আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
302 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (68 points)
edited by
১. আমার ভাই প্রচন্ড একরোখা ওর কিছু মানসিক সমস্যা ও আছে। কালকে আম্মা কি একটা কথা বলার প্রেক্ষিতে সে বলে উঠে সে ইহুদী, শুনে তাকে ধমকানো শুরু করি। এবং বলি কলিমা শাহাদত পরে ইমান দেহরানোর জন্য সে শরমে পরে না হাসে,পরে আম্মু একটু অংশ বলেছেন এটা শুনে সে বলেছে, এভাবে কলিমা শাহাদাত পাঠ করে তার কি, ইমান দোহরানো হয়েছে? তার কালকের রোজাও কি নষ্ট হয়েছে?

২. রাতে আরেকটা টপিকে আলাপ উঠলে আব্বু তাকে গালাগালি শুরু করেন। পরে রাগ করে বলেন, "যা যা কফের হয়ে যা, সমস্যা নাই" (রাগ করে বলেছেন বুঝাই যাচ্ছিলো) পরে আরো বলেন, " নিজেই তো সকালে বলে দিলে নিজেরে ইহুদি" একটু পরে এটাও বললেন " আমিতো কোরআন পড়াইলাম, আর কিতা করতাম"

এভাবে রাগ করে কাফের হওয়ার কথা বলার জন্য উনিও কি কাফের হয়ে গেছেন? উনার কি বিবাহ দোহরাতে হবে?উনার হজ করেছিলেন তা ও  কি পুনরায় করতে হবে?

৩. আমরা দুই ভাই,(২৪,১৯)।  তার সব এমনিতে ঠিক ইন্জিনিয়ারিং পড়াশোনা ও করছে, একটু সহজ সরল। কিছু ওসওয়াসার রোগ আছে  ওর এখন, আমারো কুফরের ওসওয়াসা।  আমরা দুই ভাই এর সামনে, আম্মু যদি আব্বাুকে বলে " আমি আমাকে ১০ হাজার টািকা কাবিনে তোমার কাছে বিবাহ দিলাম" আব্বু যদি বলে "আমি কবুল করলাম" তবে কি বিবাহ হয়ে যাবে?

৪.আমার পরিবারে কথা কি বলবো, বাবা আর ভাই, এরা কখন কি বলে তার নাই ঠিক, আমার নিজের ই ওসওয়াসার সমস্যা দিনে কতো প্রশ্ন মাথায় ঘি্ুরে, তার উওর বাড়ি এলে এরার বিভিন্ন কথায় ও টেনশনে থাকি, যে এদের ইমান গেলো কি না,  বিবাহ নষ্ট হলো কি না, এক্ষেত্রে কি করনীয় আমার?

৫.বউ যদি বলে "আমার অত লম্বা দাড়ি ভালা লাগেনা,অন্যরার থাকুক সমস্যা না"  "দাড়ি রাখার আগে সুন্দর লাগতো" "তুমি তো হুজুর ওই যাইরায়" " আমি কখনো ইরম দাড়িওয়ালা বিয়া করমু ভাবছিনা" " আমি হুজুর জামাই কখনই চাইনা"
 ইত্যাদি বললে সে কি কাফের হয়ে যাবে?

(কখণই সে ঠাট্টা করে নি এগুলো নিয়ে, সে মানে এগুলো সুন্নাহ /ওয়াজিব  এবং ভালো,  তাও তার মতামত জানালো যে সে চায় না)

৬. কেও যদি একটা এনিমেশন শেয়ার করে, যেখানে একটি এনিমেশনকে দেখানো হচ্ছে রমজান মাস, আরেকটি এনিমেশন কে দেখানো হচ্ছে মানুষ। তখন ওই যে এনিমেশন দিয়ে রমজান মাস বুঝাচ্ছে সে ওই মানুষকে বলছে, তোমার ইমানের খেয়াল রেখে আমি চলে যাচ্ছি,  এইসব এনিমেশন শেয়ার করলে দেখলে, রিয়েক্ট দিলে, কি গুনাহ হবে? না কি কুফর ও হবে?

৭. স্বামী স্ত্রী একে অপরে সবার সামনে বয়ফ্রেন্ড /, গার্লফ্রেন্ড হিসাবে পরিচয় করালে, বা প্রচার করালে কি বিবাহে সমস্যা হবে?

৮. বিয়ে হয়েছে আলাদা থাকে এমন দম্পতি যদি তাদের সংসার/ সমাজিক ভাবে আনুষ্ঠানিক বিয়ে বুঝাতে,  বলে " আমাদের বিয়ের পরে এটা করবো"/ " আমাদের  বিয়ে হয়ে যাক আমাদের তারপর আমরা এটা করবো" এভাবে বললে কি বিবাহ নষ্ট হয়ে যাবে?

৯. আরবি ভাষার উচ্চারণ পদ্ধতি নকল বাংলা ভাষায়  কেও যদি মজা করে বিভিন্ন কথা বলে (ভালো /খারাপ) সে কি কাফের হয়ে যাবে?

