আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
372 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
Assalamualaikum,
Can we use toilet at the time of adhan?

What's thw opinion about women covering their head in the time of adhan?

1 Answer

+1 vote
by (709,320 points)

বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ

আ'যান শুনার পর মসজিদে গমনের মাধ্যমে আ'যানের জবাব দেয়া ওয়াজিব। আর আ'যানের কালিমা সমূহকে নিজ যবান দ্বারা দোহড়িয়ে পড়া মুস্তাহাব।
কিন্তু যখন কেউ এমন স্থানে বা এমন অবস্থায় থাকবে,যখন সে আ'যানের কালিমা সমূহকে নিজ যবান দ্বারা দোহড়াতে পারবে না, তখন সে আযানের সময়ের এবং পরের মুস্তাহাব আ'মল সমূহ আদায় করতে পারবে না।

এমতাবস্থায় উক্ত ব্যক্তির জন্য শরীয়তের নির্দেশ হল যে,সে যবান না নাড়িয়ে মনের মধ্যে আ'যানের কালিমা সমূহকে উপস্থিত করবে।

অথবা সে প্রথমে তার হাজতকে শেষ করবে।অতঃপর সে ছুটে যাওয়া আ'মলগুলোকে সম্পন্ন করবে।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমে রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে-

ﻋﻦ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮ ﺭﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨْﻬُﻤﺎ "ﺃﻥَّ ﺭﺟُﻼً ﻣﺮَّ ﻭﺭﺳﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪ - ﺻﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠَّﻢ - ﻳﺒﻮﻝُ ﻓﺴﻠَّﻢ ﻓَﻠَﻢْ ﻳﺮُﺩَّ ﻋﻠﻴﻪ"

রাসূলুল্লাহ প্রস্রাব করতেছিলেন,এমতাবস্থায় একব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলো।উক্ত ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে সালাম করলো কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাঃ সালামের কোনো জবাব দেননি।

(সহীহ মমুসলিম-৩৭০)

মুহাজির ইবনে কুনফুয রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,

ﻭﻋﻦِ ﺍﻟﻤُﻬﺎﺟﺮ ﺑﻦ ﻗﻨﻔﺬ ﺃﻧَّﻪ ﺃﺗَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒﻲَّ ﺻﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠَّﻢ ﻭﻫﻮ ﻳﺒﻮﻝ ﻓﺴﻠَّﻢ ﻋﻠﻴﻪِ ﻓﻠَﻢْ ﻳَﺮُﺩَّ ﻋﻠﻴْﻪِ ﺣﺘَّﻰ ﺗﻮﺿَّﺄ، ﺛُﻢَّ ﺍﻋﺘَﺬَﺭَ ﺇﻟﻴْﻪِ ﻓﻘﺎﻝ : " ﺇﻧِّﻲ ﻛﺮِﻫْﺖُ ﺃﻥ ﺃﺫْﻛُﺮَ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰَّ ﻭﺟﻞَّ ﺇﻻ ﻋﻠﻰ ﻃُﻬْﺮ ﺃﻭ ﻗﺎﻝَ : ﻋﻠﻰ ﻃﻬﺎﺭﺓ "

একবার তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট আসলেন,এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাঃ প্রস্রাব করতেছিলেন।তিনি সালাম করলে তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ ওজু করার পূর্ব পর্যন্ত তার সালামের কোনো জবাব দেননি।অতঃপর তাকে কারণ বর্ণনা করে বললেন যে,অপবিত্র অবস্থায় আল্লাহর যিকির করাকে আমি অপছন্দ করি।

(সুনানে আবু-দাউদ-১৭)

