আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)

আসসালামু আলাইকুম।

এখানে কোনটা সঠিক? এবং কেন? ভুল হওয়ার কারণ কি?

###১.

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ
উত্তরঃ অযু বা গোসলের সময় রোযার কথা স্মরণ থাকা অবস্থায় অনিচ্ছাকৃতভাবে গলার ভেতর পানি চলে গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। লাকিত ইবনে সাবিরা রা.থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

بالغ في الاستنشاق إلا أن تكون صائما

তোমরা (অযু-গোসলে) ভালোভাবে নাকে পানি দাও তবে রোযা অবস্থায় নয়। সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ২৩৬৩ সুনানে তিরমিযী হাদীস : ৭৮৫

সুফিয়ান সাওরী রাহ.-এর অভিমত হল, ‘রোযা অবস্থায় কুলি করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে গলার ভেতর পানি চলে গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবে এবং তা কাযা করতে হবে। অযু ফরয নামাযের জন্য হোক বা নফল নামাযের জন্য।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস : ৭৩৮০ আরো দেখুন : ইবনে আবী শাইবা ৯৮৪৪-৯৮৪৭

এজন্যই ফুক্বাহায়ে কেরামগণ রোজা অবস্থায় গড়গড়ার সহিত কুলি করা মাকরূহ লিখেছেন। কেননা এতে গলার ভিতরে পানি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

অতএব রোজার কথা স্মরণ থাকা অবস্থায় গড়গড়ার সহিত কুলি করা মাকরুহ যদিও পানি গলার ভিতর না যায় চলে গেলে তো রোজা ভেঙ্গেই যাবে।

والله اعلم بالصواب وعلمه واتم و اكمل

 

###২.

প্রশ্ন: (৪২৬) সাওম আদায়কারী কুলি করা বা নাকে পানি নেওয়ার কারণে যদি পেটে পৌঁছে যায়, তবে কি তার সাওম ভঙ্গ হয়ে যাবে?

উত্তর: সাওম আদায়কারী কুলি করা বা নাকে পানি নেওয়ার কারণে যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে পানি পেটে পৌঁছে যায়, তবে তার সাওম ভঙ্গ হবে না। কেননা এতে তার কোনো ইচ্ছা ছিল না। আল্লাহ বলেন, 

 وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ 

“ভুলক্রমে তোমরা যা করে ফেল সে সম্পর্কে তোমাদের কোনো গুনাহ নেই। কিন্তু তোমাদের অন্তর যার ইচ্ছা করে তার কথা ভিন্ন।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫] 
▬▬▬◄❖►▬▬▬
গ্রন্থঃ ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম।
লেখক: শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ لَقِيطِ بْنِ صَبِرَةَ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي عَنِ الْوُضُوءِ. قَالَ: «أَسْبِغِ الْوُضُوءَ وَخَلِّلْ بَيْنَ الْأَصَابِعِ وَبَالِغْ فِي الِاسْتِنْشَاقِ إِلَّا أَنْ تَكُونَ صَائِمًا»

লাক্বীত্ব ইবনু সবুরাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে) বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) সম্পর্কে বলুন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, উযূর অঙ্গগুলো পরিপূর্ণভাবে ধুবে। আঙ্গুলগুলোর মধ্যে (আঙ্গুল ঢুকিয়ে) খিলাল করবে এবং উত্তমরূপে নাকে পানি পৌঁছাবে, যদি সিয়াম পালনকারী (রোযাদার) না হও।
(আবূ দাঊদ ১৪২, তিরমিযী ৭৮৮, নাসায়ী ১১৪, ইবনু মাজাহ্ ৪৪৮,মিশকাতুল মাসাবিহ ৪০৫)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: سَمِعْتُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ لَقِيطِ بْنِ صَبِرَةَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: انْتَهَيْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، وَدَفَعَ الرَّاعِي فِي الْمُرَاحِ سَخْلَةً، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: لاَ تَحْسِبَنَّ، وَلَمْ يَقُلْ: لاَ تَحْسَبَنَّ إِنَّ لَنَا غَنَمًا مِئَةً لاَ نُرِيدُ أَنْ تَزِيدَ، فَإِذَا جَاءَ الرَّاعِي بِسَخْلَةٍ ذَبَحْنَا مَكَانَهَا شَاةً، فَكَانَ فِيمَا قَالَ: لاَ تَضْرِبْ ظَعِينَتَكَ كَضَرْبِكَ أَمَتَكَ، وَإِذَا اسْتَنْشَقْتَ فَبَالِغْ، إِلاَّ أَنْ تَكُونَ صَائِمًا.

