আসসালামু আলাইকুম ওস্তাজ,
আমি এইচএসসি ২০২৩ ব্যাচ এর একজন ছাত্রী। আমি আমার বিষয়টা বুঝিয়ে বলছি ইং শা আল্লাহ্‌।
আমি ছোটো থাকতেই আমার আম্মু আব্বুর ইচ্ছা যে আমি ডক্টর হব। যদিও আমার ইচ্ছা ছোটোকাল থেকেই এরকম ছিলোনা । আমার আব্বু,ভাই, বোনজামাই- কে সবসময়য় দেখেছি নিজের অধিনস্ত মানুষদের সাথে খারাপ ব্যাবহার করতে। তারা খুব্ব ভালো তবে তারা স্ত্রীদের সাথে প্রায়ই কটু কথা বলে। প্রায় কদিন পর পরই সংসারে অশান্তি হয় মা বাবা ও বোন বোনজামাইয়ের মধ্যে। ইদানিং মাকে খোটা দেওয়া হয় এই বলে যে সে যত কিছু করে বা সে যে টুকটাক টাকা জমায় বা ইত্যাদি সবই বাবার টাকার, মায়ের কোনো অবদান নাই- কারন মা টাকা রোজগার করেনি। ছেলেদের এতো অহংকার ও নিজেদের ভুল না বোঝা, বার বার স্ত্রীদের কষ্ট পাওয়া সহ্য করা ইত্যাদি দেখে বড় হই আমি। একসময় আমার সব ছেলেদের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি হয় ও বিয়ের থেকে মন উঠে যায়। এখন এতো সমস্যা দেখে আমার মায়ের ইচ্ছা আমি নিজে টাকা আয় করবো বড় হয়ে, আর মাকে দেখভাল আমিই করবো। কিন্তু যদিও আমার ইচ্ছা (দ্বীনে ফেরার পর থেকে) বর অল্প টাকা আয় করলেও তাতেই খুশি থাকবো। আমি দেখেছি আমার পরিবারে কেউ ভালো স্বামী না। তাই আম্মু খুব করে চায় যাতে আমি ভালো করে পড়ি। এখন আমি দ্বীনে ফেরার পর মাদরাসায় ভর্তি হয়ে জেনারেল ছেড়ে দিতে চাইলে আম্মু খুব কষ্ট পায়। (আম্মু আমার পড়ার জন্য অনেক কষ্ট করে।) তারপর আমি IOM এ ভর্তি হই। কিন্তু ৩ বার ৩ ব্যাচ া পড়ার চেষ্টা করেও আমি ধৈর্য রাখতে পারিনি। এখন পড়িনা অনলাইনে। কারন ,আমার গুনাহের অতীত খুব খারাপ। আমি অনলাইনে ২ দিন ভালো করে থাক্লেও ৩ দিনের দিন ঠিক গুনাহ করে ফেলি, আর একসময় তো আমি খুব ভয়াবহ ভাবে গুনাহে ঢুকে পড়ি এখন্ব পুরোপুরি বের হতে পারছিনা, আলহামদুলিল্লাহ্‌ অনেকখানি বের হয়েছি। আমার এখন নামাজও ঠিক হচ্ছে না। আমি বার বার হারামে ঢুকছি। আমি বুঝেছি যে আমার অনলাইনে পড়া একদম ই সম্ভব না। জেনারেলের পড়াশোনার জন্যও অনলাইনে যাওয়া দরকার। কিন্তু আমি অনলাইন একেবারে ছেড়ে দিলে বেঁচে যেতাম। বেদ্বীন পরিবেশে ও অনলাইনে পাপের ভীড়ে আমি ঈমান নিয়ে টিকতে পারছিনা। কিন্তু এই গুনাহের জন্য অফলাইনের জেনারেল পড়ায়ও ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে। গোপন গুনাহ যদি প্রকাশ করা মানা না থাকতো আমি আম্মুকে আমার ভয়াবহ অবস্থার কথা জানাতাম আরেকজনের মাধ্যমে। কিন্তু এতে আমার অনেক ক্ষতি, তাই পারছিনা। এখন আমার মনে হচ্ছে মাদরাসায় দ্বীনই পরিবেশে থাকলে, শুধু দ্বীন নিয়েই ব্যস্ত থাকলে হয়তো আমি ঈমান ঠিক করতে এবং রাখতে পারবো। কারন সব স্বামী যে জ্বালাবে এমন না, আর আমি ওই নিয়তে পড়লে আমার ভাগ্যে অমন ই থাকবে, আর তাছাড়া আমার চাকরি করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নাই, আগেও ছিলোনা এখন ও নাই। কিন্তু আম্মু আব্বুর বিষয়ে ভাব্লে মনে হয়, হ্যাঁ, টাকা আয় করতে হবে। আম্মুর কষ্টের কথা ভাবলে মনে হয় যে ভাই তো আম্মুর সাথে এখনই খারাপ ব্যাবহার করে, তাহলে আম্মুকে আমি দেখবো.........কিন্তু ......তাও আমার মন জেনারেলে টিকছেনা.....তাছাড়া আমি পরিবেশ ও আশেপাশের মানুষদের সাথে প্রচুর মিশি, মানে আমি বেশিই মিশুক, আর খুবই বোকা(বিশ্বাস করুন, আমার জ্ঞ্যান একেবারেই নাই বললেই চলে) , তাই আমি সহজেই ফিতনায় পরে যাই। এতোসবের মধ্যে দিন দিন আমি কনফিডেন্ট একেবারে হারায়ে ফেলছি। কারন আমি শত বার চেষ্টা করেও, ওয়াদা করেও, আল্লাহকে কথা দিয়েও নিজেকে ঠিক করতে পারিনি।জেনারেল পড়াটাও এই সময়ে দরকারি। এখন আমি যে এইচএসসি দিবো - আমার মনে হচ্ছে আমি ফেইল করবো, কারন আমি কিচ্ছু পারিনা, মাঝখানে বদনজর লাগায় প্রায় ৬ মাস অসুস্থ এবং পারিবারিক সমস্যার কারণে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলাম। রুকিয়াহ করার পর ঠিক হইয়েছি আলহামদুলিল্লহ। কিন্তু কনফডেন্ট সম্পূর্ণ হারায়ে ফেলছি।
বিয়ে তো পরের ব্যপার। আমি তো কদিন পরও মারা যেতে পারি, বিয়ের আগেই মারা যেতে পারি, মা-বাবার আগেই মারা যেতে পারি।
আমি এখন কি করবো? কিভাবে দ্বীনই ইলম অর্জন করবো? এইচএসসি পরীক্ষা না দিয়েই কি মাদ্রাসায় ভর্তি হবো? জেনারেল পড়াশোনা ছেড়ে দিবো কি?