আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
429 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
নিচে বর্ণিত এই মেসেজের মাধ্যমে এক তালাকে বায়েন কি আসলেই হয়েছিলো শাইখ?
বর্ণনা: মুযাকারা প্রেক্ষাপটে স্বামী তালাকের নিয়তে এই মেসেজ করেননি। মেসেজের মাধ্যমে স্ত্রীকে জানান "আমাদের এখন সম্পর্ক নেই যেহেতু তুমি চেয়েছিলে।" পরের বাক্যে আলাদা করে স্ত্রীকে লেখেন "শুধু মেসেজ করো।" স্বামী মেসেজ দুটো করেন স্ত্রীর মেসেজের রিপ্লাইতে। স্ত্রী আলাদা আলাদা আলদা  বাক্যে মেসেজ করেছিলেন "গ্রামের বাড়িতে আছি। এখানে ঘন্টায় ঘন্টায় সবাই আমাকে জিজ্ঞেস করছে। আমি বিবাহিত নাকি ডিভোর্সি আমি না বুঝতে পারছি না। আপনার সাথে জরুরি কিছু বিষয়ে কথা ছিলো। আপনি সময় দিলে কল করতাম। আমরা আজই চলে যাব।" স্ত্রীর মনে নিয়ত ছিলো স্বামী আজ কথা বলার সুযোগ দিলে তালাকের আবেদন করবেন না। স্ত্রীর মন নমনীয় ছিলো। কিন্তু স্বামীর রিপ্লাইটা নেগেটিভলি আসে। পূর্বে স্বামী অনেক কথা বলতে চাইলে স্ত্রী কল রিসিভ করতেন না। এড়িয়ে যেতেন৷ স্বামী অনেকভাবে কনভিন্স করতেন। কিন্তু স্ত্রী অনঢ় ছিলেন। আর মেসেজ আদান প্রদানের সময় অনলাইন অফলাইন উভয় প্রেক্ষাপট মুযাকারা ছিলো। পরিবারের সবাই জানতেন স্ত্রী চাইছে বলে বাধ্য হয়ে স্বামী ডিভোর্সের পদক্ষেপ নিচ্ছে। স্বামী স্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের ওনার এই পদক্ষেপের কথা জানিয়েছিলেন। স্বামীর ভাষ্যমতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছিলেন কিন্তু উক্ত মেসেজের মাধ্যমে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন অথবা এমন মেসেজের মাধ্যমে তালাক সাথে সাথে হয়ে যেতে পারে স্বামী এ বিষয়ে অবগত ছিলেন না। আর অনলাইন প্রেক্ষাপটটাতো আগে থেকেই মুযাকারা প্রেক্ষাপট হয়ে আছে যেহেতু স্ত্রী আগে থেকেই ডিভোর্স চেয়ে আসছে। স্বামী স্ত্রীর বহুদিন ফোনে কথা না হলেও প্রায় মেসেজ কনভারসেশনে স্ত্রীর তালাকের আবেদন স্পষ্টত ফুটে উঠত। স্বামী কাবিননামার শর্ত ভঙ্গ করেননি স্ত্রী তাও তালাক চেয়ে আসছিলেন।

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


https://ifatwa.info/45359/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে 
তালাক খুবই মারাত্মক  একটি বিষয়। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

যদি স্বামী তালাক দেয়ার উপর ধমক দিতে থাকে,বা স্ত্রী তালাক চায়,বা সেখানে অন্য কোনো ব্যাক্তি সেই স্বামীকে তালাক দেয়ার উপর উদ্ভুদ্ধ করে,তাহলে সেটিকে তালাকের মজলিস,মুযাকারায়ে তালাক বলা হবে।

মুযাকারায়ে তালাক বা তালাকের মজলিস কাকে বলে?
এ বিষয়ে রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,
"(قَوْلُهُ: وَهِيَ حَالَةُ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ) أَشَارَ بِهِ إلَى مَا فِي النَّهْرِ مِنْ أَنَّ دَلَالَةَ الْحَالِ تَعُمُّ دَلَالَةَ الْمَقَالِ قَالَ: وَعَلَى هَذَا فَتُفَسَّرُ الْمُذَاكَرَةُ بِسُؤَالِ الطَّلَاقِ أَوْ تَقْدِيمِ الْإِيقَاعِ كَمَا فِي اعْتَدِّي ثَلَاثًا وَقَالَ قَبْلَهُ الْمُذَاكَرَةُ أَنْ تَسْأَلَهُ هِيَ أَوْ أَجْنَبِيٌّ الطَّلَاقَ".
( كتاب الطلاق، بَابُ الْكِنَايَاتِ، ٣ / ٢٩٧)

