আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
270 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (65 points)
edited by
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

https://ifatwa.info/63809/

এই ফতোয়াতে

১, ২য় প্রশ্নে বলেছেন স্ত্রী তালাকের হকদার হবে।এক্ষেত্রে তালাকের হকদার কতক্ষণের জন্য হবে? যদি দীর্ঘসময় পড়ে স্ত্রী তালাক নিয়ে নেয় ততক্ষনে কথার প্রসংগ পালটে গেছে অথবা পাল্টায়নি? অথবা বলে ভেবে চিনতে পরে জানাব,তখন?

২, ২য় প্রশ্নে স্ত্রী যদি বলে 'আমি তাহলে চলে যাচ্ছি' এই কথাই কি স্ত্রীর তালাক নেয়ার জন্য যথেষ্ট হবে?

৩, ১ম প্রশ্নের তালাকের মজলিস সংক্রান্ত ভালভাবে বুঝিনি আপনাদের উক্ত লিংকেও।

ধরুন তালাকের মজলিসে ৩য় পক্ষ বা স্ত্রী নিজেই তালাক চায় আমি শুধু বললাম 'যা খুশি করো' তালাকের নিয়তে কিন্তু সেক্ষেত্রে স্ত্রী তালাক নিলোনা তাহলে কি তালাক হবেনা,তাইত? আর যদি নিয়ত ছাড়াও বলি তার পরেও অনুমতি দেয়া হবে যেহেতু তালাকের মজলিসে বলতেছি।তাইত?

৪, স্ত্রী অবাধ্য,এজন্য যদি বলি 'এক্টা কথাও শুনোনা,যা মন চায় করো বাধা দিবনা' উক্ত কথা এমনি ঝগড়াতে বলেছে, কোনো তালাকের মজলিসে নয়।সেক্ষেত্রে যদি নিয়ত হয় 'তালাকের/অথবা যা খুশি করুক তালাক নিলে নিক বাধা দিবনা' তাহলে কি অনুমতি দেয়া হবে? দুঃখিত প্রশ্নটা আবার করায়,বুঝতে একটু সমস্যা হচ্ছে।আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।

৫, স্বামী যদি স্ত্রীকে বকা দেয়,স্ত্রী মন খারাপ করে কোনো কাজ করতে পারেনা,পড়াশুনাও করেনা।বসে থাকে মন খারাপ করে।ত এজন্য স্বামী স্ত্রীকে বলেছে, 'আমি বকা দেই আর যাই করি,মরে যাই,বা তালাক দিতে চাই,নিজের কথা ঠিকঠাক করবি। আমাকে পাত্তা দেয়াত দরকার নাই/আমার জন্য তুর কাজ নষ্ট করার দরকার নাই।' এক্ষেত্রে আসলে স্ত্রীকে মোটিভেট করার উদ্দেশ্য ছিল প্রাথমিক ভাবে।কিন্তু যেহেতু তালাকের নিয়ত ওয়াসোয়াসার কারণে মনে ঘোরাফোরা করে তাই উক্ত কথা বলার সঅময় ভয় লাগে  যখন এসব তালাকের চিন্তা বা নিয়ত আসে যে আসলে এই নিয়তে বলে ফেলছি /তালাকের অনুমতি দিয়ে ফেলছি কিনা যে 'আমি যদি রাগ করে তালাক ও দিতে চাই যদি তোর কাজ ফেলে আমার কথা না শুনিস,তখনো আমার কথা না শুনে নিজের কাজ করবি'
এক্ষেত্রে কি সমস্যা হবে?

