আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
184 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (-1 points)
আসসালামু আলাইকুম,

বাংলাদেশের অনেকে আযানের সময় টিভি বা মোবাইলে চলতে থাকা অনুষ্ঠান/খবরের সাউন্ড কমিয়ে দেয় কিন্তু আযানের দোয়া করে না। শুধু চুপ থাকে।

প্রশ্ন:
(১) আযানের সময় দোয়া না পড়ে শুধু চুপ থাকলে বা কোনো কিছুর সাউন্ড কমিয়ে দিলেই কী আযানের প্রতি আদব প্রকাশ পাবে?

(২) কেউ যদি আযানের সময় চুপ না থেকে আগের মতোই নিজ কাজ চালিয়ে যায় এবং দোয়াও না পড়ে তাহলে কী তার কবীরা গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী আজানের সময় চুপ থাকা সুন্নত। একান্ত প্রয়োজন না হলে সাধারণ দ্বিনি ও দুনিয়াবি কথা বা কাজে লিপ্ত থাকা অনুচিত।

 বক্তৃতা বা সেমিনার চলাকালে আজান হলে সাময়িক তা স্থগিত রাখবে। ওয়াজ বা কোনো দ্বিনি মাহফিল চলাকালেও তা সাময়িক বন্ধ রেখে সবাইকে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম। মনে রাখতে হবে, একজন আজানের জবাব দিলে সবার পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায় না। কেননা আজানের জবাব দেওয়া শ্রবণকারী সব মুসলমানের জন্য সুন্নত। আর আজানের জবাব দেওয়া সুন্নতে কেফায়া নয়। (ফাতহুল কাদির : ১/২৪৮, রদ্দুল মুহতার : ১/৩৯৯, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ৫/৪২৭)
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত আযানের সময়  চুপ থাকলে আযানের আদব প্রকাশ পাবে ঠিক তবে  সুন্নাতের খেলাফ হবে।
আযানের সময় টিভি,মোবাইলের সাউন্ড কমিয়ে দিলেই আযানের আদব রক্ষা হয়না,গুনাহের কিছু হলে শুধুমাত্র সাউন্ড কমানো মারাত্মক গুনাহ।  
,
(০২)
রাসুল সাঃ আযানের জওয়াব দেওয়ার আদেশ করেছেন। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا سَمِعْتُمْ النِّدَاءَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ الْمُؤَذِّنُ.

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাযি.) হতে বর্ণিত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখন মুআয্যিন যা বলে তোমরাও তাই বলবে। (বুখারী শরিফ আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৫৮৪)
,
হাদীসে আযানের জওয়াব দেওয়ার পদ্ধতি বলা হয়েছেঃ
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ رَاهَوَيْهِ، قَالَ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، نَحْوَهُ. قَالَ يَحْيَى وَحَدَّثَنِي بَعْضُ، إِخْوَانِنَا أَنَّهُ قَالَ لَمَّا قَالَ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ. قَالَ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ. وَقَالَ هَكَذَا سَمِعْنَا نَبِيَّكُمْ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ.
ইয়াহ্ইয়া (রহ.) হতে এমনই বর্ণিত আছে। ইয়াহ্ইয়া (রহ.) বলেছেন, আমার কোনো ভাই আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, মুআয্যিন যখন حَيَّ عَلَى الصَّلاَةِ বলল, তখন তিনি (মু‘আবিয়াহ (রাযি.)  لاَحَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِবললেন। অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমরা এরূপ বলতে শুনেছি। (বুখারী শরীফ ৬১২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৫৮৬)
,
হাদীস শরীফে আযান পরিবর্তি দোয়ার কথাও বলা হয়েছেঃ  
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَيَّاشٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعَيْبُ بْنُ أَبِي حَمْزَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ النِّدَاءَ اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ، حَلَّتْ لَهُ شَفَاعَتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ".
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আযান শুনে দু‘আ করেঃ ‘হে আল্লাহ্-এ পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত সালাতের মালিক, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে ওয়াসীলা ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী করুন এবং তাঁকে সে মাকামে মাহমুদে পৌঁছে দিন যার অঙ্গীকার আপনি করেছেন’-ক্বিয়ামাতের দিন সে আমার শাফা‘আত লাভের অধিকারী হবে। (বুখারী শরীফ ৫১৪,৪৭১৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৫৮৭)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী আযানের জওয়াব দেওয়া কেহ কেহ সুন্নাত বলেছেন,কেহ কেহ মুস্তাহাব বলেছেন।
ফাতাওয়ায়ে শামীতে এটার বিরোধ নিরসন করা হয়েছে।
বলা হয়েছে যে আযানের জওয়াব মুখে দেওয়া মুস্তাহাব।
আর আমলের মাধ্যমে জওয়াব দেওয়া ওয়াজিব।

অর্থাৎ কাজ বাদ দিয়ে অযু,মসজিদের দিকে গমন,পোশাক  পরধান ইত্যাদির মাধ্যমে নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি নেওয়া ওয়াজিব।
এটাকেই বলা হয় আমলের মাধ্যমে জওয়াব  দেওয়া । 

وفی الشامیۃ (۳۹۶/۱): (قولہ قال الحلوانی ندبا الخ) ای قال الحلوانی ان الاجابۃ باللسان مندوبۃ والواجبۃ ھی الاجابۃ بالقدم

যবান দ্বারা আযানের জওয়াব দেওয়া মুস্তাহাব। চলার মাধ্যমে আযানের জওয়াব দেয়া ওয়াজিব।

★সুতরাং কেহ যদি  আযানের সময় চুপ না থেকে আগের মতোই নিজ কাজ চালিয়ে যায় এবং দোয়াও না পড়ে তাহলে তার কবীরা গুনাহ হবেনা,তবে জামাআত তরক করলে গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...