আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
109 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
edited by
১)স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে সেখানে স্বামী উত্তরে কিছু বলেনা। স্বামীর ফ্যামিলির মানুষ তখন আলোচনা  করে ব্যাপারটা সমাধানের উদ্দেশ্য এবং সেখানে স্বামী স্ত্রী দুজনকে পরামর্শ দেওয়া হয় যাতে আলাদা বাসা ভাড়া করে থাকে যেন কোন রকম ঝগড়াঝাটি না হয় যাতে দুজন শান্তিমত একসাথে থাকতে পারে এবং স্বামী ও সম্মত জানায় যে আলাদা বাসা ভাড়া করে থাকলে যদি কোন সমস্যা না হয় তাহলে আলাদা বাসা ভাড়া করেও থাকতে প্রস্তুত। এমন বলার কারন যে ব্যাপারটা সমাধান হয় ,ভূল কোন সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয় ,স্ত্রী যাতে এধরনের কথা না বলে।কারন স্বামী তার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসে। এরকম আলাদা বাসার প্রস্তাব করারা জন্য বিবাহিত জীবনে কোন সমস্যা হবে?

২)স্ত্রীকে স্বামী বলে যে , "তোমার কি আমাদের সম্পর্ক যে হালাল আছে সেটা কি পছন্দ না? নাকি তোমার হারাম সম্পর্ক পছন্দ?তোমার তো মনে হয় হারাম সম্পর্ক পছন্দ " উত্তরে স্ত্রী বলে অবশ্যই হালাল সম্পর্ক পছন্দ। হারাম সম্পর্ক কে পছন্দ করে। স্বামী বলে " তাহলে ঝগড়া কেনো কর? ঝগড়ার কারনে যদি কোন মজলিস তৈরী হয় এবং তার পর যদি মুখ থেকে কেনায়া বাক্য বেরহয় সেখানে তখন আর নিয়ত দেখা হয় না। এটাকি তুমি জানো? আমি এই বিষয়ে যেই মাসায়ালা জানি সেটা তুমি জানলে ঝগড়া করতেনা"। মূলত স্বামী ঝগড়ার পরে স্ত্রীকে মাসায়েল সম্পর্ক বুঝানোর উদ্দেশ্যে এমন কথা বলে যাতে ভবিষ্যতে আর ঝগড়া না করে।এমন ভাবে স্ত্রীকে বুঝালে কোন সমস্যা হবে?(অনেক মাস আগের ঘটনা সব কথা সঠিক মনে নেই কিভাবে বলেছিলাম ,অনেকটা আইডিয়া করে বললাম )

৩)ইউটিউবে একটা ভিডিও যেটা কেনায়া বাক্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেই ভিডিওর কমেন্ট বক্সে এক লোক কমেন্টকরেছিলো

" এমন হলে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের বিবাহ বি** হয়ে গেছে"( এই রকম কিছু একটা লিখা ছিলো সঠিক মনে নেই)
আমি সেই কমেন্টে একটা লাইক দিয়েছিলাম। আমি অন্য কোন নিয়তে বা নিজের স্ত্রীকে চিন্তা করেও লাইক দেইনি আর আমি জানতাম না মাসায়েল। পরে আমার বিষয়ে মুফতিদের প্রশ্ন করে উত্তর জেনেছি এবং আলহামদুলিল্লাহ তারা আমাকে সুসংবাদ জানিয়েছেন প্রত্যেকবার । আমি জানতাম যে লাইক দেওয়া কোন শরীয়তেরভাষা না এবং কেনায়া শব্দ ও না। অই কমেন্টে লাইক দেওয়ার কারনে আমাদের বিবাহিত জীবনে কোন সমস্যা হবে? যতটুকু মনে পড়ে তখন আমি মুখে উচ্চারণ করে কিছু বলেনি ।

৪) স্বামী স্ত্রীকে প্রথমে মাসায়েল শুনায় " কেনায়া বাক্যে অন্তরে নিয়ত থাকা লাগবে । কেনায়া শব্দ যখন  বলবে তখন মনে তা*** নিয়তে থাকতে হবে।  মনে মনে বলতে হবে ১ তা*** নিয়ত করলাম ,অথবা তা*** নিয়ত করলাম ইত্যাদি"
তারপর বলে "কিন্তু আমিতো কখনো তা*** নিয়তে এমন কথা বলিইনি, যেহেতু আমি জানতাম ই না এভাবেও **** হয় ,নিয়ত কিভাবে করবো, আমি কখনো অন্য কোন নিয়তে এমন বাক্য বলিনি"

 প্রশ্ন হচ্ছে এখানে উপরের কথাগুলো স্ত্রীর সামনে অতীত এর কেনায়া বাক্যের মাসায়েল যতটুকু জানতাম তখন সেটা দিয়ে সমাধান এর জন্য আলোচনা করেছিলাম । স্ত্রীর সামনে এরুপ আলোচনার জন্য কি তা**** হবে ?