ইমাম নববী রাহ বলেন,

ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨَّﻮﻭﻱُّ ﺭﺣِﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺏ " ﺍﻷﺫﻛﺎﺭ :" " ﻳُﻜْﺮَﻩُ ﺍﻟﺬِّﻛﺮُ ﻭﺍﻟﻜﻼﻡُ ﺣﺎﻝَ ﻗﻀﺎﺀِ ﺍﻟﺤﺎﺟﺔ ﺳﻮﺍﺀٌ ﻛﺎﻥ ﻓﻲ ﺍﻟﺼَّﺤﺮﺍﺀِ ﺃﻭ ﻓﻲ ﺍﻟﺒُﻨْﻴَﺎﻥ، ﻭﺳﻮﺍﺀٌ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺟَﻤﻴﻊ ﺍﻷﺫﻛﺎﺭِ ﻭﺍﻟﻜﻼﻡ ﺇﻻ ﻛﻼﻡ ﺍﻟﻀَّﺮﻭﺭﺓ، ﺣﺘَّﻰ ﻗﺎﻝ ﺑﻌﺾُ ﺃﺻﺤﺎﺑِﻨﺎ : ﺇﺫﺍ ﻋﻄِﺲَ ﻻ ﻳَﺤﻤَﺪ ﺍﻟﻠَّﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ، ﻭﻻ ﻳﺸﻤِّﺖُ ﻋﺎﻃِﺴًﺎ ﻭﻻ ﻳﺮﺩُّ ﺍﻟﺴَّﻼﻡ، ﻭﻻ ﻳُﺠﻴﺐ ﺍﻟﻤﺆﺫِّﻥ، ﻭﻳﻜﻮﻥ ﺍﻟﻤُﺴَﻠِّﻢ ﻣُﻘَﺼِّﺮًﺍ ﻻ ﻳَﺴﺘﺤﻖُّ ﺟﻮﺍﺑًﺎ، ﻭﺍﻟﻜﻼﻡ ﺑِﻬﺬﺍ ﻛﻠِّﻪ ﻣﻜﺮﻭﻩٌ ﻛﺮﺍﻫﻴَﺔَ ﺗَﻨﺰﻳﻪٍ ﻭﻻ ﻳَﺤﺮﻡ، ﻓﺈﻥْ ﻋَﻄِﺲَ ﻓَﺤَﻤِﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺑﻘَﻠْﺒِﻪ ﻭﻟﻢ ﻳُﺤﺮِّﻙ ﻟِﺴﺎﻧَﻪ ﻓﻼ ﺑﺄﺱ، ﻭﻛﺬﻟﻚ ﻳَﻔﻌَﻞُ ﺣﺎﻝَ ﺍﻟﺠِﻤﺎﻉ ."

বাথরুম করার সময়ে আল্লাহর যিকির বা কথা বলা মাকরুহে তানযিহি। চায় বাথরুম ঘরে হোক বা বাহিরে খোলা মাঠে হোক। এবং সব রকম কথাবার্তাই মাকরুহে তানযিহি। তবে প্রয়োজনের কথাবার্তা অবশ্যই জায়েয।এমনকি আমাদের উলামায়ে কেরাম বলেন, বাথরুমে থাকাবস্থায় কেউ হাঁচি দিলে,তখন সে 'আলহামদু-লিল্লাহ' বলতে পারবে না, এবং বাথরমে থাকাবস্থায় কেউ হাঁচির জবাবে 'ইয়ারহামুকাল্লাহ' ও বলতে পারবে না।

সালামের জবাব দিতে পারবে না।আ'যানের জবাব দিতে পারবে না।এ সময় কথাবলা মাকরুহে তানযিহি,হারাম নয়।তাই মনের ভিতর যিকিরকে ঠোট নাড়ারো ব্যতীত উপস্থিত করবে।সহবাসের বিষয়টাও ঠিক এরকম।তথা সে সময়ও যিকির করা মাকরুহে তানযিহি।
সুপ্রিয় পাঠকবর্গ!

