আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
177 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (61 points)
এবার অধিক গরমের কারণে একটি মাসআলা নিয়ে জ্ঞান রাখতে চাই।
আমার কর্মক্ষেত্র থেকে বাড়ির দুরত্ব ১৪০ কিলো র মতো( একটা পথে ১২১ কিন্তু সেদিকে যাওয়া হয় না). যেতে সময় লাগে ৪ ঘন্টার ও অধিক। আমার কর্মক্ষেত্র থেকে ৮১ কিলো মিটার দূরে আমার পরিবার এর ভাড়া বাসা আছে,যেখানে মা বাবা ও ভাই থাকেন। কিন্তু এখন সেখানে আমি যাবো না যাবো গ্রামের বাড়িতে।

১. এই যাত্রা পথে কি আমার রোজা ভাঙ্গার অনুমতি থাকবে?

২. ভাঙ্গলে কখন থেকে ভাঙ্গতে পারবো, অর্থাত বাসে উঠে কতো দূর যাওয়ার পরে, ভাঙ্গতে পারবো

আর বাড়ির কতো কুটু কাছে পৌছানোর আগে ভাঙ্গতে পারবো?

৩. এটাকে সফর বিবেচনা করলে সফর শুরু শেষ এটা কখন ধরবো?

৪. আমি কাল বাড়ি যাবো এই কারনে আজকে যদি সেহরীই না খাই, যে গেলে পথে ভেঙ্গে ফেলবো না গেলে তো রোজা রাখবো, তা কি হবে?

৫. সাধারণ আসা যাওয়ায় এই পথের কোথাও নামাজ আদায় করলে তা ও কি কসর হবে?
৬. ইহুদিরা তো বনী ইসরাইলের অংশ, এখন কেও যদি ইহুদিদের গালাগালি করে যে এরা আগে থেকেই খারাপ এরা এই করছে সেই করছে, এদের গালাগালি করলে কি তা বনী ইসরাইলের সকল মানুষ ও বনী ইসরায়েলের নবী দের উপর ও ঢ়াবে? ইহুদিদের গালাগালি করলে এই দৃষ্টি তে কি ইমানে সমস্যা হতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (565,920 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


সফর অবস্থায় সবার জন্যই রোজা ভঙ্গ করা জায়েজ।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ

অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ অথবা সফরে থাকবে সে অন্য সময় পূরণ করে নিবে।” (সূরা বাকারা: ১৮৪)
 
হাদীস শরীফে এসেছে-

إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ أَنْ تُؤْتَى رُخَصُهُ كَمَا يُحِبُّ أَنْ تُؤْتَى مَعْصِيَتُهُ
আল্লাহ্ তাআলা তাঁর অবকাশ দেয়া কাজগুলো কার্যকরী হওয়া পছন্দ করেন। যেমন তিনি তাঁর অবাধ্যতাকে অপছন্দ করেন।” [মুসনাদে আহমদ হা/৫৮৬৬]
 
সফর অবস্থায় রোজা রাখতে কষ্ট না হলে রোজা রাখাই উত্তম।
হাদীস শরীফে এসেছে-

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ أَنَّ إِسْمَاعِيلَ بْنَ عُبَيْدِ اللهِ حَدَّثَهُ عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ فِي يَوْمٍ حَارٍّ حَتَّى يَضَعَ الرَّجُلُ يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ مِنْ شِدَّةِ الْحَرِّ وَمَا فِينَا صَائِمٌ إِلاَّ مَا كَانَ مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَابْنِ رَوَاحَةَ

আবুদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, কোন এক সফরে প্রচণ্ড গরমের দিনে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে যাত্রা করলাম। গরম এত প্রচণ্ড ছিল যে, প্রত্যেকেই আপন আপন হাত মাথার উপর তুলে ধরেছিলেন। এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং ইবনে রাওয়াহা (রাঃ) ব্যতীত আমাদের কেউই সিয়ামরত ছিলেন না। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১৯৪৫) হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(১.২.৩)
শরীয়তের বিধান মতে ঐ মুসাফিরের জন্য রোযা ভাঙ্গার অনুমতি আছে,যে সুবহে সাদিকের সময়েই মুসাফির থাকে।

কিন্তু কেউ যদি সুবহে সাদিক এর সময় মুকিম থাকে,পরবর্তীতে সফর শুরু করে দেয়,সেক্ষেত্রে তার জন্য রোযা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ নেই।
তদুপরি সে যদি নিজ এলাকার সীমানা অতিক্রম করার পর রোযা ভেঙ্গে ফেললে শুধু কাজা আবশ্যক হবে,কাফফারা আবশ্যক হবেনা।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার জন্য রোযা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ নেই।

