর্তের পরে।এখনও না।

প্রশ্ন : আমি কি রক্ত দেখার আগ অবধি সালাত শুরু করবো? কাজা হয়ে যাওয়া সালাত কি করবো
প্রশ্ন : আমার শাওয়ালের ৪ রোজা হয়েছে,আলহামদুলিল্লাহ।কিন্তু রমাদানের একটা কাজা হয়েছে।পিরিয়ড না হলে আমি কি আগামীকাল থেকে রোজা শুরু করতে পারবো?যদি শাওয়াল শেষ হয়ে যায় হায়েজের কারণে,তখন কি হবে?


টপিক ৩

আজকে সকালে আমি একটা ইন্ডিয়ান ডেইরি মিল্ক চকলেট খাই।এক বোন থেকে জানতে পারি,সেখানকার ই-কোড নাকি শুকরের চর্বি থাকতে পারে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।নেট ঘেটে একটা লেখায় এমন কিছু দেখতে পেয়ে।আমি সাথে সাথে বমি করি গলায় আঙ্গুল দিয়ে।এরপরেও বের না হওয়ায় বেশি করে পানি খেয়ে আবার বমি করি।যতটা সম্ভব আমার পক্ষে আমি বের করার চেষ্টা করেছি।এরপর আবার অন্য আরেক লেখায় দেখি আমাদের মতো মুসলিম দেশগুলোর জন্য আলাদাভাবে বানানো হয়,হালাল উপাদান দিয়ে।আরও একটা লেখায় দেখি emulsifiers (E442, E476) এগুলো শুধু শুকরের চর্বিই না সয়াবিন,গরুর চর্বি সহ অন্যান্য উদ্ভিজ তেল থেকেও বানানো হয়ে থাকে।ডেইরি মিল্কে যে শুকর থেকেই বানিয়েছে এটা নিশ্চিত না,আবার ইন্ডিয়ান প্রোডাক্ট বলে একেবারে সন্দেহের তালিকার বাইরেও রাখা যাচ্ছে না।

প্রশ্ন : আমি তো সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি।আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাকে হারাম খাওয়াবেন না,ইং শা আল্লাহ।মানসিকভাবে খুবই ভেঙ্গে পড়েছি।এখনও গ্লাস নিয়ে শুয়ে আছি,বমি করার চেষ্টা করছি।যদিও বমি ৮/৯ বার অলরেডি করেছি।আমার আর কি করা উচিত?  

প্রশ্ন : আমি বাইরের খাবার খুব পছন্দ করি।আবার হোস্টেলে থাকি বিধায় সব সময় রান্না করেও খাওয়ার সুযোগ হয় না।প্রায়ই হোটেল, রেস্টুরেন্ট থেকে খেতে হয়।হোটেলের রান্না করা মুরগি,রেস্টুরেন্টের খাবারে ব্যবহার করা সস,সসেজ,মুরগি,অন্যান্য উপাদান যেগুলোতে ই-কোড আছে।
()এগুলোর ব্যাপারে কেমন অবস্থান নেওয়া উচিত?
()বাইরে খাওয়া কি একেবারেই বাদ দিয়ে দিতে হবে?
()প্যাকেটজাত অনেক খাবারে,রান্নার কাঁচামালে ই-কোড দেখা যায়।এখন কি করবো?


প্রশ্ন : অতীতে অসাবধানতা,অজ্ঞতাবশত যে সকল হারাম খাবার খেয়েছি সেগুলোর জন্য কি জাহান্নামের আজাব ভোগ করতে হবে?


প্রশ্ন :মারাত্নক বদনজর,ওয়াসওয়াসা, কালো যাদু , আশিক জিনের সমস্যা থাকায় প্রায়ই ফরজ নামাজে গাফলতি হয়ে যায়।অসুস্থতার জন্য এই গাফলতি কি আল্লাহ মাফ করবেন?যখন অসুস্থতার তীব্রতা কম থাকে তখন ইবাদত আমল মোটামুটি ভালোভাবেই করতে পারি,আলহামদুলিল্লাহ।যেমন উপরে হায়েজ নিয়ে সন্দেহের জন্য ২ দিন নামাজ মিস গেল।প্রতিবার হায়েজের আগে পরে বা যখন যাদুর চালান,জিনের উৎপাত বাড়ে তখন সব এলোমেলো হয়ে যায়।সকাল সন্ধ্যার আমলও করতে পারি না,সেল্ফ রুকইয়াহ করতেও কষ্ট হয়ে যায়।পরিবারের রক্তের সম্পর্কের আত্নীয়রাই এই কাজগুলো করে।আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের জন্য একটু খাস করে দু'আ করবেন উস্তায।

