ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
সুন্নাত ইতিকাফের জন্য শরয়ী মসজিদ শর্ত।
শরয়ী মসজিদ ছাড়া সুন্নাত ইতিকাফ আদায় হবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
আয়েশা (রাঃ) এর বাণী: "জামাতে নামায পড়া হয় এমন মসজিদ ছাড়া ইতিকাফ হয় না"[বাইহাকীর বর্ণিত; আলবানী "কিয়ামু রামাযান" পুস্তিকাতে সহিহ বলেছেন]
ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর বাণী: "যে মসজিদে নামায কায়েম হয় এমন মসজিদ ছাড়া কোন ইতিকাফ হয় না।"[আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা (৫/২১২)]
এতেকাফ শুদ্ধ হবার জন্য শরয়ী মসজিদ হওয়া আবশ্যক। যেটা শরয়ী মসজিদ নয়,সেখানে সুন্নাত ইতিকাফ আদায় করলে সুন্নাত ইতিকাফ আদায় হবে না। বরং কাছাকাছি অন্য কোন মসজিদে ইতিকাফ করে নিবে।
যদি উক্ত মহল্লায় আর কোন মসজিদ না থাকে, তাহলে উক্ত স্থানে ইতিকাফ করা শুদ্ধ হবে।
[বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২২৫; ইমদাদুল আহকাম ১/৪৪৭,ফাতাওয়া রাহিমীয়া-৭/২৮৩]
قال في البحر:
"وحاصله أن شرط کونه مسجداً أن یکون سفله وعلوه مسجداً لینقطع حق العبد عنه".
(شامی: ۶/۵۴۷، ط: زکریا دیوبند)
সারমর্মঃ-
মসজিদ হওয়ার জন্য শর্ত হলো তার উপর ও নিচ পুরোটাই মসজিদ হওয়া যাতে করে তাহা হতে বান্দার হক নিঃশেষ হয়ে যায়। সেখানে বান্দার কোনো হক আর না থাকে।
السنن الکبری للبیھقی:
"أَنْ لاَيَخْرُجَ إِلاَّ لِلْحَاجَةِ الَّتِي لاَ بُدَّ مِنْهَا، وَلاَيَعُودُ مَرِيضًا، وَلاَيَمَسُّ امْرَأَةً، وَلاَ يُبَاشِرُهَا، وَلاَ اعْتِكافَ إِلاَّ فِي مَسْجِدِ جَمَاعَةٍ. وَالسُّنَّةُ فِيمَنِ اعْتَكَفَ أَنْ يَصُومَ".
(4: 315، رقم: 8354، مکة المکرمة)
সারমর্মঃ-
,,,জামায়াতের সাথে নামাজ আদায় হয়,এমন মসজিদ ছাড়া ইতিকাফ সহীহ নয়,,,।
وَأَمَّا شُرُوطُهُ)……..وَمِنْهَا مَسْجِدُ الْجَمَاعَةِ فَيَصِحُّ فِي كُلِّ مَسْجِدٍ لَهُ أَذَانٌ، وَإِقَامَةٌ هُوَ الصَّحِيحُ كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ، وَأَفْضَلُ الِاعْتِكَافِ مَا كَانَ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ثُمَّ فِي مَسْجِدِ النَّبِيِّ – عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ – ثُمَّ فِي بَيْتِ الْمُقَدَّسِ ثُمَّ فِي الْجَامِعِ ثُمَّ فِيمَا كَانَ أَهْلُهُ أَكْثَرَ، وَأَوْفَرَ كَذَا فِي التَّبْيِينِ. (الفتاوى الهندية، كتاب الصوم، الباب السابع فى الاعتكاف-1/211
সারমর্মঃ-
ইতিকাফের শর্ত হলো,, জামায়াতের সাথে নামাজ আদায় হয় এমন মসজিদ হওয়া। সুতরাং প্রত্যেক ঐ মসজিদ যেখানে আযান ইকামত হয়,সেখানে ইতিকাফ সহীহ।
(০২)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
মাসয়ালাটি ইমামদের মাঝে মতবিরোধ পূর্ণ একটি মাসয়ালা।
ইমাম আবু হানিফা রহঃ ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহঃ দের নিকটে শরয়ী মসজিদ ছাড়া সুন্নাত ইতিকাফ হয়না।
কোন কোন আলেমের অভিমত হল: যে কোন মসজিদে ইতিকাফ করা সহিহ। এমনকি সে মসজিদে যদি জামাতের সাথে নামায কায়েম না থাকে তবুও।
এ অভিমতের ভিত্তি হল আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীর উপর আমল: "মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় তাদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করো না।"[সূরা বাক্বারা, ২:২৮৭]
শাইখ উছাইমীন (রহঃ) "আল-শারহুল মুমতি" গ্রন্থে (৬/৩১২) বলেন:
"যে মসজিদে জমায়েত ঘটে সে মসজিদ ছাড়া সহিহ নয়" (অর্থাৎ ইতিকাফ সহিহ নয়)। এখানে জমায়েত দ্বারা কি যে মসজিদে জুমার নামায হয় সে মসজিদ উদ্দেশ্য; নাকি যে মসজিদে জামাতে নামায হয় সে মসজিদ উদ্দেশ্য?
উত্তর: যে মসজিদে জামাতের সাথে নামায হয় সে মসজিদ। জুমার নামায অনুষ্ঠিত হওয়া শর্ত নয়। কেননা যে মসজিদে জামাতের সাথে নামায হয় না সঠিক অর্থে সেটার ক্ষেত্রে "মসজিদ" শব্দ ব্যবহার করা যায় না। যেমন যে মসজিদ পরিত্যক্ত ও এলাকাবাসী যেখান থেকে অন্যত্র চলে গেছেন।
(০৩)
ইতিকাফে থাকাবস্থায় আপনি মসজিদে বসেই ভার্সিটির পড়াশোনা করতে পারবেন।
এতে ইতিকাফ ভেঙ্গে যাবেনা।
(০৪)
হ্যাঁ, এক্ষেত্রে ইতিকাফ ভেঙ্গে যাবে।
,
তবে এক্ষেত্রে উলামায়ে কেরামদের বলে দেয়া একটি পদ্ধতি অবলম্বন করে গোসল করা যাবে, সেক্ষেত্রে ইতিকাফ ভেঙ্গে যাবেনা।
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ-