আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
302 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
মহিলাগণ কোথায় ইতিকাফ করবে?

এক বোনের প্রশ্ন:
-----------------------
আসসালামু আলাইকুম। শাইখ, আমার এক খালাম্মা প্রতি রমজানের শেষে ঘরের মধ্যে ইতিকাফে বসেন। তাকে নিষেধ করা হলেও বসবে। কারণ, মসজিদের হুজুররা বলে ঘরে মহিলাদের ইতিকাফ হবে। আমাকে কুরআন- হাদিসের দলিল সহকারে এ বিষয়ে একটু জানাবেন প্লিজ। জাযাকাল্লাহু খয়রান।

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

عَنْ عَائِشَةَ  رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، – زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَانَ يَعْتَكِفُ العَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللَّهُ، ثُمَّ اعْتَكَفَ أَزْوَاجُهُ مِنْ بَعْدِهِ»

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহধর্মিণী আম্মাজান হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু পর্যন্ত রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন। তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন। 
[সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২০৩৬,সহীহ মুসলিম-১১৭২]

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَعْتَكِفُ فِي العَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ، فَكُنْتُ أَضْرِبُ لَهُ خِبَاءً فَيُصَلِّي الصُّبْحَ ثُمَّ يَدْخُلُهُ، فَاسْتَأْذَنَتْ حَفْصَةُ عَائِشَةَ أَنْ تَضْرِبَ خِبَاءً، فَأَذِنَتْ لَهَا، فَضَرَبَتْ خِبَاءً، فَلَمَّا رَأَتْهُ زَيْنَبُ ابْنَةُ جَحْشٍ ضَرَبَتْ خِبَاءً آخَرَ، فَلَمَّا أَصْبَحَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى الأَخْبِيَةَ، فَقَالَ: «مَا هَذَا؟» فَأُخْبِرَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلْبِرَّ تُرَوْنَ بِهِنَّ» فَتَرَكَ الِاعْتِكَافَ ذَلِكَ الشَّهْرَ، ثُمَّ اعْتَكَفَ عَشْرًا مِنْ شَوَّالٍ

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,রমযানের শেষ দশকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফ করতেন। আমি তাবু তৈরী করে দিতাম। তিনি ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তাতে প্রবেশ করতেন। (নবী সহধর্মিণী) হাফসা (রাঃ) তাঁবু খাটাবার জন্য ‘আয়িশা (রাঃ) এর কাছে অনুমতি চাইলেন। তিনি তাঁকে অনুমতি দিলে হাফসা (রাঃ) তাবুঁ খাটালেন। (নবী সহধর্মীণী) যয়নাব বিনতে জাহশ (রাঃ) তা দেখে আরেকটি তাবু তৈরি করলেন। সকালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবুঁগুলো দেখলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন এগুলো কি? তাকে জানানো হলে তিনি বললেনঃ তোমরা কি মনে কর এগুলো দিয়ে নেকি হাসিল হবে? এ মাসে তিনি ইতকিাফ ত্যাগ করলেন এবং পরে শাওয়াল মাসে ১০ দিন (কাযা স্বরুপ) ইতিকাফ করেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২০৩৩, ইফাবা, হাদীস নং-১৯০৫]

মহিলারা ঘরের মসজিদে (নামাজ পড়ার স্থানে) বা একটি জায়গাকে নির্দিষ্ট করে এ'তেক্বাফে বসবে।তবে সাবধান! পরবর্তীতে আর স্থান পরিবর্তন করা যাবে না।মহিলাদের জন্য শর্ত হল,হায়েয নেফাস থেকে পবিত্র থাকা।এ'তেক্বাফের মধ্যখানে যদি হায়েয চলে আসে, তাহলে এ'তেক্বাফ ফাসিদ হয়ে যাবে।কেননা তখন তো উনি আর রোযা রাখতে পারবেন না। 

পরবর্তীতে কমপক্ষে একদিন রোযা সহ এ'তেক্বাফকে কাযা করে নেবেন।সম্ভব হলে অবশিষ্ট সকল দিনের এ'তেক্বাফকে রোযাসহ কাযা করে নিতেও পারেন।

স্বাভাবত মানুষের যে সমস্ত প্রয়োজন থাকে সেসব প্রয়োজনের স্বার্থে তিনি এ'তেক্বাফ থেকে বের হতে পারবেন।প্রস্রাব পায়খানা,ওজু ফরয গোসল ইত্যাদির জন্য।তবে শীতিলতা অর্জনের নিমিত্তে উনি গোসলে যেতে পারবেন না।

খানা পাকানোর জন্য উনি পাকঘরে যেতে পারবেন না।তবে প্রয়োজনে তিনি এ'তেক্বাফ স্থলে খানাকে রান্না করে নিতে পারবেন।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-১০/২৫১)
,
বিস্তারিত জানুনঃ  
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
মহিলারা ঘরের  নামাজ পড়ার স্থানে বা ঘরের একটি জায়গাকে নির্দিষ্ট করে এ'তেক্বাফে বসবেন।
এটি হাদীস দ্বারা প্রমানিত। 
রাসুলুল্লাহ সাঃ এর স্ত্রীগন এভাবেই ঘরে ইতিকাফ করতেন।

এক্ষেত্রে মহিলাগন ইতিকাফ করতে চাইলে ঘরের নামাজ পড়ার স্থানে বা অন্য  কোনো ঘরে প্রবেশ কালে ইতেকাফের নিয়ত করবে।
ঐ স্থান থেকেই যে কাজ গুলি করা যায়,সেগুলো করতে পারবে।
ঐ স্থান কোনোভাবেই ত্যাগ করা যাবেনা।
শুধু মাত্র পায়খানা পেশাব করার জন্য বাহিরে (টয়লেটে) যেতে পারবে।
দৈনন্দিনের গোসলের জন্য যেতে পারবেনা।
যদি গোসল করে,তাহলে এক্ষেত্রে ইস্তেঞ্জা (পেশাব/পায়খানা) করার জন্য বের হওয়ার সময় গোসলের কাপড় ইত্যাদি নিয়ে এক বারে বের হবে,যাতে আবার সেই স্থানে আসতে না হয়।
দ্রুত ইস্তেঞ্জা গোসল করে চলে আসবে।
উক্ত স্থান থেকে বাহিরে গিয়ে কাহারো সাথে কোনো কথা বলবেনা।
,
উক্ত স্থানে থেকেও অহেতুক কাজ ও কথা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবে।
সর্বদায় কুরআন তিলাওয়াত, যিকির আযকার,নামাজ ইত্যাদিতে মগ্ন থাকবে।     
,
রমজানের শেষ দশকে দশদিনের নিচে ইতেকাফ করলে সেটি নফল ইতেকাফ বলে গন্য হবে।
,
আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...