আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
227 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (10 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর।
কিছু মনে করবেন না।আমি আগেই ক্ষ্মা চাচ্ছি। একবার এখানে প্রশ্ন করা হইছিল বউ জদি ছাইড়া দিতে বলে হাসবেন্ড যদি বলে তুমি ডিভোর্স দিয়া দিও। আপনি এর উত্তর দিয়েছিলেন যে আজিবনের জন্য অধিকার দেওয়া বুজাবে। সেই থেকে ২ মাস আমি এই বিষয় নিয়া চিন্তা করসি কতটা মানুষিক কস্ট হইছে একটা ভুল মাসালা দেওয়ার কারনে।হয়ত আপনার অজান্তে এটা হইছে।তাই দয়া করে এইবার একটু সঠিক মাসালা দিয়ে সাহায্যে করবেন।
১।বউ ছাইড়া দেওয়ার কথা বলাই হাসবেন্ড যদি বলে তুমার ভাল না লাগলে তুমি ছাইড়া দিও বা মন চাইলে বা ইচ্ছে হইলে তুমি ছাইড়া দিও।ভাল না লাগলে থাইক না।তুমার জা মন চাই তাই কর গা তুমার বিষয় তুমার হাতে।অনেক বার প্রশ্ন করা হইছে ইমদাদুল হুজুর অনেক বার বলছে সাময়িক অধিকার দেওয়া বুজাবে আর জদি এরকম নিয়ত থাকে যে অধিকার দিলাম ভবিষ্যতে দিতে পারবে তাইলে মজলিসের বাইরেও দিতে পারবে।আর অধিকার দেওয়ার নিয়তে না বললে ভবিষ্যৎ বুজাইলেও সাময়িক অধিকার দেওয়ায় বুজাবে যেহেতু এখানে সময় উল্লেখ নাই।এসব কথা ত মজলিসের মধ্যেও বুজাই যেমন তুমার ভালো না লাগলে বা ইচ্ছে হইলে তুমি ছাইড়া দিও। বউ যখন ছাইড়া দিতে বলছে মজলিসের ভিতর  ভাল না লাগলে বা মন চাইলে দিতে পারব।। এটাও ত বুজাই।হাসবেন্ড ত যখন মন চাবে তখন দিতে পারবে এমন টা বুজাই নাই।আর যখন শব্দ বলে নাই।হাসবেন্ড ত অধিকার দেওয়ার মাসালাই জানে না।সে জানে আমিও দিব না।সেও দিবে না এগুলা তার পাস কাটানো কথা ছিল।। আমি বুজাতে পারছি কিনা জানি না।আপনি একটু ভালো করে পরে বলেন।একি বিষয় এর মাসালা ২ রকম হওয়ার কারণ কি।আপনি বলছেন যে মজলিসের বাইরে অধিকার দেওয়া বুজাবে।আর ইমদাদুল হুজুর অনেক বার বলসে সাময়িক অধিকার দেওয়া বুজাবে তবে যদি অধিকার দিলাম ভবিষ্যতে দিতে পারবে এমন নিয়ত এ বলে তাইলে মজলিসের বাইরেও দিতে পারবে। আর অধিকার দেওয়ার নিয়ত ছাড়া ভবিষ্যৎ বুজাইলেও সাময়িক অধিকার ই বুজাবে যেহেতু সময় উল্লেখ নাই।মাসালা ২ রকম হওয়ার কারনে আমি কোনটা অনুসরণ করর বুজতেছি না।যেহেতু আপনারা ২ জনেই অনেক বিজ্ঞ।সহিহ মাসালা দিয়ে থাকেন।আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দিন।
২।বউ যদি বলে ছাইড়া দেও তখন হাসবেন্ড যদি তুমার জা মন চাই তাই কর গা বা কইর((তুমার বিষয় তুমার হাতে এটা বুজাইছে কিন্ত সরাসরি বলে নাই),মুক্তি দেও মুক্তি দিলাম।ছাইড়া দেও জাও গা।এসব হাসবেন্ড তালাকের নিয়ত ছাড়া বললে নাকি কাজায়ান তালাক হই দিয়ানাতান তালাক হই না।৩ এর অধিক কাযায়ান তালাক হইলে দিয়ানাতান না হইলে সংসার করা জাই। এভাবে সংসার করলে কি জেনার গুনাহ হবে।??চিন্তা ছাড়া আল্লাহর উপর ভরসা করে কি সংসার করা যাবে।

৩।উক্ত অবস্থায় বউ যখন ছাইড়া দেওয়ার কথা বলছে তখন তার উদ্দেশ্য ছিল হাসবেন্ড ছাইড়া দিতে রাজি হই কিনা বা কি বলে তা শুনা।যে তুমাকে ছারব বা ছারব না।আর জানি ডিভোর্স দিয়া দেয়।কিন্তু বউ জান্ত কাগজ কলম ছাড়া ডিভোর্স দেওয়া জাই না। শুধু মুখে বললে ডিভোর্স হয় না।তাই যখন বলছে সাথে সাথে ত দেওয়া সম্ভব না কাজেই তা ভবিষ্যৎ বুজাইছে। উত্তর দেওয়া হইছিল এতে কেনায়া বাক্য বললে তালাক হবে না।তাহলে কি উক্ত ক্ষেত্রে  কাজায়ান দিয়ানাতান কোন টাই হবে না?
৪। ১ নং অনুযায়ী অধিকার দেওয়ার মত কথা যখন বলছে তার মধ্যে কতবার সাময়িক অধিকার আর কত বার স্থায়ী অধিকার ছিল তা মনে নাই।একের অধিক বার স্থায়ী অধিকার দেওয়ার মত  বলছে বলে মনে হইলে কত বার ধইরা নিব?
৫।মাসালা নেওয়ার সময় তালাক শব্দ লেখার সময় যদি নিজের দিকে ইংগিত করে তাইলে কি তালাক পতিত হবে। তালাক নেওয়া উদ্দেশ্য না।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
https://ifatwa.info/36539/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে। 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
https://ifatwa.info/67418/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
তাফবীযে তালাকের সাথে কোনো শর্ত বা সময় উল্লেখ না থাকলে সেই তাফবীয বা তালাকের অধিকারটি মজলিসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