আসেম ইবনে লাকীত ইবনে সাবুরা (রহঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (বনু মুনতাফিকের প্রতিনিধি হয়ে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গিয়ে পৌছলাম। রাখাল খোঁয়াড়ে একটি ছাগল ছানা নিয়ে যাচ্ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি ধারণা করো না যে, আমরা এটা তোমার জন্য যবেহ করছি। আমাদের এক শত বকরী আছে। এই সংখ্যা বৰ্দ্ধিত হওয়া আমরা কামনা করি না। অতএব ছাগল ছানাটি নিয়ে এলে আমরা তৎপরিবর্তে একটি বকরী যবেহ করলাম। নবী (সা) তখন যা বলেছেন, তার মধ্যে ছিলঃ তোমার স্ত্রীকে তোমার দাসীর মত মারধর করো না এবং যখন নাক পরিষ্কার করো উত্তমরূপে পরিষ্কার করো, যদি তুমি রোযাদার না হও (আবু দাউদ, আহমাদ,আল আদাবুল মুফরাদ ১৬৫)।

حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَبْدِ الْحَكَمِ الْبَغْدَادِيُّ الْوَرَّاقُ، وَأَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ، حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَاصِمَ بْنَ لَقِيطِ بْنِ صَبْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي عَنِ الْوُضُوءِ، . قَالَ " أَسْبِغِ الْوُضُوءَ وَخَلِّلْ بَيْنَ الأَصَابِعِ وَبَالِغْ فِي الاِسْتِنْشَاقِ إِلاَّ أَنْ تَكُونَ صَائِمًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ كَرِهَ أَهْلُ الْعِلْمِ السَّعُوطَ لِلصَّائِمِ وَرَأَوْا أَنَّ ذَلِكَ يُفْطِرُهُ وَفِي الْحَدِيثِ مَا يُقَوِّي قَوْلَهُمْ .

আব্দুল ওয়াহ্হাব ইবনু আব্দুল হাকাম বাগদাদী আল-ওয়াররাক ও আবূ আম্মার হুসাইন ইবনু হুরায়স (রহঃ) ........ লাকীত ইবনু সাবরা তাঁর পিতা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে অযু সম্পর্কে জ্ঞাত করুন। তিনি বললেন, অযু পরিপূর্ণভাবে করবে। আঙ্গুলসমূহের মাঝে খিলাল করবে। খুব উত্তমরূপে নাকে পানি ব্যবহার করবে, তবে সিয়ামরত থাকলে ভিন্ন কথা। - ইবনু মাজাহ ৪০৭, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৭৮৮ [আল মাদানী প্রকাশনী]

ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই হাদিসটি হাসান-সহীহ্। আলিমগণ সিয়াম পালনকারীর জন্য নাক দিয়ে ঔষধ টানা নিষেধ করেছেন। তাঁদের মতে এতে সাওম ভঙ্গ হয়ে যাবে। হাদীছের বিষয়বস্তু তাঁদের এই বক্তব্যকে সমর্থন করে।
(তিরমিজি ৭৮৬)

সুফিয়ান সাওরী রাহ.-এর অভিমত হল, ‘রোযা অবস্থায় কুলি করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে গলার ভেতর পানি চলে গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবে এবং তা কাযা করতে হবে। অযু ফরয নামাযের জন্য হোক বা নফল নামাযের জন্য।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস : ৭৩৮০ আরো দেখুন : ইবনে আবী শাইবা ৯৮৪৪-৯৮৪৭)
,
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

وَالْمُبَالَغَةُ فِيهِمَا سُنَّةٌ أَيْضًا. كَذَا فِي الْكَافِي وَشَرْحِ الطَّحَاوِيِّ إلَّا أَنْ يَكُونَ صَائِمًا. كَذَا فِي التَّتَارْخَانِيَّة

ভালভাবে গড়গড়া করে কুলি করা, ও ভালভাবে নাকে পানি পৌঁছানো সুন্নত।তবে রোযাদারদের জন্য সুন্নত নয়। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৮)
 
সুতরাং যদি কোন রোজাদারের  রোজার কথা স্মরণ থাকা অবস্থায় গড়গড়া কুলি করতে গিয়ে পেটে পানি চলে যায় তাহলে তার রোযা ভেঙ্গে যাবে। এটা নফল রোজার ক্ষেত্রেও।
 
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-
تمضمض أو استنشق فدخل الماء  جوفه إن كان ذاكرا لصومه فسد صومه وعليه القضاء
কেউ যদি গড়গড়া কুলি অথবা নাকে পানি দিতে গিয়ে পানি পেটের ভিতরে চলে যাই এবং সে রোজাদার তার এ কথা স্মরণ থাকে তাহলে তার রোযা ভেঙ্গে যাবে এবং তার উপরে কাযা করা ওয়াজিব হবে।ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া,১/২৬৫

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এটিই হানাফি মাযহাব সহ অধিকাংশ মাযহাবের মত।
তবে প্রশ্নে উল্লেখিত স্কলারসহ কিছু স্কলারদের এখানে মতবিরোধ রয়েছে। 

তাদের মতানুসারীগণ সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...