আসসালামু আলাইকুম,
আমি একটা বিষয়ে অনেক পেরেশান হয়ে আছি,যা আমাকে বেশ পীড়া দিচ্ছে ৷ শয়তান মাঝে মাঝে একদম নাজেহাল করে ছাড়ে। মাথার ভিতরে আজে বাজে জিনিস নিয়ে আসে। এমন হালত যে জবান বন্ধ থাকে তবুও ভিতরে ঐ কথা গুলো চলতে থাকে, এমন একটা ভাব হয় যেন আমি নিজেই জবান দিয়ে বলতেছি, মাঝে মাঝে এমন হয় যে, ভিতর থেকে বলা নাকি জবান থেকে বলা সেটা বুঝে উঠতে পারিনা, বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
কখনও আল্লাহ নিয়ে, কখন ওজু নিয়ে, কখন সালাতে ওজু ভাঙ্গা নিয়ে, কখন শাতিমে নিয়ে, আবার বর্তমানে তালাক নিয়ে। মাথার মধ্যে মঝে মাঝে চলতে থাকে তালাক দিলাম, তালাক দিলাম.... এমন৷ আমি জবান বন্ধ রাখি, বাট ভিতরে চলতেই থাকে।
হঠাৎ দেখা গেলো জিকির করতেছি তখন ভিতরে এমন চলতে থাকে(তালাক দিলাম, তালাক দিলাম শব্দ)। এর পরেও জিকির করে থাকি কিন্তু হঠাৎ এমন ভাব হয় যে বুঝতে পারিনা, তালাক দিলাম কথাটা জিকিরের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে মুখ ফসকে বের হয়েছে নাকি ভিতরে ভিতরে ঐকথা গুলো বাজতেছিলো।
সালাতের বৈঠক দোয়া পড়তে থাকি, তখনও মাঝে মাঝে একি অবস্থা ভিতরে ঐ কথা গুলো চলতেই থাকে।
১) দেখা গেলো দাতেঁর কপাটিদুটি এক করে মিসওয়াক করতেছি তখন মাঝে মাঝে ভিতরে চলতে থাকে ঐ কথা। হঠাৎ মনে হলো মুখ ফসকে বলেই ফেললাম নাকি, দাতের কপাটি জোড়া তো লাগানো, তবেকি ভিতরে তালাক শব্দ আর বাহিরে দিলাম শব্দ বের হলো , তাই দাতের কপাটি জোড়া লাগিয়ে মিসওয়াক করতে থেকে অন্য কথা বলে বুঝার ট্রাই করলাম বাট বুঝতে পারলাম না যে, আসলে কি হয়েছে৷ এই অবস্থায় কি তালাক হয়ে গেছে বা যাবে।
২) রোজা রাখব, সেজন্য সাহরি খাওয়ার জন্য উঠেছি, খাবার গুলো রান্নাঘর থেকে টেবিলে নিয়ে যাচ্ছি আর দোয়া করতে ছিলাম আল্লাহ জহান্নাম থেকে রক্ষা করেন, জহান্নাম থেকে রক্ষা করেন, এই সময়েও ঐ রকম কথা গুলো ভিতরে রিপিট করতেছিলো। এমন যে, আমি মুখে দোয়া করে যাচ্ছি আর ভিতরে ঐটা বলে চলছে। এভাবে চলতে চলতে এক সময় ঐ ভিতরে চলতে থাকা তালাক দিলাম শব্দটা অনিচ্ছায় অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে মুখফসকে উচ্চারিত হয়েছে বলে মনে হলো, আবার মনে হলো ভিতরেই ঐটা চলতেছে।
আমি আসলে এই লোড নিতে পারতেছিনা।আমি কি অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে মুখফসকে উচ্চারিত করেছি!, অনিচ্ছায় অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে মুখফসকে এমনটা করে থাকলে কি তালাক হয়ে যাবে, আমার এই পাগল করে দেয়ার মতোন ওয়াসওয়াসার হালতে?
৩) আবার এমনো হয় যে, মনে হলো অনিচ্ছায় অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে মুখ ফসকে তালাক দিলাম কথাটি বেরিয়েছে ঐ হালতের জন্য, তৎক্ষনাত সাথে আরো কিছু কথা জুড়ে বলে যে, এসব বলা যাবেনা৷ যেমন, তালাক দিলাম এগুলো বাজে কথা, এসব বলা জাবেনা। তালাক দিলাম জাহান্নামের আগুন আজাব.. ইত্যাদি বলা যাবেনা । এই অবস্থাতে কি হুকুম।
আমি কিছু বুঝে উঠতে পারছিনা,আমি এই দম বন্ধ করা পেরেশানি নিতে পাচ্ছি না, আল্লাহ আমাকে শয়তান থেকে হেফাজত করুক, জীবনের সকল পরীক্ষা থেকে উৎরিয়ে দেক, আমিন।
তাই আমি দোয়া করতেছি এই ভাবে যে, আল্লাহ আপনি মা বানিয়েছেন তার কত মায়া, মমতা, ভালোবাসা, সন্তান যদি তার মাকে হাজারও কষ্ট দেয়, গালমন্দ করে, মারে, এর পরেও ঐ মা তার সন্তানের খারাপ দেখতে পারে না, সন্তানকে পেলে দেয়না, অন্যের সামনে নিজ সন্তানকে ছোটও করে না, সব গোপন রাখে, মাফ করে দেয়। বরং সন্তানের কষ্ট দেখলে সব ভুলে গিয়ে ছুটে যায় সন্তানের কাছে।
আবার অনেক সময় সন্তান জেদ করে, বা এমন কিছু আকড়ে ধরে থাকতে চায় তা তার জন্য ক্ষতিকর, তখন মা তার সন্তানের কল্যানের জন্য, সন্তানের ইচ্ছায় বা অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঐ জিনিস থেকে দূরে রাখে।
আল্লাহ আপনি তো এই মায়ের চেয়ে আরো বেশি দয়াবান, করুনাময়, আপনার দয়ার ১ভাগের প্রভাব সৃষ্টিকুলের উপর পরেছে, তাতেই মায়ের এই হালত, আর মালিক, আপনিতো আপনিই । আল্লাহ আমি তোমার পাপি বান্দা তুমি আমার সকল পাপ গোপন রাখো, আমাকে ফেলে দিয়ো না, মাফ করে দাও।
আর ঐ সন্তান যেমন ক্ষতির জিনিস আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় কিন্তু মা তার ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সেখান থেকে তাকে দূরে রাখে, নিরাপদে রাখে। আল্লাহ তুমি, তার চেয়েও উত্তম ভাবে আমাকেও হেফাজত করো, যে সব হারাম জিনিস আমি আঁকড়ে ধরে থাকতে চাচ্ছি জেনে বা নাজেনে। আল্লাহ তুমি আমার উপর রহম করো। আল্লাহ আমাদের মাঝে সম্পর্ক যদি হালাল থেকে থাকে তাহলে সেটা স্পষ্ট করে দেন এবং আমাদেরকে জান্নাত পর্যন্ত একসাথে কবুল করুন, আর যদি হালাল না থাকে তাহলে সেটাও স্পষ্ট করে দাও আর আমাদের জন্য উত্তম ব্যবস্হা করে দাও, আমীন।
আমি সত্যিই এই চাপ নিতে পারছিনা। আল্লাহ ভালো জানেন, প্রিয় উস্তায আমাকে এই বিষয়ে সাহায্য করুন, আর আমার জন্য দোয়া করবেন।