মুযাকারায়ে তালাকের অর্থ হল, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন করা ,অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তির পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন এবং তামান্না করা। এই উভয় প্রকারকে 'মুতালাবায়ে তালাক' নামে অভিহিত করা হয়।তাছাড়া স্বামী যদি ইতিপূর্বে স্ত্রীকে এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকে,তাহলে এদ্বারাও মুযাকারায়ে তালাক প্রমাণিত হবে।এই তৃতীয় প্রকারকে  তাকদীমূল ঈ'কা বলা হয়ে থাকে।(রদ্দুল মুহতার-৩/২৯৭) 

আরো জানুনঃ- 

وَفِي الْفَتَاوَى لَمْ يَبْقَ بَيْنِي وَبَيْنَك عَمَلٌ وَنَوَى يَقَعُ كَذَا فِي الْعَتَّابِيَّةِ. (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل الخامس فى الكنايات-1/376، قاضيخان عى هامش الهندية-1/468، بزازية على هامش الهندية-4/199
সারমর্মঃ-
আমার আর তোমার মাঝে কোনো কাজ নেই,এবং এর দ্বারা তালাকের নিয়ত করলো,তাহলে তালাক পতিত হবে। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী যদি মেসেজে স্পষ্ট বাক্যে তালাকের আবেদন করে থাকে,আর স্বামী যদি সাথে সাথেই মেসেজের রিপ্লাইয়ে "আমাদের এখন সম্পর্ক নেই" বলে থাকে,সেক্ষেত্রে তালাক পতিত হবে।

তালাকের নিয়ত না থাকলেও তালাক পতিত হবে। 

তবে যদি স্ত্রীর তালাকের আবেদনের সাথে সাথে নয়, বরং পরবর্তীতে স্বামী উক্ত বাক্য বলে থাকে,বা স্ত্রী তালাকের আবেদনই না করে থাকে,সেক্ষেত্রে উক্ত বাক্য বলার সময় স্বামীর তালাকের নিয়ত না থাকায় প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (5 points)
উস্তায যদি উক্ত মেসেজের সময় পরিস্থিতি অনুযায়ী স্বামীর মনে তিন তালাকের একটা সংকল্প থাকে যে স্ত্রীকে একসাথে তিন তালাক দিয়ে দিবেন ভাবছেন বা ভেবেছেন অথবা কদিন পর দিবেন কিন্তু এই মেসেজের মাধ্যমেই তিন তালাক দিয়েছেন বিষয়টা এমন না হয় তাহলে কি এক তালাক হবে নাকি তিন তালাক? স্ত্রীর সাথে স্বামীর খালওয়াতে সহীহা হয়নি।
by (675,600 points)
এক্ষেত্রে এক তালাক হবে।
by (5 points)
edited by
১। উস্তায এটা কি দিয়ানাতান তালাক হবে? 

২। কাযান আর দিয়ানাতান তালাকের মধ্যে পার্থক্য কী? কাযান হলে তাকে প্রকৃতপক্ষে তালাক হিসেবে ধরা হবে না বিষয়টা কি এমন?

৩। প্রশ্নে উল্লেখিত সুরত কি স্ত্রীর তালাকের আবেদনের মধ্যে পড়বে উস্তায? 

স্ত্রী আগে থেকেই তালাক চেয়ে চেয়ে আসছিলেন। কিন্তু স্ত্রীর যে মেসেজগুলোর প্রেক্ষিতে স্বামী সিন করে উক্ত রিপ্লাই দেন সেখানে তো স্ত্রী আমাকে ডিভোর্স দিন বলেনি স্বামীকে। মেসেজগুলোতে বলেছে উনি কাউকে কিছু বলতে পারছেন না। উনি বুঝতে পারছেন না উনি আসলেই ডিভোর্সি নাকি বিবাহিত। স্বামীর সাথে কলে কথা বলার সুযোগ চেয়েছেন। কিন্তু স্বামী রিপ্লাই দেন "আমাদের এখন সম্পর্ক নেই যেহেতু তুমি চেয়েছিলে "। পরের বাক্যে স্ত্রীকে লেখেন 
"শুধু মেসেজ করো।" স্বামীর তালাকের মনোভাব ছিলো। উনি সবাইকে বলেছিলেন ডিভোর্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ডিভোর্স দিয়ে দিবেন। কিন্তু তখনও দেননি। হতে পারে উক্ত মেসেজের মাধ্যমে স্ত্রীকে ইত্তিলা করেছিলেন। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...