আসসালামু আলাইকুম,
টপিক ১:
হিসাব অনুযায়ী আমার মে মাসের ১২ তারিখ হায়েজ হওয়ার কথা।এটা আমি একটা পিরিয়ড ট্রেকার এপের মাধ্যমে হিসাব রাখি।তবে সব সময় যে সময়মতো হয় তা না।২/৩ দিন আগে পিছে হয়,তবে বেশিরভাগই দেরি করে হয়।
১১ তারিখ রাতে আনুমানিক ১১.৪৫ এর দিকে আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে মিলিত হই।এর কিছুক্ষণ আগেই আমি ভালো করে চেক করে নিয়েছি,পিরিয়ড শুরু হয় নি তখন।উল্লেখ্য যে আমাদের প্রায় ৩ মাস পর একত্রিত হবার সুযোগ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।তো সহবাসের পর টিসু দিয়ে চেক করে দেখি হাল্কা রক্ত।এটা কি হায়েজের রক্ত ছিল নাকি অনেকদিন পর মিলিত হওয়ায় আমি বুঝতে পারছি না।আমি আগে ভালো করেই চেক করে নিয়েছিলাম,তাকেও দেখিয়েছি।সাদাস্রাব স্পষ্ট ছিল।কিন্তু মিলনের পর হাল্কা লাল দেখতে পাই।
প্রশ্ন ১: আমাদের কি কবিরা গুনাহ হয়েছে? তওবা করাই যথেষ্ট নাকি কাফফারা দিতে হবে?এক জায়গায় দেখলাম এক দিনার সাদাকাহ করার কথা,আমাদের তো সামর্থ্য নেই এত দেওয়ার।
টপিক ২: হায়েজ হয়েছে ধরে নিয়ে আমি সলাত বাদ দেই পুরো এক দিন(১২ তারিখ)।কিন্তু আর কোনো রক্ত দেখতে পাই নি।বারবার চেক করেছি সাদাই দেখেছি প্রতিবার।তাই ১৩ তারিখ ফজরের নামাজ পড়ি।এরপর এক বোনের সাথে কথা বললে, সে বলে: একদিন হয়ে থেমে গেলেও হায়েজ।তাই যোহর থেকে সালাত পড়া বাদ দেই।যদিও মিলনের ব্যাপারটি লজ্জার জন্য আমি শেয়ার করি নি তার সাথে।এরপর ১৩ তারিখ যোহর থেকে এখন অবধি সালাত বন্ধ।পিরিয়ড হবার যত লক্ষণ(পেট ব্যাথাসহ অন্যান্য) সবই আমার মধ্যে বিদ্যমান কিন্তু আমি কোনো রক্ত দেখি নি ওই মুহুর্তের পরে।এখনও না।
প্রশ্ন ২: আমি কি রক্ত দেখার আগ অবধি সালাত শুরু করবো? কাজা হয়ে যাওয়া সালাত কি করবো?
প্রশ্ন ৩: আমার শাওয়ালের ৪ রোজা হয়েছে,আলহামদুলিল্লাহ।কিন্তু রমাদানের একটা কাজা হয়েছে।পিরিয়ড না হলে আমি কি আগামীকাল থেকে রোজা শুরু করতে পারবো?যদি শাওয়াল শেষ হয়ে যায় হায়েজের কারণে,তখন কি হবে?
টপিক ৩:
আজকে সকালে আমি একটা ইন্ডিয়ান ডেইরি মিল্ক চকলেট খাই।এক বোন থেকে জানতে পারি,সেখানকার ই-কোড নাকি শুকরের চর্বি থাকতে পারে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।নেট ঘেটে একটা লেখায় এমন কিছু দেখতে পেয়ে।আমি সাথে সাথে বমি করি গলায় আঙ্গুল দিয়ে।এরপরেও বের না হওয়ায় বেশি করে পানি খেয়ে আবার বমি করি।যতটা সম্ভব আমার পক্ষে আমি বের করার চেষ্টা করেছি।এরপর আবার অন্য আরেক লেখায় দেখি আমাদের মতো মুসলিম দেশগুলোর জন্য আলাদাভাবে বানানো হয়,হালাল উপাদান দিয়ে।আরও একটা লেখায় দেখি emulsifiers (E442, E476) এগুলো শুধু শুকরের চর্বিই না সয়াবিন,গরুর চর্বি সহ অন্যান্য উদ্ভিজ তেল থেকেও বানানো হয়ে থাকে।ডেইরি মিল্কে যে শুকর থেকেই বানিয়েছে এটা নিশ্চিত না,আবার ইন্ডিয়ান প্রোডাক্ট বলে একেবারে সন্দেহের তালিকার বাইরেও রাখা যাচ্ছে না।
প্রশ্ন ৪: আমি তো সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি।আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাকে হারাম খাওয়াবেন না,ইং শা আল্লাহ।মানসিকভাবে খুবই ভেঙ্গে পড়েছি।এখনও গ্লাস নিয়ে শুয়ে আছি,বমি করার চেষ্টা করছি।যদিও বমি ৮/৯ বার অলরেডি করেছি।আমার আর কি করা উচিত?
প্রশ্ন ৫: আমি বাইরের খাবার খুব পছন্দ করি।আবার হোস্টেলে থাকি বিধায় সব সময় রান্না করেও খাওয়ার সুযোগ হয় না।প্রায়ই হোটেল, রেস্টুরেন্ট থেকে খেতে হয়।হোটেলের রান্না করা মুরগি,রেস্টুরেন্টের খাবারে ব্যবহার করা সস,সসেজ,মুরগি,অন্যান্য উপাদান যেগুলোতে ই-কোড আছে।
৫(ক)এগুলোর ব্যাপারে কেমন অবস্থান নেওয়া উচিত?
৫(খ)বাইরে খাওয়া কি একেবারেই বাদ দিয়ে দিতে হবে?
৫(গ)প্যাকেটজাত অনেক খাবারে,রান্নার কাঁচামালে ই-কোড দেখা যায়।এখন কি করবো?
প্রশ্ন ৬: অতীতে অসাবধানতা,অজ্ঞতাবশত যে সকল হারাম খাবার খেয়েছি সেগুলোর জন্য কি জাহান্নামের আজাব ভোগ করতে হবে?
প্রশ্ন ৭:মারাত্নক বদনজর,ওয়াসওয়াসা, কালো যাদু , আশিক জিনের সমস্যা থাকায় প্রায়ই ফরজ নামাজে গাফলতি হয়ে যায়।অসুস্থতার জন্য এই গাফলতি কি আল্লাহ মাফ করবেন?যখন অসুস্থতার তীব্রতা কম থাকে তখন ইবাদত আমল মোটামুটি ভালোভাবেই করতে পারি,আলহামদুলিল্লাহ।যেমন উপরে হায়েজ নিয়ে সন্দেহের জন্য ২ দিন নামাজ মিস গেল।প্রতিবার হায়েজের আগে পরে বা যখন যাদুর চালান,জিনের উৎপাত বাড়ে তখন সব এলোমেলো হয়ে যায়।সকাল সন্ধ্যার আমলও করতে পারি না,সেল্ফ রুকইয়াহ করতেও কষ্ট হয়ে যায়।পরিবারের রক্তের সম্পর্কের আত্নীয়রাই এই কাজগুলো করে।আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের জন্য একটু খাস করে দু'আ করবেন উস্তায।
প্রচন্ড মানসিক কষ্টে আছি।আইওএমে মিড চলছে।পড়তে পারছি না।এখনও এক্সাম দেইনি শুধু তাজউইদের ভাইবা দিলাম আজ সকালে।সিহরের সমস্যা বাড়লে আমি মাদ্রাসার ক্লাসও করতে পারি না।এইভাবে অনেক ক্লাস গ্যাপ হয়ে গিয়েছে।
সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমাকে কিছু নাসীহাহ দিন উস্তায।
নমাজের ব্যাপারে দ্রুত জানতে পারলে ভালো হতো এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি।অনেকগুলো লজ্জাজনক কথা সরাসরি বলে ফেললাম,আল্লাহ নিশ্চয়ই জানার ব্যাপারে লজ্জা পাওয়া পছন্দ করেন না,তাই না উস্তায? আমি অল্প কথায় গুছিয়ে লিখতে পারি না,আফওয়ান। দু'আ চাই
جزاك الله خيراً في الدنيا و الآخرة