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (2/ 431):
"قال في البحر: وكذا لو نوى المسافر الصوم ليلاً وأصبح من غير أن ينقض عزيمته قبل الفجر ثم أصبح صائماً لايحل فطره في ذلك اليوم، ولو أفطر لا كفارة عليه. اهـ.قلت: وكذا لا كفارة عليه بالأولى لو نوى نهاراً، فقوله: ليلاً غير قيد".
সারমর্মঃ-
কোনো মুসাফির যদি রাতেই রোযার নিয়ত করে,,,অতঃপর রোযা অবস্থাতেই তার সকাল (সুবহে সাদিক) হয়,তাহলে তার জন্য ঐ দিন রোযা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ নেই।
যদি রোযা ভেঙ্গে ফেলে,সেক্ষেত্রে কাফফারা আবশ্যক হবেনা।

الفتاوى الهندية (1/ 206):
" (منها: السفر) الذي يبيح الفطر وهو ليس بعذر في اليوم الذي أنشأ السفر فيه، كذا في الغياثية. فلو سافر نهاراً لايباح له الفطر في ذلك اليوم، وإن أفطر لا كفارة عليه بخلاف ما لو أفطر ثم سافر، كذا في محيط السرخسي"
সারমর্মঃ-
সফর ওযর হিসেবে গন্য হবেনা যদি রোযা অবস্থায় সফর শুরু করে।
সুতরাং কেহ যদি দিনের বেলা সফর শুরু করে দেয়,তাহলে তার জন্য ঐ দিন রোযা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ হবেনা। 
যদি রোযা ভেঙ্গে ফেলে,সেক্ষেত্রে কাফফারা আবশ্যক হবেনা।

(০৪)
না,এমনটির অনুমতি নেই।

(০৫)
হ্যাঁ, কসর আদায় করতে পারবেন।

(০৬)
প্রশ্নের বিবরণ মতে ইহুদিদের গালি দিলে ঈমানে কোনো সমস্যা হবেনা। 

এক্ষেত্রে কোনোভাবেই নবিদের গালি দেয়ার বিষয় মুখেও নেয়া যাবেনা,সেই নিয়তে গালি দেয়াও যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (565,920 points)

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (2/ 431)

"ولو نوى مسافر الفطر) أو لم ينو (فأقام ونوى الصوم في وقتها) قبل الزوال (صح) مطلقاً، (ويجب عليه) الصوم (لو) كان (في رمضان)؛ لزوال المرخص (كما يجب على مقيم إتمام) صوم (يوم منه) أي رمضان (سافر فيه) أي في ذلك اليوم، (و) لكن (لا كفارة عليه لو أفطر فيهما) للشبهة في أوله وآخره.

(قوله: ويجب عليه الصوم) أي إنشاؤه حيث صح منه بأن كان في وقت النية ولم يوجد ما ينافيه، وإلا وجب عليه الإمساك كحائض طهرت ومجنون أفاق كما مر، (قوله: كما يجب على مقيم إلخ) لما قدمناه أول الفصل أن السفر لا يبيح الفطر، وإنما يبيح عدم الشروع في الصوم، فلو سافر بعد الفجر لايحل الفطر".

by
সম্মানিত শায়েখ একটি বিষয় জানতে চাই,

এই রোজা পরে সুবিধামতো নিকটতম সময়ে কাজা আদায় করে নিতে হবে। প্রিয় রাসুল (সা.) কোনো এক রমজানে রোজা অবস্থায় মক্কা শরিফের পথে যাত্রা করলেন। কাদিদ নামের একটি স্থানে পৌঁছার পর তিনি রোজা ছেড়ে দিলে লোকেরা সবাই রোজা ছেড়ে দিলেন (বুখারি, হাদিস: ১৮২০)।

হাদীস অনুযায়ী আপাত দৃষ্টিতে বুঝা যাচ্ছে, রোজা রেখে নবী (সা:) সফর শুরু করে পরে তা ভেঙ্গে ফেললেন। এক্ষেত্রে আপনার মতে জায়েজ নয় হওয়ার পিছনে কারণ বা হাদীসের বর্ননা কি, বা এই হাদীসের অন্য কোনো ব্যাখা আছে কি?জানালে উপকার হতো।

জাজাকাল্লাহ

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 116 views
...