আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
149 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (54 points)
১. আসসালামু আলাইকুম। আমি একটি ভিডিওতে দেখলাম যে মানুষ কি মৃত্যুর পর     দুনিয়াতে যা কিছু হয় সবকিছু দেখতে পায়। এর উত্তরে বলা হয়েছে যে। আল্লাহ  যাকে ইচ্ছা   যতটুকু জানায় ততটুকু সে বুজতে পারে।
এখন আমার প্রশ্ন হল- অমুসলিম দের খেত্রেও কি  একই। তারা দুনিয়াতে যা হয় তাদেরকে কি জানানো হয়। তারাতো জাহান্নামী।

২. এই প্রশ্ন  করার কারনে আমার ঈমানের কোন সমস্যা হবে কি?

1 Answer

0 votes
by (567,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
মৃত ব্যাক্তি চাই সে মুসলিম হোক,চাই সে কাফের হোক,সে দুনিয়ার কোনো কিছু দেখতে পায়না।

তবে তারা দুনিয়ার কারো কথা শুনতে পারে কিনা,এই বিষয়ে খোদ ছাহাবায়ে কেরামদের মাঝেই মতবিরোধ রয়েছে 

 

এই বিষয়ে পক্ষে বিপক্ষে উভয় দিকেই দলিল রয়েছে।

কেহ কেহ বলেছেন যে তারা শুনতে পারেনা,কেহ কেহ বলেন যে শুনতে পারে।

কেহ কেহ বলেন যে যখন কেহ তাদের কবরের পাশে গিয়ে সালাম দেয়,তখন তাদের সালামের জবাব দেওয়া জন্য তাদের রুহ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«ما من مسلم يمر بقبر أخيه كان يعرفه في الدنيا فَيُسَلم عليه، إلا رد الله عليه روحه، حتى يرد عليه السلام».

যখন কোনো মুসলিম ব্যক্তি দুনিয়াতে পরিচিত তার কোনো মৃত্যু ভাইয়ের কবরের পাশ দিয়ে গমন করে এবং তাকে সালাম দিলে তখন তার সালামের উত্তর দেওয়ার জন্য আল্লাহ তার রূহকে ফেরত দেন।”

 

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত উপরোক্ত হাদীসটি ইবন আব্দুল বার রহ. তার সনদে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। দেখুনআল-ইসতিযকার১/১৮৫আর-রূহ ফিল কালাম ‘আলা আরওয়াহিল আমওয়াতি ওয়াল আহইয়াই বিদ-দালায়িলি মিনাল কিতাব ওয়াস-সুন্নাহইবনুল কাইয়্যিম রহ. পৃষ্ঠা ৫।

 

হাদীসের এ কথা দ্বারা প্রমাণিত যেমৃত ব্যক্তি তাকে চিনতে পারেন এবং তার সালামের উত্তর দেন। কারণ তার রুহ তখন ইল্লিন বা সিজ্জিন থেকে ফিরত দেওয়া হয়। (বলা বাহুল্য যেসালামের উত্তর দেওয়ার জন্য দুনিয়ার শরীর থাকা আবশ্যক নয়। বরং আল্লাহ তায়ালা তার জন্য হয়তো অন্য কোনো শরীর দিয়ে দেন।  তাই এই শরীর পঁচে গলে গেলে কোন সমস্যা নেই)

 

 

যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর নবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিহতদের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘তোমরা তো সবাই ছিলে নেতৃস্থানীয় লোক। তোমরা আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করোনি অথচ অনেকেই আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে। তোমরা আমাকে নিঃসঙ্গ সহায়হীন অবস্থায় ফেলেছিলেঅথচ অনেকে আমাকে সাহয্য করেছে। তোমরা আমাকে বের করে দিয়েছিলেঅথচ অনেকে আমাকে আশ্রয় দিয়েছে।’ এরপর নবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিহতদের মৃত দেহ টেনে বদরের একটি কূয়োর বেতর ছুড়ে ফেলার নির্দেশ দিলেন।

 

হযরত আবু তালহা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যেনবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশে বদরের দিন কোরায়শদের ২৪ জন বড় বড় সর্দারের লাশ বদরের একটি নোংরা কূয়োয় নিক্ষেপ করা হয়। তখন নিয়ম ছিলো যেকোন কাওমের ওপর জয়ী হলে তিনদিন যুদ্ধক্ষেত্রে কাটানো হতো। বদরের মাঠে তিনদিন কাটানোর পর নবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সওয়ারীর পিঠে আসন সাঁটা হলো। এরপর তিনি পদব্রজে চললেনসাহাবারা তাঁকে অনুসরণ করলেন।হঠাৎ কূয়োর তীরে তিনি থমকে দাঁড়ালেন। এরপর তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে সম্বোধন করে  বলতে লাগলেন, ‘হে অমুকের পুত্র অমুকহে অমুকের পুত্র অমুকতোমরা যদি আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য করতেতবে সেটা কি তোমাদের জন্যে ভালো হতো না

 

وفی صحیح البخاری،کتاب الجنائز (۱۸۳/۱):حدثني نافع، أن ابن عمر رضي الله عنهما أخبره، قال: اطلع النبي صلى الله عليه وسلم على أهل القليب، فقال:وجدتم ما وعد ربكم حقا؟ فقيل له: تدعو أمواتا؟ فقال:ما أنتم بأسمع منهم، ولكن لا يجيبون۔

