হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَعَنْ لَقِيطِ بْنِ صَبِرَةَ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي عَنِ الْوُضُوءِ. قَالَ: «أَسْبِغِ الْوُضُوءَ وَخَلِّلْ بَيْنَ الْأَصَابِعِ وَبَالِغْ فِي الِاسْتِنْشَاقِ إِلَّا أَنْ تَكُونَ صَائِمًا»
লাক্বীত্ব ইবনু সবুরাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে) বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) সম্পর্কে বলুন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, উযূর অঙ্গগুলো পরিপূর্ণভাবে ধুবে। আঙ্গুলগুলোর মধ্যে (আঙ্গুল ঢুকিয়ে) খিলাল করবে এবং উত্তমরূপে নাকে পানি পৌঁছাবে, যদি সিয়াম পালনকারী (রোযাদার) না হও।
(আবূ দাঊদ ১৪২, তিরমিযী ৭৮৮, নাসায়ী ১১৪, ইবনু মাজাহ্ ৪৪৮,মিশকাতুল মাসাবিহ ৪০৫)
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: سَمِعْتُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ لَقِيطِ بْنِ صَبِرَةَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: انْتَهَيْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، وَدَفَعَ الرَّاعِي فِي الْمُرَاحِ سَخْلَةً، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: لاَ تَحْسِبَنَّ، وَلَمْ يَقُلْ: لاَ تَحْسَبَنَّ إِنَّ لَنَا غَنَمًا مِئَةً لاَ نُرِيدُ أَنْ تَزِيدَ، فَإِذَا جَاءَ الرَّاعِي بِسَخْلَةٍ ذَبَحْنَا مَكَانَهَا شَاةً، فَكَانَ فِيمَا قَالَ: لاَ تَضْرِبْ ظَعِينَتَكَ كَضَرْبِكَ أَمَتَكَ، وَإِذَا اسْتَنْشَقْتَ فَبَالِغْ، إِلاَّ أَنْ تَكُونَ صَائِمًا.
আসেম ইবনে লাকীত ইবনে সাবুরা (রহঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (বনু মুনতাফিকের প্রতিনিধি হয়ে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গিয়ে পৌছলাম। রাখাল খোঁয়াড়ে একটি ছাগল ছানা নিয়ে যাচ্ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি ধারণা করো না যে, আমরা এটা তোমার জন্য যবেহ করছি। আমাদের এক শত বকরী আছে। এই সংখ্যা বৰ্দ্ধিত হওয়া আমরা কামনা করি না। অতএব ছাগল ছানাটি নিয়ে এলে আমরা তৎপরিবর্তে একটি বকরী যবেহ করলাম। নবী (সা) তখন যা বলেছেন, তার মধ্যে ছিলঃ তোমার স্ত্রীকে তোমার দাসীর মত মারধর করো না এবং যখন নাক পরিষ্কার করো উত্তমরূপে পরিষ্কার করো, যদি তুমি রোযাদার না হও (আবু দাউদ, আহমাদ,আল আদাবুল মুফরাদ ১৬৫)।
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَبْدِ الْحَكَمِ الْبَغْدَادِيُّ الْوَرَّاقُ، وَأَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ، حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَاصِمَ بْنَ لَقِيطِ بْنِ صَبْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي عَنِ الْوُضُوءِ، . قَالَ " أَسْبِغِ الْوُضُوءَ وَخَلِّلْ بَيْنَ الأَصَابِعِ وَبَالِغْ فِي الاِسْتِنْشَاقِ إِلاَّ أَنْ تَكُونَ صَائِمًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ كَرِهَ أَهْلُ الْعِلْمِ السَّعُوطَ لِلصَّائِمِ وَرَأَوْا أَنَّ ذَلِكَ يُفْطِرُهُ وَفِي الْحَدِيثِ مَا يُقَوِّي قَوْلَهُمْ .
আব্দুল ওয়াহ্হাব ইবনু আব্দুল হাকাম বাগদাদী আল-ওয়াররাক ও আবূ আম্মার হুসাইন ইবনু হুরায়স (রহঃ) ........ লাকীত ইবনু সাবরা তাঁর পিতা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে অযু সম্পর্কে জ্ঞাত করুন। তিনি বললেন, অযু পরিপূর্ণভাবে করবে। আঙ্গুলসমূহের মাঝে খিলাল করবে। খুব উত্তমরূপে নাকে পানি ব্যবহার করবে, তবে সিয়ামরত থাকলে ভিন্ন কথা। - ইবনু মাজাহ ৪০৭, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৭৮৮ [আল মাদানী প্রকাশনী]
ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই হাদিসটি হাসান-সহীহ্। আলিমগণ সিয়াম পালনকারীর জন্য নাক দিয়ে ঔষধ টানা নিষেধ করেছেন। তাঁদের মতে এতে সাওম ভঙ্গ হয়ে যাবে। হাদীছের বিষয়বস্তু তাঁদের এই বক্তব্যকে সমর্থন করে।
(তিরমিজি ৭৮৬)
সুফিয়ান সাওরী রাহ.-এর অভিমত হল, ‘রোযা অবস্থায় কুলি করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে গলার ভেতর পানি চলে গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবে এবং তা কাযা করতে হবে। অযু ফরয নামাযের জন্য হোক বা নফল নামাযের জন্য।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস : ৭৩৮০ আরো দেখুন : ইবনে আবী শাইবা ৯৮৪৪-৯৮৪৭)
,
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-
وَالْمُبَالَغَةُ فِيهِمَا سُنَّةٌ أَيْضًا. كَذَا فِي الْكَافِي وَشَرْحِ الطَّحَاوِيِّ إلَّا أَنْ يَكُونَ صَائِمًا. كَذَا فِي التَّتَارْخَانِيَّة
ভালভাবে গড়গড়া করে কুলি করা, ও ভালভাবে নাকে পানি পৌঁছানো সুন্নত।তবে রোযাদারদের জন্য সুন্নত নয়। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৮)
সুতরাং যদি কোন রোজাদারের রোজার কথা স্মরণ থাকা অবস্থায় গড়গড়া কুলি করতে গিয়ে পেটে পানি চলে যায় তাহলে তার রোযা ভেঙ্গে যাবে। এটা নফল রোজার ক্ষেত্রেও।
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-
تمضمض أو استنشق فدخل الماء جوفه إن كان ذاكرا لصومه فسد صومه وعليه القضاء
কেউ যদি গড়গড়া কুলি অথবা নাকে পানি দিতে গিয়ে পানি পেটের ভিতরে চলে যাই এবং সে রোজাদার তার এ কথা স্মরণ থাকে তাহলে তার রোযা ভেঙ্গে যাবে এবং তার উপরে কাযা করা ওয়াজিব হবে।ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া,১/২৬৫