আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
105 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
edited by
আসসালমুআলাইকুম হুজুর ,
আমি খুবই ওয়াসওয়াসা গ্রস্ত মানুষ। আমার ঈমান চলে যাওয়া নিয়ে খুবই ভয় হতে থাকে। সারাদিন কোনো না কোনো ইসলামী চিন্তা লেগে থাকে।
হুজুর জাকির নায়েক এর একটা বক্তব্য অনেক দিন আগে শুনেছিলাম । লিঙ্ক টা খুঁজে পেলে কমেন্ট বক্স এ দিয়ে দিবো আমি খুব সংক্ষেপ এ বলছি। একটা লোক জাকির নায়েক কে প্রশ্ন করেছে ----- আল্লাহ তো সবই জানেন , কে জাহান্নামী হবে আর কে জান্নাতী হবে ।  তাহলে দুনিয়াতে কেনো সবাই কে পাঠিয়ে এত দীর্ঘ সময় ধরে আছে। যারা জাহান্নামী তাদের কে জাহানাম এ দিয়ে দিবে আর যারা জান্নাতী তাদের কে জান্নাতে দিয়ে দিবে।
জাকির নায়েক উত্তরে বললেন --- অবশ্যই আল্লাহ সব জানেন । আল্লাহ জানেন যে কে জাহান্নামী আর যে জান্নাতী। তার পর ও দুনিয়া তে পাঠিয়েছে তার কারণ দুনিয়াতে না পাঠিয়ে যদি ডাইরেক্ট জান্নাত , জাহান্নাম এ পাঠিয়ে দেই, তাহলে যারা জাহান্নামী হবে তারা বলবে আল্লাহ আমি কি দোষ করেছি যে আমাকে জাহান্নাম এ পাঠালে। এর জন্য সবাই কে দুনিয়া তে পাঠিয়েছে সবার হিসেব রাখা হচ্ছে। এমন কিছু একটা বক্তব্য বলেছিল।
১. হুজুর আজকে   হটাৎ দুনিয়ার হায়াত নিয়ে কথা হচ্ছিলো তখন আমার   জাকির নায়েক এর এই বক্তব্যের কথা মনে পড়ে আর , আর হটাৎ মনে মনে হতে লাগলো আল্লাহ সবই জানেন তাহলে পাঠালো কেনো, আর মনে মনে এমন সন্দেহ হলো আল্লাহ সব জানেন এই রকম প্রশ্ন হচ্ছিলো। হুজুর সঙ্গে সঙ্গে আমি আস্তাগফিরুল্লাহ পড়েছি। আমি তো জানি আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আর আল্লাহ সব কিছু জানেন। কিন্তু আমার ওয়াসওয়াসা র জন্য মনে সন্দেহ হয়েছিল আল্লাহ সব জানেন তাই বলে, । তার পর সঙ্গে সঙ্গে  মনে মনে বলেছি অবশ্যই আল্লাহ সব জানেন।
হুজুর আমার ওয়াসওয়াসা র জন্য শয়তানের  ধোঁকা তে  পড়ে এমন মনে হয়েছে। দিয়ে আমার ভয় হতে লাগলো ঈমান চলে যাবে বলে, হুজুর আমার ঈমান চলে যায়নি তো , ঈমান চলে গেলে বাঁচবো না।
হুজুর আমার ঈমান চলে যায়নি তো?
২. হুজুর শয়তানের ওয়াসওয়াসা র জন্য মাঝে মাঝেই ওই কথা মনে হচ্ছে  । আর যখনই মনে হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে আস্তাগিরুল্লাহ পড়ছি , হুজুর আমার ঈমান ঠিক থাকবে তো?
৩. হুজুর আমার হটাৎ হটাৎ মনে হচ্ছে , এটা করলে তালাক বা এটা বললে তালাক, এমন মনে হচ্ছে, মুখে উচ্চরণ করছিনা, যেমন মনে হচ্ছে স্ত্রী যদি এই কথা বলে তাহলে তালাক , এটা মনে মনে হচ্ছে, দিয়ে স্ত্রী বলে ফেলবে সেই ভয় এ আমি ই কথা টা বলে ফেলছি যাতে কিছু না হয়। এর জন্য কি কোনো সমস্যা হবে? যা হয়েছে সব মনে মনে ।
৪. হুজুর  তার পর এমন মনে হচ্ছে, আমার স্ত্রীর একটা ইউটিউব চ্যানেল  নতুন খুলেছে, দিয়ে  হটাৎ মনে হলো ১১৫ টা সাবস্ক্রাইবার হলে তালাক এই রকম মনে মনে  হচ্ছে কিন্তু আমি মুখে উচ্চরণ করছিনা। আমি এখন প্রশ্ন টা টাইপ করছি তাও এইরকম মনে হচ্ছে, আমি কিন্তু অন্তর থেকে এটা বলছিনা , শয়তানের ওয়াসওয়াসা তে এমন মনে হচ্ছে, হুজুর যদি ১১৫ টা সাবস্ক্রাইবার হয়ে জাই তাহলে কি তালাক হবে? এটা কিন্তু আমার মনে মনে হয়েছে আমি মুখে উচ্চরণ করিনি।
৪.১ হুজুর আপনাদের কে বললাম এর জন্য কি কোনো সমস্যা হবে?
৫. স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলাম বলতে বলতে হঠাৎ একটা কথা বোঝাতে গিয়ে বলে "ফেলেছি আরে ভাই " এমনি ভুল করে কথার পরিপেক্ষিতে বেরিয়ে গিয়েছে।
শয়তানের ওয়াসওয়াসা তে দিয়ে ভয় হতে থাকলো কেনিয়া তালাক নিয়ে, দিয়ে মনে মনে বলছি এটা তো কেনিয়া বাক্য নয় , আর আমার নিয়ত ও ছিল না কিছুর সুতরাং কিছু হবে না । কিন্তু শয়তানের ওয়াসওয়াসা তে মনে হচ্ছে নিয়ত ছিল, কিন্তু সত্যি বলেছি কোনো নিয়ত ছিলনা। এর জন্য কি কোনো তালাক হবে?
৬.  হুজুর রাস্তা তে যাচ্ছি, মনে মনে এই রকম হচ্ছে অমুক লোকটা যদি থুতু ফেলে তাহলে তালাক, বা অমুক লোকটা যদি গান করে তাহলে তালাক , দিয়ে হয়ত কোনো লোক থুতু ফেলছে, বা কিছু বলছে দিয়ে ভয় হয়ে যাচ্ছে । এই রকম সব উলটো পাল্টা ভাবনা মনে মনে হচ্ছে । মুখে উচ্চরণ করছিনা এর জন্য তালাক হবে? আমি মনে মনে এই রকম হচ্ছে মুখে উচ্চরণ করিনি।
৭. আল্লাহ কে নিয়ে মাঝে মাঝে খারাপ চিন্তা চলে আসছে , আস্তাগিরুল্লাহ  সঙ্গে সঙ্গে তওবা করেছি। কিন্তু মুখে উচ্চরণ করছিনা । শয়তানের  ওয়াসওয়াসা র জন্য  মনে না না রকমের বাজে কথা মনে এমন হচ্ছে কিন্তু মুখে উচ্চরণ করিনি এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?
৮. হুজুর একটা কথা বলতে খুবই লজ্জা হচ্ছে,
বিষয় হলো আমি যে মেয়ে টাকে ভালো বাসতাম তার সঙ্গেই আমার বিয়ে হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু হুজুর বিয়ের আগে যখন প্রেম করতাম তখন , ফোন এ সেক্স্যুয়াল কথা বলতাম , হস্তমৈথুন করতাম , উত্তেজিত হয়ে বলতাম তোকে অমুক ছেলে দিয়ে চুদাবো আস্তাগিরুল্লাহ, তার পর বলতাম আমার বাপ কে দিয়ে চুদাবো নাউজবিল্লা। হুজুর এইগুলো এমনি সেক্স্যুয়াল গল্পঃ করতে করতে উত্তেজিত হয়ে বলতাম আর হস্তমৈথুন করতাম। এই গুলো সত্যি সত্যি বলিনি হুজুর শুধুমাত্র মজা করার জন্য বলেছি , তখন দ্বীনের জ্ঞান ছিল না হুজুর। এগুলো সব বিয়ের আগে বলতাম। হুজুর এই সব পুরনো ভুল এর  জন্য কি আমাদের বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবে? আমাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে তো?
৯. হুজুর বিয়ের পর যদি না জেনে বুঝে উপরুক্ত   কোনো খারাপ কথা বলে থাকি, তোকে অমুক ছেলে দিয়ে চুদাবো বা বাপ কে দিয়ে চুদাবো সহবাসের সময় উত্তেজিত হয়ে কোনো বাজে ভাষা প্রয়োগ করে থাকি আল্লাহ কসম না জেনে বুঝে যদি ভুল হয়ে থাকে, শুধু মাত্র মজা করার জন্য এমন ভুল করে থাকি
এর জন্য কি আমাদের বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা। হবে? বা ঈমানের কোনো সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
আপনার ঈমান চলে যায়নি।

