আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
135 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (14 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকা তুহ্ উস্তায। 

১.আমার বেদ্বীনি পরিবারকে পাত্র সম্পর্কে বর্নানা দেওয়ার পর তারা যতটুকু বুঝেছিলো তার ভিত্তিতে একটা পাত্রের সন্ধান  করে। কিন্তু পাত্র সম্পর্কে জানার পর বুঝতে পারলাম তিনি আমার থেকে কম দ্বীনদ্বার, এ ক্ষেত্রে কি বিয়েতে রাজি হওয়ার উচিত?

২.আমি ২ বছরের মতো সময় হয়েছে হিদায়াত পেয়েছি,আলহামদুলিল্লাহ্। নামাজ আওয়াল ওয়াক্তে পড়া নিয়ে যতটা না সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, তার চেয়ে বেশী সম্মুখীন হয়েছে ঘরের মাঝেও নন-মাহরাম মানতে গিয়ে। পরিস্থিতি এখন অনুকূলে,সবাই আমার বিষয়টা বুঝতে পেরেছে, ঘরের মাঝেও নন-মাহরাম মানতে অসুবিধা হয় না। কিন্তু পাত্রের সাথে কথা বলার সময় তাকে জিজ্ঞেস করায় সে বল্লো সে নন-মাহরাম মেনে চলে না। আমার মনে হয় সে এ সম্পর্কে জানেই না। আমার মা বলে বিয়ের পর বুঝিয়ে নিস? আমি বলি, আল্লাহ ছাড়া কেউ কাউকে হিদায়াত দিতে পারবে না। এখন এ পরিষ্থিতিতে কি আমার এ বিয়েতে রাজি হওয়া উচিত?

৩.আমি কি পাত্রকে বিয়ে সম্পর্কে স্টাডি করার উদ্দেশ্য, "বিয়ের আগে ফ্যান্টাসি নয়, হোক বাস্তব প্রস্তুতি" এই বইটা দিতে পারব? যেন সে আমার বিষয়টা বুঝতে পারে,পর্দা বিষয়ক পরিবেশ আরো যাবতীয়, আমার মা পাত্রকে পছন্দ করেছেন,আর আমার বাবা নেই।,কিন্তু পাত্রকে জিগ্যেস করেছিলাম,আমাকে বিয়ের পর পর্দা রাখতে পারবে কি-না?  তার উত্তর, পর্দা যার যার একান্ত বিষয়,সে যদি মনে করে তার ছেলে,স্বামী, ভাই,বাবাকে নিয়ে জাহান্নামে যাবে, তাহলে সে বেপর্দা হয়ে চলতে পারে!" 

আমাকে পর্দা রাখতে পারবে কি-না এ বিষয়ে কিছুই বলে নাই।

৪.পাত্রের ভাষ্যমতে সে হালাল ইনকাম করে,একটা মাদ্রাসার ম্যানেজারের দায়িত্বে আছে, এ ক্ষেত্রে আমার পক্ষ থেকে এটা সত্য কি-না পরীক্ষা করার সুযোগ নেই মনে হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে কি করনীয়?

৫.পাত্র পক্ষে বলেছে,আমার দুইটা সেলফি দেওয়ার জন্য।  তার মাকে দেখাবে,কারণ তার মা গ্রামে থাকে বরিশাল,আর আমি ঢাকা।তিনি এখন আসতে পারবে না। তাই আগে ছবি দেখতে চাচ্ছে। আপরদিকে আমি ছবিই তুলি না কারণ ছবি তুলা হারাম, আর এভাবে ছবি দেওয়া আমার কাছে সঠিক মনে হচ্ছে না। কারণ যদি বিয়ে না হয় তাহলেও তো ছবিটা ওনাদের কাছে থেকে যাবে,আর নন-মাহরামের সামনে আমার ছবি চলে আসতে পারে।এ ক্ষেত্রে আমি কি করব? আমার মা চাচ্ছে ছবি দিতে, এতে না করায় ওনিও আমার ওপর একটু রাগ হয়ে আছে। 

৬. পাত্রপক্ষ আমাকে দেখতে আসছিলো,তখন আমি পাত্রকে তেমন কিছু জিগ্যেস করতে পারি নাই। তাই কিছুদিন আগে সিদ্ধান্ত নেই,কলে কথা বলব,লাউডস্পিকার অন করে আম্মু পাশে থাকবে যেন ফিতনা না হয়, কিন্তু পাত্রপক্ষ লাউড স্পিকারের কথা জানতে পেরে লাউডস্পিকার অফ করতে বলে, এটা সে পছন্দ করে নি। পরবর্তীতে আমি লাউডস্পিকার অফ করে কথা বলি, পাত্রের দ্বীনদ্বারীতা আর তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য, এতে কি আমার গুনাহ হবে? 

৭.পাত্রের ভালো দিক আছে,যৌতুক নিতে চায় না কিন্তু তাকে জিজ্ঞেস করছিলাম,ইসলামিক বই পড়ে কি-না, কিন্তু তিনি উত্তর দিয়েছেন, আরো কয়েকবছর আগের কবিতার বই পড়ত,কাজী নজরুল ইসলামের, শেখ সাদির বই পড়েছে কিন্তু ইসলামিক বই পড়ে নাই কখনো, আর আমি উল্টো, ইসলামিক বই পড়তে পছন্দ করি। কিন্তু ওনার বই পড়ার তেমন অভ্যাস নাই। এটা কি "কূফু" এর সাথে সম্পর্কিত অমিল? 

1 Answer

0 votes
by (682,000 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


বিবাহের ক্ষেত্রে রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
রাসুলুল্লাহ সাঃ উক্ত হাদীসে বলেছেনঃ
তোমরা ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)।
,
দ্বীনদারির বিষয় প্রাধান দেয়া উচিত।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
(০১)
আপনি শশুর বাড়িতে পূর্ণ পর্দার পরিবেশ পাওয়ার নিশ্চয়তা পেলে,ও আপনি পূর্ণ দ্বীন মেনে চলার নিশ্চয়তা পেলে উক্ত বিয়েতে রাজি হতে পারেন।
,
বিবাহের পর নসিহত করে তাকে পূর্ণ দ্বীনদারির পথে নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন।

(০২)
আপনি শশুর বাড়িতে নিজের জন্য পূর্ণ পর্দার পরিবেশ পাওয়ার নিশ্চয়তা পেলে,ও আপনি পূর্ণ দ্বীন মেনে চলার নিশ্চয়তা পেলে উক্ত বিয়েতে রাজি হতে পারেন।

(০৩)
হ্যাঁ, এই বইটা দিতে পারবেন।

(০৪)
এক্ষেত্রে সমস্যা নেই।

(০৫)
এভাবে ছবি দেয়া কোনোভাবেই জায়েজ হবেনা।

(০৬)
অপ্রয়োজনীয় কথা না বললে গুনাহ হবেনা।

(০৭)
এটা "কূফু" এর সাথে সম্পর্কিত অমিল নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...