আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
96 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (87 points)
Assalamualaikum wa rohmatullahi wa barokatuhu
1/ যদি কোনো ব্যক্তি কারো নাম এ খারাপ কিছু বলে (গীবত) এবং এমন কারো সামনে বলে যে ওই ব্যক্তি কে চিনে না( যেমন আমার এক আত্মীয় এই এই কাজ করে, আমার বাসার একজন এই করে, অমুক স্থানের একজন এমন করে) তাহলে কি তা গীবত হবে? এতে কি গুনাহ হবে? এবং আমার আমল অন্যের লাছে চলে যাবে?

২/ গীবত কি কবীরাহ গুনাহ? তাওবাহ এর কি প্রয়োজন হয় মাফ পেতে?

৩/ যদি গীবত হয়ে যায় তাহলে কিছু আমল (যেমন নফল সালাত, কুরান পাঠ, দান সদকা) এসব করে যার নাম এ গীবত করা হয়েছে আল্লাহ এর কাছে তার কাছে ওই কাজ এর সওয়াব পাঠিয়ে দেবার বিনিময়ে মাফ চাওয়া হয় তাহলে কি মাফ পাওয়া যাবে? হাসর এর ময়দান এ কি এর জবাব্দিহিতা থাকবে আর?

৪/ হানাফি মাজহাব এর কেও কি ইলম চর্চার জন্য মদীনা তে যেতে পারবে?

৫/ কোনো জ্ঞানী হানাফি মাজহাব এর অনুসারী কি সাধারণ সালাফি কাওকে মাজহাব এর কোনো বিশেষ বিষয়ে (যেমন নামাজের তরিকা, সম্মিলিত মুনাজাত বা অন্য কোনো আমল এর পদ্ধতি) জ্ঞান দান করতে পারবে (যদি সালাফি ব্যক্তির আগ্রহ না থাকে বা খুব প্রয়োজন না থাকে)
৬/ এক ব্যক্তি আমি হানাফি মাজহাব অনুসরণ করি জন্য বলেছে আমার ইলম এর প্রতি ভালোবাসা নেই, সে এও বলেছে সে সরাসরি তাক্বলীদ করে একমাত্র রসুল সা.। সে এও বলেছে যে আমাদের দেশ এর আলেমগণ নাকি সবসময় দাবি করেন তাদের কাছে না গেলে গোমরাহ হয়ে যাবেন। কিন্তু কেও ইলম এর রাস্তা দেখিয়ে দেন না। কেও তাক্বলীদ করলে কি ইলম এর প্রতি ভালোবাসা কমে যায়? কেও যদি নিজ থেকে যাচাই করতে চায় তাহলে কি তা প্রশংসনীয়?
জাযাকাল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
কারো নাম,পরিচয়  উল্লেখ না করলে এতে গীবত হয় না। কিন্তু উপস্থিত লোকেরা যদি বুঝতে পারে যে অমুক ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে তবে তা গীবত বলে গণ্য এবং হারাম হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ  

★প্রশ্নে ছুরত যেমন আমার এক আত্মীয় এই এই কাজ করে, আমার বাসার একজন এই করে, অমুক স্থানের একজন এমন করে,এক্ষেত্রে শ্রোতা যদি সেই ব্যাক্তিকে না চিনে,তার পরিচয় সম্পর্কে না জানে, তাহলে  তা গীবত হবেনা।

তবে যদি বলে যে আমার চাচা এই এই করে,আমার ফুফা এই এই করে,তাহলে গীবত হবে।

(০২)
গীবত কবিরা গুনাহ।
এক্ষেত্রে শুধু তওবা যথেচ্ছ নয়,বরং যার নামে গীবত করা হয়েছে,তার কাছ থেকে মাফ চেয়ে নিতে হবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ [٤٩:١٢] 

তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী,পরম দয়ালু। [সূরা হুজুরাত-১২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي سَعْدٍ، وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا “، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ وَكَيْفَ الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا؟ قَالَ: ” إِنَّ الرَّجُلَ لَيَزْنِي فَيَتُوبُ فَيَتُوبُ اللهُ عَلَيْهِ “وَفِي رِوَايَةِ حَمْزَةَ ” فَيَتُوبُ فَيَغْفِرُ لَهُ، وَإِنَّ صَاحِبَ الْغِيبَةِ لَا يُغْفَرُ لَهُ حَتَّى يَغْفِرَهَا لَهُ صَاحِبُهُ  

হযরত আবু সাঈস এবং জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। উভয়ে বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ গীবত করা ব্যভিচার করার চেয়েও জঘন্য। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! গীবত করা ব্যভিচারের চেয়ে জঘন্য হয় কি করে? রাসূল সাঃ বললেনঃ নিশ্চয় ব্যভিচারকারী ব্যভিচার করে তওবা করে থাকে, ফলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, কিন্তু গীবতকারীকে ক্ষমা করা হয় না, যতক্ষণ না যার গীবত করেছে সে তাকে ক্ষমা করে। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬৩১৫, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৫৯০}

গীবত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন 

(০৩)
যার নামে গীবত করা হয়েছে,তার থেকেই মাফ চেয়ে নিতে হবে।

এভাবে নেক আমল বখশিয়ে দেয়ার মাধ্যমে ক্ষমালাভ হবেনা।
হ্যাঁ,যার নামে গীবত করা হয়েছে,সেই ব্যাক্তি যদি মারা যায়,বা তাকে অনেক খোজাখুজির পরেও তার সন্ধান পাওয়া না যায়,ঠিকানা/মোবাইল নম্বর কিছুই পাওয়া না যায়,বা কোনো কারনে ক্ষমা চাওয়া একেবারে অসম্ভব হয়,সেক্ষেত্রে তার গুনাহ মাফের দোয়া করা যাবে,এটিই উক্ত গীবতের কাফফারা তথা ক্ষতিপূরণ হিসেবে কাজ দিবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৪)
হ্যাঁ, যেতে পারবে। 
এক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

(০৫)
জ্ঞান দান করতে তো কোনো সমস্যা নেই।
তবে সে সালাফি ব্যাক্তির যদি আগ্রহ না থাকে,সেক্ষেত্রে উপরোক্ত মতবিরোধপূর্ণ বিষয় নিয়ে জ্ঞান দান না করাই কাম্য।

(০৬)
কেউ তাক্বলীদ করলে ইলম এর প্রতি ভালোবাসা কমে যায়না।
কেউ যদি নিজ থেকে যাচাই করতে চায়, তাহলে তা প্রশংসনীয়।
তবে গভীর জ্ঞান অর্জন করার পর কোনো বিজ্ঞ উস্তাদের অধীনে থেকে যাচাই করা যাবে।

নতুবা বিপথে যাওয়ার প্রবল শংকা থাকে।
যাহা অনুমোদিত নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...