(০২)
হ্যাঁ, আপনার ঈমান ঠিক থাকবে। 

(০৩)
শরীয়তের বিধান হলো, মুখে উচ্চারণ না করে শুধু মনে মনে তালাক দিলে বা মনে মনে শর্ত যুক্ত তালাক দিলে তাহা পতিত হবেনা।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفٰى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِه„ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ
قَالَ قَتَادَةُ إِذَا طَلَّقَ فِي نَفْسِه„ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।

ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেনঃ মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুইতালাক হবে না। [বুখারী শরীফ ৫২৬৯.২৫২৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)

অন্য এক হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরন মতে এর জন্য কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৪)
যদি ১১৫ টা সাবস্ক্রাইবার হয়ে যায়, তাহলে তালাক হবেনা।

৪.১
আমাদেরকে বলার দরুন কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৫)
এর জন্য কোনো তালাক হবেনা।

(০৬)
এর জন্য তালাক হবেনা।

(০৭)
প্রশ্নের বিবরন মতে ঈমান চলে যাবেনা। 
তবে আপনি সাথে সাথে ইস্তেগফার পাঠ করে নিবেন।

(০৮)
এর জন্য আপনাদের বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবেনা।
আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে।

(০৯)
বিবাহের পর এ ধরনের কথা বললেও এর জন্য আপনাদের বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবেনা।

ঈমানের কোনো সমস্যা হবেনা।

তবে এহেন অশ্লীল কথাবার্তা পরিত্যাগ করতে হবে। তওবা করতে হবে,ভবিষ্যতে আর এহেন বাক্য উচ্চারণ করা যাবেনা,কেননা এতে গুনাহ হয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...