আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
104 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (27 points)
আসসালামু আলাইকুম আমার কয়েকটি প্রশ্ন ছিল এর উত্তর দিলে উপকৃত হব।

১.পরনারীর দিকে দৃষ্টিপাত কি কবিরা গুনাহ নাকি সগীরা গুণাহ?

২.সগীরা গুণাহকে তুচ্ছ মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে সগীরাহ গুণাহ করলে তা কবিরা গুনাহ হয়ে যায়। কিন্তু কোন ব্যাক্তি এরুপ করার পর ভুল বুঝতে পেরে সগীরা গুণাহ কে ভয়ংকর মনে করে ও সগীরা গুণাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে তাহলে কবিরা গুনাহে পরিণত হওয়া সংগীতা গুণাহ গুলো কি সগীরা গুণাহ হয়ে যাবে?

৩.কোন মাসায়েল বিষয়ে দ্বীমত থাকলে নিজ সুবিধানুযায়ী হক্বানি আলেমদের মত অনুসরণ করা যাবে?

৪.আমরা জানি ছেলে মেয়ে একসাথে পড়াশুনা নাজায়েজ। কিন্তু আমাদের কোচিংয়ে ছেলে মেয়েরা আলাদা সারির বেঞ্চে বসে অর্থাৎ ছেলেরা একপাশের বেঞ্চে আলাদা বসে ও মেয়েরা একপাশের বেঞ্চে আলাদা বসে ছেলেমেয়ে এক বেঞ্চে বসে ও মাঝখানে পর্দার মত কোন দেয়াল নেই এমতাবস্থায় এই কোচিংয়ে পড়া জায়েয হবে?

৫.শুধুমাত্র পড়া বোঝানোর উদ্দেশ্যে মেয়েদের দিকে দৃষ্টিপাত করা জায়েজ?

৬.পরিপূর্ণ পর্দা সহ(চোখ সহ ঢাকা বা চোখ খোলা) কোন মেয়ের দিকে শাহওয়াতবীহীন দৃষ্টি পাত জায়েয?

৭.বেগানা নারীর সকল অঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করা নাজায়েজ?

৮.ইভটিজিং প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে যদি বখাটেদের উপর আক্রমণ করি তা কি জায়েয হবে?(যদি পুলিশের সাহায্য নেওয়া সম্ভব না হয়)

৯.মহাখালি,ঢাকায় কোন দারুল ইফতা আছে?

১০.কেউ যদি দুষ্টুমি করে হিন্দুদের মন্ত্র উচ্চারণ করে তাহলে কি কবিরা গুনাহ/সগীরা গুণাহ/কুফর হবে?

১১. কাফের ও মুশরিকদের মাঝে পার্থক্য কি?

১২.গুটি দিয়ে খেলা ও ইনডোর(হেড টেল,দশ-বিশ) গেমস কি জায়েয?

১৩.বন্ধুকে দুষ্টুমি করে আব্বে সা*লা (গালি হিসেবে নয়) বলা যাবে?

১৪.কোন গালিকে বৈধ ভাষা হিসেবে ব্যাবহার করা যাবে?

১৫.আমরা জানি মুখ ঢাকা ফরজ কিন্তু (আবু দাউদ ৪১০৪) এ বলা আছে যে,হাত ও মুখ খোলা রাখা জায়েয।তবে আল হাদিস এন্ডয়েড এপ এ দেখেছি এর সনদ মুনকাতি যদিও আবার মান সহীহ দেওয়া আছে।এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাই।

১৬.হারাম-হালাল, জায়েয -নাজায়েজ ও মাকরুহে তাহরীমির মধ্যে পার্থক্য কি ?

জাযাকাল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো কোন পর নারীর দিকে দৃষ্টিপাত করা, ছগীরা গুনাহ। 
,
তবে কোন ছোট গুনাহকে যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বারবার করে বা তুচ্ছ মনে করে করে তখন তা আর ছোট থাকে না বরং তা বড় গুনাহে পরিণত হয়।

আরো জানুনঃ 
,
তাই কোনো গায়রে মাহরাম মহিলার দিকে নজর দিয়ে অন্তরে খারাপ চিন্তা ভাবনা নিয়ে আসা,ইত্যাদি কবীরাহ গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। 
তার জন্য অবশ্যই তওবা করতে হবে। 
,  
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّ السَّمْعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا.
...নিশ্চয় কান, চোখ, হৃদয় এর প্রতিটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৩৬

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

আলী রা.-কে নবীজী বলেছেন,
يَا عَلِيُّ لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ، فَإِنَّ لَكَ الأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الآخِرَةُ.
হে আলী! (হঠাৎ) দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর আবার দ্বিতীয়বার তাকিয়ো না। কারণ, (হঠাৎ অনিচ্ছাকৃত পড়ে যাওয়া) প্রথম দৃষ্টি তোমাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে না। জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭৭৭

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
,
(০২)
না,তাহা কবীরা গুনাহই থাকবে।
এর জন্য তওবা আবশ্যক। 

(০৩)
নিজ মাযহাবের বিজ্ঞ মুফতী সাহেবের মত মানতে হবে।
একাধিক মত পাওয়া গেলে স্পষ্ট দলিল যেই মতের পক্ষে থাকবে,সেই মত মানবেন।

(০৪)
এটা সহ শিক্ষা।
ফিতনার আশংকা না থাকলে শর্ত সাপেক্ষে এভাবে কোচিং-এ লেখাপড়ার করার অনুমতি উলামায়ে কেরামগন দিয়েছেন।

(০৫)
জায়েজ নেই।

(০৬)
ইচ্ছাকৃতভাবে জায়েজ নেই।

(০৭)
হ্যাঁ, নাজায়েজ।

(০৮)
অন্যায় প্রতিরোধ হিসেবে এটি জায়েজ হবে।
তবে আইনি সহায়তা নেয়ারই পরামর্শ থাকবে। 
কেননা নিজে আক্রমণ করলে এখানে জুলুম হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

(০৯)
স্থানীয় কোনো বড় মসজিদের ইমাম সাহেব থেকে জেনে নেওয়ার পরামর্শ রইলো। 

(১০)
কবিরা গুনাহ হবে।

(১১)
মুশরিকরা অবশ্যই কাফের, তবে কাফের মানেই সে মুশরিক নয়।

যারা মুহাম্মাদ সাঃ কে শেষ নবী হিসেবে মানে না তারাই হলো কাফের সম্প্রদায়।

যারা আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করে,তারা মুশরিক।

যেমন ইয়াহূদীরা উযাইর আ. যেসব খৃষ্টানরা ঈসা আ. কে আল্লাহর পুত্র মনে করে তারা আবার মুশরিক(আল্লাহর অস্তিত্বে অংশ স্থাপনকারী)… …


(১২)
জায়েজ নেই।

(১৩)
কোনো এলাকায় এটি গালি না হলে বন্ধু এতে কষ্ট না পেলে বলা যাবে।

(১৪)
যদি এর অর্থ মন্দ না হয়।
আর সেই সমাজে যদি তাহাকে কেউ গালি মনে না করে,তাহলে সেটি বৈধ ভাষা হিসেবে ব্যাবহার করা যাবে।

(১৫)
এই মাসয়ালা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ- 

(১৬)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...