৬,আমার স্ত্রী তার নিজের বাসায় থাকাত সময় আব্বাম্মার কথা মাঝেমধ্যে অমান্য করে।তাই আমি বলেছি,যখন বাসায় থাকবে উনাদের কথামতচলবে যদিও কথা আমার বিপক্ষে যায়,বা আমাকে টাইম দিতে গিয়ে তাদের কথা শোনা/মানা না হয়। এখন যখন এই কথা বলছি আমার পূর্বের ন্যায় মাথায় আসে যে আমি হয়ত এই নিয়তে বলছি/অনুমতি দিচ্ছি 'আংকেল আন্টি যদি বলে স্বামীকে ছেড়ে দিতে তাহলে উনাদের কথা মানতে'।আমি জানিনা এই নিয়ত কিনা।এক্ষেত্রে সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (681,320 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীর যদি আজীবন স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেয়ার নিয়ত থাকে,সেক্ষেত্রে তালাক গ্রহনের আগ পর্যন্ত স্ত্রী তালাক গ্রহনের অধিকারী হিসেবে থাকবে।

এক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী সেই সময়ে তালাক গ্রহন করুক বা পরে অন্য কোনোদিন তালাক গ্রহন করুক,তালাক হয়ে যাবে।

★আর যদি স্বামীর এমন নিয়ত না থাকে,সেক্ষেত্রে স্ত্রী শুধু উক্ত মজলিসেই তালাক গ্রহন করতে পারবে।
মজলিস শেষ হলে আর তালাক গ্রহন করতে পারবেনা।

এক্ষেত্রে যদি দীর্ঘসময় পড়ে স্ত্রী তালাক নিয়ে নেয় ততক্ষনে কথার প্রসংগ পালটে গেছে,  কিন্তু মজলিস ঠিকই আছে। অর্থাৎ স্ত্রী সেখান হতে উঠে যায়নি।
তালাক নিবেনা,তাও বলেনি।
অথবা কথার প্রসঙ্গ পাল্টায়নি।
এক্ষেত্রে উক্ত মজলিসে থাকা অবস্থায় স্ত্রী তালাক গ্রহন করতে পারবে।

আর যদি বলে যে ভেবে চিনতে পরে জানাব,এক্ষেত্রে মজলিস শেষ হওয়ার পর তালাক নিতে পারবেনা।

(০২)
এই কথাই স্ত্রীর তালাক নেয়ার জন্য যথেষ্ট হবেনা।

আমি তালাক গ্রহন করলাম/নিজেকে নিজে তালাক দিলাম/নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান করিলাম বললে তালাক হবে।

(০৩)
৩য় পক্ষ বা স্ত্রী যদি নিজেই কোনো মজলিসে স্বামীর কাছে তালাক চায়,
আর স্বামী যদি বলে "যা খুশি করো"
,
তাহলে সরাসরি তালাক পতিত হয়ে যাবে।  স্বামীর তালাক প্রদানের নিয়ত থাকুক বা না থাকুক,সব ছুরতেই তালাক হয়ে যাবে।

স্ত্রী তালাকের অনুমতি পাবেনা।
,
(০৪)
সেক্ষেত্রে যদি নিয়ত হয় 'তালাকের,তাহলে এক তালাক হবে।

আর যদি তালাকের অধিকার প্রদানের নিয়ত থাকে,তাহলে স্ত্রী তালাকের অধিকার প্রাপ্ত হবে।

(০৫)
এক্ষেত্রে সমস্যা হবেনা।

(০৬)
এক্ষেত্রেও সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (6 points)
৩ নং টা কি কাযাহাতান নাকি দিয়ানাতান??
।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।
by (681,320 points)
বিষয়টি সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। 
কেউ কেউ এখানে কাযা'আতান এর কথা বলেছেন। তালাকের নিয়ত না থাকলে দিয়ানাতান তালাক হবেনা,বলেছেন।

তবে অনেক ইসলামী স্কলারগন এখানে মতলকান তালাকের কথা উল্লেখ করেছেন।

আর এই মতের উপর ভিত্তি করেই এখন বেশির ভাগ উলামায়ে কেরামগন মতলকান তালাকের উপর ফতোয়া প্রদান করে থাকেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...