1 Answer

0 votes
by (680,960 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ يَقُولُ فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ بَرِئْتِ مِنِّي وَبَرِئْتُ مِنْكِ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ بِمَنْزِلَةِ الْبَتَّةِ قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ أَوْ بَائِنَةٌ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ لِلْمَرْأَةِ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا وَيُدَيَّنُ فِي الَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا أَوَاحِدَةً أَرَادَ أَمْ ثَلَاثًا فَإِنْ قَالَ وَاحِدَةً أُحْلِفَ عَلَى ذَلِكَ وَكَانَ خَاطِبًا مِنْ الْخُطَّابِ لِأَنَّهُ لَا يُخْلِي الْمَرْأَةَ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا زَوْجُهَا وَلَا يُبِينُهَا وَلَا يُبْرِيهَا إِلَّا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ وَالَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا تُخْلِيهَا وَتُبْرِيهَا وَتُبِينُهَا الْوَاحِدَةُ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তিনি ইবন শিহাব (রহঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছেন, যে ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে বলিলঃ “আমার তোমা হইতে দায়িত্বমুক্ত হইয়াছি। তুমিও আমা হইতে দায়িত্বমুক্ত।” ইহা দ্বারা তালাকাই আল-বাত্তা-এর মতো তিন তালাক প্রযোজ্য হইবে।

যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে বলিলঃ (أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ) “তুমি দায়মুক্ত” (أَنْتِ بَائِنَةٌ) “তুমি আমা হইতে পৃথক।” মালিক (রহঃ) বলেনঃ সে স্ত্রী যাহার সঙ্গে সহবাস করা হইয়াছে এইরূপ হইলে তবে তাহার স্বামীর উপরিউক্ত বাক্যগুলির দ্বারা তাহার উপর তিন তালাক বর্তাইবে। আর যদি সেই স্ত্রী এমন হয় যাহার সহিত সহবাস করা হয়নি, তবে ধর্মত স্বামীকে বিশ্বাস করা হইবে এবং তাহার নিকট জিজ্ঞাসা করা হইবে-সে উপরিউক্ত বাক্যগুলি দ্বারা এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে, না তিন তালাক। যদি সে এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে বলিয়া প্রকাশ করে তাহা হইলে এই বিষয়ে সেই ব্যক্তিকে হলফ দেওয়া হইবে। (যেহেতু স্বামীর উক্তির দ্বারা স্ত্রীর প্রতি এক তালাক বায়েন প্রযোজ্য হইয়াছে, তাই পুনর্বিবাহ ছাড়া স্বামী সেই স্ত্রীকে গ্রহণ করিতে পারবে না) তাই সে বিবাহের প্রস্তাবকারী হিসাবে অন্য লোকদের মতো একজন বলিয়া পণ্য হইবে। ইহার কারণ এই যে, যে স্ত্রীর সহিত সঙ্গম করা হইয়াছে সেই স্ত্রী তিন তালাক ছাড়া দায়িত্বমুক্ত বা স্বামী হইতে পৃথক হইবে না। আর যাহার সহিত সঙ্গম হয় নাই সেই স্ত্রী এক তালাক দ্বারা দায়িত্বমুক্ত ও পৃথক হইয়া যায়।

মালিক (রহঃ) বলিয়াছেনঃ এ বিষয়ে যাহা আমি শুনিয়াছি তন্মধ্যে ইহাই আমার নিকট উত্তম।
(মুয়াত্তা মালিক ১১৬৫)

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.
احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
২য় প্রকার,কেনায়া বাক্য।
এর দ্বারা তালাক হবেনা,কিন্তু তালাকের নিয়ত অথবা অবস্থার ভিত্তিতে তালাক হবে। কেনায়া বাক্য দুই প্রকার। এর মধ্যে তিনটি শব্দ এমন আছে, যার দ্বারা  তালাকে রজয়ী পতিত হয়। 
সেগুলো হলোঃ- তুমি ইদ্দত পালন করো,তুমি তোমার গর্ভাশয় মুক্ত করো,তুমি এক।

আর কেনায়া তালাকের অন্যান্য শব্দ,যেক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত করলে বায়েন তালাক হয়। তিন তালাকের নিয়ত করলে তিন তালাক পতিত হয়। 
যদি দুই তালাকের নিয়ত করে,সেক্ষেত্রে এক তালাক পতিত হয়।
যেমনঃ- তুমি বিচ্ছিন্ন, তুমি সম্পর্ক মুক্ত,তুমি ভিন্ন,তুমি হারাম,তুমি শুণ্য,তুমি মুক্ত,তোমার রশি তোমার কাঁধে,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হও,আমি তোমাকে তোমার পরিবারের জন্য হেবা-দান করলাম,আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম,আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি আযাদ,তুমি ঘোমটা পড়,তুমি ওড়না দ্বারা নিজেকে আবৃত করো,তুমি আড়াল হও (পর্দা করো), তুমি বিদূরিত হও, তুমি বের হয়ে যাও,তুমি চলে যাও,তুমি দন্ডায়মান হও (দাঁড়িয়ে যাও), তুমি অন্য স্বামী খুজো।
স্বামীর যদি এখানে নিয়ত না থাকে,তাহলে এ সব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা। তবে মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে হলে কাযা'আন তালাক হবে। দিয়ানাতান তালাক হবেনা।
(কুদুরী ৩৬৩.৩৬৪. হেদায়া শরহুল বিদায়াহ ১/২৪১,শরহে বিকায়াহ ২/৭৭)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এরকম আলাদা বাসার প্রস্তাব করার জন্য বিবাহিত জীবনে কোন সমস্যা হবেনা।

(০২)
এমন ভাবে স্ত্রীকে বুঝালে কোন সমস্যা হবেনা।

(০৩)
ঐ কমেন্টে লাইক দেওয়ার কারনে আপনাদের বিবাহিত জীবনে কোন সমস্যা হবেনা।

(০৪)
স্ত্রীর সামনে এরুপ আলোচনার জন্য তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...