সুতরাং স্বামীর কথা
"তুমার ভাল না লাগলে তুমি ছাইড়া দিও বা মন চাইলে বা ইচ্ছে হইলে তুমি ছাইড়া দিও।ভাল না লাগলে থাইক না"।

এদ্বারা মজলিসের মধ্যে তালাকের অধিকার সীমাবদ্ধ থাকবে।

وفی الدر المختار مع رد المحتار:

"قال لها أنت طالق إن شئت فقالت شئت إن شئت أنت، فقال: شئت ينوي الطلاق أو قالت شئت إن كان كذا لمعدوم) أي لم يوجد بعد كإن شاء أبي أو إن جاء الليل وهي في النهار (بطل) الأمر لفقد الشرط..(وإن قالت شئت إن كان الأمر قد مضى) أراد بالماضي المحقق وجوده كإن كان أبي في الدار وهو فيها، أو إن كان هذا ليلا وهي فيه مثلا (طلقت) لأنه تنجيز (قال لها أنت طالق متى شئت أو متى ما شئت أو إذا شئت أو إذا ما شئت فردت الأمر لا يرتد ولا يتقيد بالمجلس ولا تطلق) نفسها".
(ج:٣,ص:٣٦,ط: دار الفكر)
সারমর্ম:-
যদি স্বামী বলে যে তুমি তালাক যখন যখন চাইবে অর্থাৎ যখন তুমি চাইবে তখন তালাক,,,,তারপর বিষয়টি ফিরিয়ে নিতে চাইলে ফিরিয়ে নেয়া যাবেনা।
এবং মজলিসের সহিত সীমাবদ্ধ থাকবেনা। 

إذَا قَالَ لِامْرَأَتِهِ اخْتَارِي يَنْوِي بِذَلِكَ الطَّلَاقَ أَوْ قَالَ لَهَا طَلِّقِي نَفْسَك فَلَهَا أَنْ تُطَلِّقَ نَفْسَهَا مَا دَامَتْ فِي مَجْلِسِهَا ذَلِكَ وَإِنْ تَطَاوَلَ يَوْمًا أَوْ أَكْثَرَ مَا لَمْ تَقُمْ مِنْهُ أَوْ تَأْخُذَ فِي عَمَلٍ آخَرَ وَكَذَا إذَا قَامَ هُوَ مِنْ الْمَجْلِسِ فَالْأَمْرُ فِي يَدِهَا مَا دَامَتْ فِي مَجْلِسِهَا وَلَيْسَ لِلزَّوْجِ أَنْ يَرْجِعَ فِي ذَلِكَ وَلَا يَنْهَاهَا عَمَّا جَعَلَ إلَيْهَا وَلَا يَفْسَخُ كَذَا فِي الْجَوْهَرَةِ النَّيِّرَةِ. 

যদি স্বামী তার স্ত্রীকে বলে, তুমি নিজের রাস্তা নিজে গ্রহণ করো, এবং এদ্বারা স্বামী তালাকের নিয়ত করে থাকে, অথবা স্বামী তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তোমার নিজেকে তালাক দাও, তাহলে স্ত্রী ঐ মজলিসে যতক্ষণ থাকবে, ততক্ষণ নিজেকে তালাক দিতে পারবে।যতক্ষণ এই মজলিস থেকে না উঠবে বা অন্য কোনো কাজে মনোনিবেশ করবে, ততক্ষণ তালাকের অধিকার থাকবে,যদি মজলিসে একাধিক দিনও বসা থাকে,তাহলেও তার তালাকের অধিকার অবশিষ্ট থাকবে। স্বামী মজলিস থেকে উঠে গেলেও স্ত্রী যদি মজলিসে বসা থাকে,তাহলেও তার অধিকার বাকী থাকবে, স্বামী সে তার অধিকার প্রদানকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারবে না এবং স্ত্রীকে তালাক প্রদাণের ক্ষেত্রে বাধাও দিতে পারবে না, এমনকি সেই অধিকারকে ভঙ্গও করতে পারবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৮৭)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে 
"তোমার যা মন চাই তাই কর গা তোমার বিষয় তোমার হাতে"
এটি কেনায়া বাক্য,স্বামীর এক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত না থাকলে তালাক হবেনা।

(২.৩)
প্রশ্নের বিবরন মতে স্বামীর তালাকের নিয়ত না থাকায় তালাক হবেনা।

(০৪)
এক বার যদি স্থায়ী অধিকার দেওয়ার মত বাক্য বলে,সেক্ষেত্রে তালাক প্রদান না করলে আজীবনের জন্য এটি বহাল থাকবে।

(০৫)
প্রশ্নের বিবরন মতে তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...