 

প্রচন্ড মানসিক কষ্টে আছি।আইওএমে মিড চলছে।পড়তে পারছি না।এখনও এক্সাম দেইনি শুধু তাজউইদের ভাইবা দিলাম আজ সকালে।সিহরের সমস্যা বাড়লে আমি মাদ্রাসার ক্লাসও করতে পারি না।এইভাবে অনেক ক্লাস গ্যাপ হয়ে গিয়েছে।

সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমাকে কিছু নাসীহাহ দিন উস্তায

 

নমাজের ব্যাপারে দ্রুত জানতে পারলে ভালো হতো এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি।অনেকগুলো লজ্জাজনক কথা সরাসরি বলে ফেললাম,আল্লাহ নিশ্চয়ই জানার ব্যাপারে লজ্জা পাওয়া পছন্দ করেন না,তাই না উস্তায? আমি অল্প কথায় গুছিয়ে লিখতে পারি না,আফওয়ান। দু'আ চাই 

جزاك الله خيراً في الدنيا و الآخرة

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
হায়েযের সর্বোচ্ছ সময়সীমা ১০দিন।এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে।(বেহেশতী জেওর-১/২০৬)তথা সাদা রং ব্যতীত সকলপ্রকার রং ই হায়েযের অন্তর্ভুক্ত।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/7474

(وَمِنْهَا) النِّصَابُ أَقَلُّ الْحَيْضِ ثَلَاثَةُ أَيَّامٍ وَثَلَاثُ لَيَالٍ فِي ظَاهِرِ الرِّوَايَةِ. هَكَذَا فِي التَّبْيِينِ وَأَكْثَرُهُ عَشَرَةُ أَيَّامٍ وَلَيَالِيهَا. كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ.
হায়েযের সর্বনিম্ন মেয়াদ ৩ দিন ৩ রাত। তিন দিনের কম রক্তস্রাব হলে সেটা হায়েয হিসেবে গণ্য হবে না। হায়েযের সর্বোচ্ছ মেয়াদ ১০ দিন১০ রাত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৬)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু আপনি সহবাসের পূর্বে চেক করে নিয়েছিলেন, এবং তখন কোনো রক্তস্রাব আপনি দেখেননি,এবং রক্তস্রাব হওয়ার পর সেটা একদিনের বেশী স্থায়ীও হয়নি, তাই এটা হায়েয নয় বরং ইস্তেহাযা।

আপনি যেই নামাযগুলো পড়েননি, সেগুলো কাযা করে নিবেন।যিনি একদিনের রক্তস্রাবকেও হায়েয বলেছেন, উনার কথা বিশুদ্ধ নয়।

(২)
আপনি রক্তস্রাব শুরুর পূর্ব পর্যন্ত নামায পড়তে থাকবেন।

(৩)
রমজানের কাযা রোযা যেকোনো সময় রাখতে পারবেন।আর সময়ের অভাবে শাওয়ালের ৬ টি রোযা রাখতে না পারলে,তাতে কোনো সমস্যা হবে না।আপনি পরিপূর্ণ সওয়াব পেয়ে যাবেন।

ইন্ডিয়ান ডেইরি মিল্ক চকোলেট সন্দেহের তালিকায়।তাই এগুলোকে এড়িয়ে চলবেন।

(৪)
আপনার এজন্য কোনো গোনাহ হবে না।আপনার নিয়ত ও হারাম থেকে বেচে থাকার মনোভাবের কারণে আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করবেন।

(৫)
এইসব খাবারকে সতর্কতামূলক পরিত্যাগ করে ফেলবেন।

(৬)
আল্লাহর কাছে তাওবাহ করে নিলে আর আজাব ভোগ করতে হবে না।

(৭)
সামর্থ্যানুযায়ী নামায পড়ার চেষ্টা করবের।তারপরও সম্ভব না হলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবেন।আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমাকারী।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...