১০. কেও যদি তার মায়ের /মেয়ের ব্যবহারের কাপড় তার শরীরে বা লিঙ্গে ঘষিয়ে উত্তেজিত হয়, এতে কি হুরমত হবে

১১. আমার মনে হচ্ছে অনেক আগে আমি পেচা ডাকলে মানুষ মরে এরকম কুসংস্কারে কিছু বিশ্বাস করতাম, কিন্তু মনে হচ্ছে না বুঝ হওয়ার পর এসবে বিশ্বাস করেছি, আমার বিবাহ কি দুহরাতে হবে এজন্য?,(,২ বছর হয়)

১২. একটি ফানি ভিডিওতে একজন বড় দাড়িওয়ালা চায়নিজ মানুষের জন্য অপরজন বিরক্ত হচ্ছিলো তখন সে বলে তর দাড়ি নডুলস বানিয়ে খেয়ে ফেলবো। ভিডিওর এই কথা শুনে কেও হেসে ফললে কি কুফর হবে?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শরীয়তের বিধান হলো ইচ্ছাপূর্বক ভাবে নিজেকে নিজে কাফের বলে পরিচয় দেওয়া কুফরী। 

সূরা নাহলের ১০৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-

مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ (106)

“কেউ বিশ্বাস স্থাপনের পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং প্রত্যাখ্যানের জন্য হৃদয় মুক্ত রাখলে তার উপর আল্লাহ ক্রোধ পতিত হবে এবং তার জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। তবে তার জন্য নয়, যাকে (সত্য প্রত্যাখ্যানে) বাধ্য করা হয়, কিন্তু তার অন্তর বিশ্বাসে অটল।” (১৬:১০৬)
,

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী তে আছে
"وَمَنْ يَرْضَى بِكُفْرِ نَفْسِهِ فَقَدْ كَفَرَ."
(كتاب السير، الْبَابُ التَّاسِعُ فِي أَحْكَامِ الْمُرْتَدِّين ، مطلب فِي مُوجِبَاتُ الْكُفْرِ أَنْوَاعٌ مِنْهَا مَا يَتَعَلَّقُ بِالْإِيمَانِ وَالْإِسْلَامِ، ٢ / ٢٥٧، ط: دار الفكر)
"এবং যে কুফরীতে সন্তুষ্ট থাকে, সে কাফের হয়ে গেছে।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ   
 
ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে অমুসলিম/হিন্দু/ইহুদি/খ্রিস্টান বলে পরিচয় দিলে সেক্ষেত্রে সে কাফের হয়ে যাবে।
তাকে পুনরায় ঈমান আনতে হবে।
বিবাহিত হলে বিবাহ নবায়ন করতে হবে।

فتاوی عالمگیریہ:
"مسلم قال: أنا ملحد يكفر، ولو قال: ما علمت أنه كفر لا يعذر بهذا."
(کتاب السیر ،باب احکام المرتدین،ج:2،ص:279،ط:رشیدیہ)
সারমর্মঃ-
কোনো মুসলিম বলেছে যে আমি মুরতাদ, তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে যদি সে বলে যে আমি তো জানিনা যে এটি কুফর,তাহলে সেই ওযর গ্রহণযোগ্য হবেনা।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছেঃ-
"একটা কথা বলার প্রেক্ষিতে সে বলে উঠে সে ইহুদী"

এখানে কে আপনার ভাই নিজেকেই ইহুদি বলেছে? যদি তাই হয়,সেক্ষেত্রে তার ঈমান চলে গিয়েছে। 

এক্ষেত্রে কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করার কারনে তার ঈমান দোহরানো হয়ে গিয়েছে।
তবে তার রোযা বিনষ্ট হয়ে গিয়েছে।

(০২)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার বাবা  কাফের হয়ে যাননি। তার বিবাহ দোহরাতে হবেনা।
তিনি যে হজ করেছিলেন তা পুনরায় করতে হবেনা।

আরো জানুনঃ-

(০৩)
হ্যাঁ, বিবাহ (নবায়ন) হয়ে যাবে।

(০৪)
আপনি তাদেরকে এহেনে বিষয় নিয়ে কথা না বলার পরামর্শ দিবেন।

(০৫)
সে যেহেতু ঠাট্রা কতে এসব বলেনি,তাই সে কাফের হয়ে যাবেনা।

(০৬)
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে বাদ্য-বাজনার ব্যবহার না থাকলে গুনাহ হবেনা কুফর হবেনা।

(০৭)
স্বামী স্ত্রী একে অপরে সবার সামনে বয়ফ্রেন্ড /, গার্লফ্রেন্ড হিসাবে পরিচয় করালে, বা প্রচার করালে বিবাহে সমস্যা হবেনা।

(০৮)
এভাবে বললে বিবাহ নষ্ট হয়ে যাবেনা

(০৯)
এতে সে কাফের হয়ে যাবেনা।

(১০)
এক্ষেত্রে কোনোভাবেই হুরমত সাব্যস্ত হবেনা।
এভাবে হুরমত হয়না।

(১১)
আপনার বিবাহ দোহরাতে হবেনা।

(১২)
না, কুফর হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...