আ'যানের সময় বাথরুমে না যাওয়াই উচিৎ।কেননা এসময় কিছু মুস্তাহাব আ'মল রয়েছে,যা বাথরুমে থাকাবস্থায় পালন করা অসম্ভব।তবে যদি বিশেষ প্রয়োজন দেখা দেয়,তাহলে যাওয়া যাবে।

(২)

বাসায় একাকী অবস্থায়ও সতর ঢাকে এমন কাপড় পরিধান করা বাঞ্ছনীয়। এক্ষেত্রে হিজাব পড়া লাগবে না। দু-হাত কনুই পর্যন্ত, পা ঢাখনু পর্যন্ত এবং মূখ, খোলা রাখা যাবে, হিজাব পড়া লাগবে না।হ্যা বিশেষ প্রয়োজনের সময় আরো ছোট কাপড়ও পরিধান করা যাবে। তবে বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত ছোট কাপর পরিধান করা বা সতর খুলে অবস্থান করা অবশ্যই মাকরুহে তানযিহি হবে।

লক্ষ্য করুন নিম্নোক্ত হাদিসটিকে........

وعن بهز بن حكيم عن أبيه عن جده قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم -: «احفظ عورتك إلا من زوجتك أو ما ملكت يمينك، قلت: يا رسول الله أفرأيت إذا كان الرجل خاليا قال فالله أحق أن يستحيا منه»

হযরত বাহয ইবনে হাকীম রাহ.তার পিতা হাকীম থেকে এবং তিনি মা'আবীয়া রাঃ থেকে বর্ণনা করেন যে,

নবীজী সাঃ বলেছেনঃ হে মু'আবীয়া! তুমি তোমার সতরে আওরাতকে হেফাজত করো,তবে স্ত্রী ও বাদী ব্যতীত (অর্থাৎ তাদের থেকে হেফাজত লাগবেনা)রাবী বলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল সাঃ যদি কেউ খালি ঘরে অবস্থান করে উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে আপনি কি মনে করেন?সে কি এমতাবস্থায় ও তার সতর ঢেকে রাখবে? নবীজী সাঃ প্রতিউত্তরে বললেনঃ আল্লাহ-ই বেশী হক্বদ্বার যে, তাকে লজ্বা করা হবে।(অর্থাৎ তাকে লজ্বা করে সতরকে ঢেকে রাখা হবে)(মিশকাত-৩১১৭)

মুল্লা আলী ক্বারী রাহ বলেনঃ

  (قال فالله) أو ملائكته (أحق أن يستحيا منه)

 وهذا يدل على وجوب الستر في الخلوة إلا عند الضرورة كما سبق -

উক্ত হাদীস প্রমাণ করে যে,বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত একাকী অবস্থায়ও সতর ঢেকে রাখা ওয়াজিব।

কেননা আল্লাহ এবং ফেরেশতাগণকে অবশ্যই লজ্জা করা উচিৎ,এবং লজ্জার ধরুন সতর ঢেকে রাখা উচিৎ।তবে সে সময়ও হিজাব মানে এক চোখ খোলা রেখে সমস্ত চেহারা ঢেকে রাখা ওয়াজিব নয়।

ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া,১৯/২৫৫।

(দারুল ইফতা," জামেয়া ফারুক্বিয়া করাচী" কর্তৃক সত্যায়িত ও সংশোধিত এবং

২৫ ভলিউমে প্রকাশিত)

সুপ্রিয় পাঠকবর্গ!

মহিলাদের জন্য সর্বাবস্থায় মাথা ঢেকে রাখা জরুরী।কারো যদি মাথা ঢাকা না থাকে, আর আযান পড়ার পর আল্লাহর বিধানের কথা স্বরণ হয়,এবং সাথে সাথে মাথাকে ঢেকে নেয়, তাহলে উক্ত উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়।কেননা অন্তত পক্ষে কিছু সময়ের জন্যও তো সে শরীয়তের বিধানকে পালন করেছে।তবে এরকম নিয়ম করা তথা শুধুমাত্র আযানের সময় মাথাকে ঢেকে রাখা আর অন্য সময় খোলা রাখা কখনো উচিৎ নয়।

আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

উত্তর লিখনে

মুফতী ইমদাদুল হক

ইফতা বিভাগ, IOM.

পরিচালক

ইসলামিক রিচার্স কাউন্সিল বাংলাদেশ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 29 views
+1 vote
1 answer 1,150 views
...