আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
243 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

1/ আমার শ্বশুরের একটা মুদি দোকান আছে । মাঝে মাঝে আমার স্বামী বসেন দোকানে তখন আমার শশুর বাড়িতে থাকেন।ওইসময় এ দোকান থেকে আমার স্বামী সিগারেট বিক্রি করলে গুনাহ হবে কিনা?

2/ আমাদের বাসায় সাপ্লাই এর (সরকারি) পানি আসে মাসে বিল 100। এই পানি টা কি যত খুশি ব্যাবহার করতে পারবো? মানে দরকার আর চাইতে বেশি যেমন (আমার পা ধোয়ার জন্য লাগে 1 মগ পানি আমি সেখানে 3 মগ ঢেলে দিলাম , হাত ধোয়ার সময় অনবরত টেপ ছেড়ে রাখলাম) এসব কি গুনাহ কারণ হতে পারে? নাকি আমি বিল দেই বলে যত খুশি ফালাইতে পারবো?

3/ গোসলের সময় প্রথমে অজু করলাম না কিন্তু অযুর যেই অঙ্গ আছে সেসব গোসলের মধ্যেই ধোয়া হয়েছে। এই অবস্থায় অজু ভাঙ্গার কারণ একটাও না হলে কি গোসলের পর সালাত আদায় করতে পারবো?

4/ ফরয গোসলের সময় প্রথমে অজু করা কি বাধ্যতামূলক? অজু না করে গোসল কমপ্লিট করলাম এবং আমি সিউর যে আমার শরীরের সব জায়গায় পানি গিয়েছে এরপর গোসল শেষে সালাত আদায় করা যাবে?

5/ 4 রাকাত ফরজ/সুন্নত সালাতে 2 রাকাতের বৈঠক এর পর 3য় রাকাত পরে ভুলে যদি তাশাহুদের শুধু মাত্র 1 লাইন পড়ে ফেলি এর পর 4র্থ রাকাত পড়ে কি সাহু সেজদা দিতে হবে?

6/বেতর সালাতে ভুলে দুয়ায়ে কুনুত না পড়লে এবং বৈঠক এ গিয়ে মনে পড়লে সাহু সেজদা দিতে হবে? আর যদি সালাতের মধ্যে আর মনেই না পরে যে দুয়ায় কুনুত পড়িনি এবং সালাত শেষ করি তাহলে পরে কি আবার বেতর সালাত আদায় করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (589,260 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)আপনার স্বামীর জন্য দোকানে বসে সিগারেট বিক্রি করা নাজায়েয হচ্ছে না, হ্যা ধুমপান করা মাকরুহ। 

ককেননা সিগারেট বানানো বা সেল করা মূলত কোনো হারাম কাজ নয় বরং তা বৈধ কাজই।যদিও ধুমপান করা মাকরুহ।
ফাতাওয়া শামীতে বর্ণিত আছে,
ﻭﻟﻮ ﺁﺟﺮ ﻧﻔﺴﻪ ﻟﻴﻌﻤﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﻨﻴﺴﺔ ﻭﻳﻌﻤﺮﻫﺎ ﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﻪ ﻷﻧﻪ ﻻ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﻓﻲ ﻋﻴﻦ ﺍﻟﻌﻤﻞ
যদি কেউ কোনো গির্জায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে,অথবা টাকার বিনিময়ে গির্জা নির্মাণ করে দেয়, তাহলে এতে তার কোনো গুনাহ হবে না। কেননা এখানে মূল কাজে কোনো গুনাহ নাই।
(ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ٦\٣٩٢ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﻈﺮ ﻭﺍﻹﺑﺎﺣﺔ » ﻓﺼﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻴﻊ)
(রদ্দুল মুহতার,৬/৩৯২)
وصح بيع غير الخمر و مفاده صحة بيع الحشيشة الخ
মদ ব্যতীত অন্যান্য নেশদ্রব্য বিক্রি করা বৈধ,সারমর্ম হলঃহাশীশ(একপ্রকার তামাক দ্রব্য) বিক্রিও বৈধ।(রদ্দুল মুহতার,৬/৪৫৪)

ফাতাওয়ায়ে উসমানী, ৩/৮৯,তে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
তানক্বিহু ফাতাওয়াল হামিদিয়্যাহ,৬/৩৬৬।
মাজ্বমুআতুল ফাতাওয়া,২/২৭।
ফাতাওয়া রশিদিয়্যাহ, ৪৮৮।
ক্বিফায়াতুল মুফতী, ৯/১৪৮।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/10970

(২)
আপনি পানির মাসিক বিল দিলেও প্রয়োজন অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে পারবেন না।প্রয়োজন অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করা আপনার জন্য জায়েয হবে না।কেননা সম্পদের অপচয় তো হারাম।আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَلَا تُبَذِّرْ تَبْذِيْرًا، إِنَّ الْـمُبَذِّرِيْنَ كَانُوْا إِخْوَانَ الشَّيَاطِيْنِ، وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُوْرًا»
‘‘কিছুতেই সম্পদের অপব্যয় করো না। কারণ, অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। আর শয়তান হচ্ছে তার প্রভুর অত্যন্ত অকৃতজ্ঞ’’।(ইস্রা/বানী ইস্রাঈল : ২৬-২৭)

আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেন:
«وَلَا تُسْرِفُوْا، إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْـمُسْرِفِيْنَ»
‘‘তবে তোমরা (পোশাক-পরিচ্ছদ ও পানাহারে) অপচয় ও অপব্যয় করো না। কারণ, আল্লাহ্ তা‘আলা অপচয়কারীদেরকে কখনো পছন্দ করেন না’’।(আ’রাফ : ৩১)


(৩) গোসলের সময় প্রথমে অজু করলাম না কিন্তু অযুর যেই অঙ্গ আছে সেসব গোসলের মধ্যেই ধোয়া হয়েছে। এই অবস্থায় অজু ভাঙ্গার কারণ একটাও না হলে গোসলের পর সালাত আদায় করতে পারবেন।কেননা গোসলের দ্বারা পবিত্রতা অর্জন হয়ে যায়।

(৪)
ফরয গোসলের সময় প্রথমে অজু করা মুস্তাহাব, বাধ্যতামূলক নয়। অজু না করে গোসল কমপ্লিট করলে এবং গোসলের সমস্ত ফরয আদায় হয়েছে বলে নিশ্চিত হলে, গোসল শেষে সালাত আদায় করা যাবে।

(৫) ৪ রাকাত ফরজ/সুন্নত সালাতে ২য় রাকাতের বৈঠক এর পর ৩য় রাকাতে ভুলে যদি তাশাহুদের শুধু মাত্র ১ লাইন পড়ে ফেলা হয়, এর পর ৪র্থ রাকাত শেষে সাহু সেজদা দিতে হবে।

(৬)
বেতর সালাতে ভুলে দুয়ায়ে কুনুত না পড়লে এবং বৈঠক এ গিয়ে মনে পড়লে সাহু সেজদা দিতে হবে।
আর যদি সালাতের মধ্যে আর মনেই না পরে যে দুয়ায়ো কুনুত পড়া হয়নি এবং সালাত শেষ করা হয়, তাহলে ওয়াক্তের ভিতর স্বরণ হলে নামাযকে দোহড়াতে হবে। নতুবা ঐ নামাযকে আর দোহড়াতে হবে না।শুধুমাত্র ইস্তেগফারই যথেষ্ট হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,260 points)
 সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...