 

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সাথে যে ওয়াদা করেছেনআমরা তার সত্যতার প্রমাণ পেয়েছিতোমরা কি আমাদের প্রতিপালকের কৃত ওয়াদার সত্যতার প্রমাণ পেয়েছো।’ হযরত ওমর (রা.) আরয করলেনহে আল্লাহর রসূলআপনি এমনসব দেহের সাথে কি কথা বলছেনযাদের রূহ নেই। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনসে সত্তার শপথ যার হাতে মোহাম্মদের প্রাণ আমি যা কিছু বলছিতোমরা ওদের চেয়ে বেশি শুনতে পাও না। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে যেতোমরা ওদের চেয়ে বেশী শ্রবণকারী নও। কিন্তু ওরা জবার দিতে পারে না [বোখারীমুসলিমমেশকাত২য় খন্ডপৃ. ৩৪৫]

 

যারা বলেন যে মুরদাহ শুনতে পারেনা,তারা এসব হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন যে রাসূল স.এর জীবনের উক্ত ঘটনাটি মহান আল্লাহর অনুমতিক্রমে বিশেষ ভাবে সঙ্গঘটিত হয়েছিল। এটি সবসময় নয়। 

 

عن ابن عباس رضي اللہ عنہ قال رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم ما من أحد یمر بقبر أخیہ الموٴمن فإن یعرفہ في الدنیا فیسلم علیہ إلا عرفہ (حاشیة الطحطاوي علی مراقي الفلاح: ۶۲۰)

সারমর্মঃ যারাই তাকে সালাম দেয়,তাকেই মুরদাহ চিনতে পারে।  

.

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন যেকবরবাসীকে যখন তারা সালাম দিবেন তখন তাদেরকে মুখাতিব তথা উপস্থিত ব্যক্তিকে সম্বোধন করার শব্দ দ্বারা সালাম দিবেন। ফলে মুসলিম কবরবাসীকে সালামের সময় বলবে,

«السَّلَامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ».

তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোকহে মুমিনদের গৃহে বসবাসকারী।”

সহীহ মুসলিমহাদীস নং ২৪৯।

 

মুতাওয়াতির সূত্রে সালাফদের থেকে অসংখ্য আসার (বাণী) বর্ণিত আছে যেমৃত ব্যক্তি জীবিত ব্যক্তির যিয়ারত বুঝতে পারেন এবং এতে সে খুশী হন।

۔

 

 عن انس عن النبیﷺ انہ قال ان العبد اذا وضع فی قبرہ وتولی عنہ اصحابہ انہ لیسمع قرع نعالہم۔ ابوداؤد شریف ص:۴۶۰، ج:۲، کتاب الجنائز، باب المشی بین القبور فی النعل۔ مطبوعہ سعد بکڈپو دیوبند، بخاری شریف ص۱/۱۷۸، کتاب الجنائز، باب المیت یسمع النعال، مطبوعہ اشرفی دیوبند۔

 

রাসূলে পাক () ইরশাদ করেছেন যখন মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখা হয় তখন

ﻟﻴﺴﻤﻊ ﻗﺮﻉ ﻧﻌﻠﻴﻪ

অর্থাৎ সে তার সংগীদের হেটে চলে আসার সময় পায়ের শব্দ শুনতে পায়

[সহীহ বুখারী,মেশকাত শরীফ কিতাবুল ঈমান,বাবু ইসবাতি যিয়ারাতিল কুবুর! ]

 

 হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাঃ এর মত হলো মুরদাহ ব্যক্তি মৃত বরনের পর শুনতে পরেনা।

 

হযরত ইবনে ওমর রাঃ এবং জমহুর দের মত হলো তারা শুনতে পারে।  


বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/8810/

 


(০২)
এই প্রশ্ন করার কারনে আপনার ঈমানের কোন সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (54 points)
১.অমুসলিমরা কি দুনিয়াতে যা কিছু হয় তা শুনতে পারে বা জানতে পারে।    (যেহেতু একজন বিখ্যাত শায়েখ বলেছেন যে আল্লাহ তাদেরকে যেটুকু জানায় তা তারা জান্তে পারে)  এই প্রশ্ন শুনে আমার মনে প্রশ্ন জাগে যে অমুসলিম দের খেত্রে ও কি এই মতটি   প্রযোজ্য।   এইজন্য আপনাকে এই প্রশ্নন্টি    করা।     

২.আমার ১ নাম্বার কমন্টে কোন ভুল হয়েছে না কি?  এর কারনে কি আমার ঈমানের কোন সমস্যা হবে?                          
by (567,180 points)
(০১)
এটা ঠিক যে আল্লাহ তাদেরকে যেটুকু জানায় তা তারা জানতে পারে।

(০২)
আপনার  ১ নাম্বার কমন্টে কোন ভুল হয়নি।এর কারনে আপনার ঈমানের কোন সমস্যা হবেনা।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 148 views
0 votes
1 answer 176 views
asked Jan 2, 2023 in সালাত(Prayer) by Bakar (27 points)
+1 vote
1 answer 120 views
0 votes
1 answer 107 views
0 votes
1 answer 140 views
...