আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
507 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
edited by
শাইখ নিচের প্রশ্নগুলো একটার সাথে আরেকটি সম্পর্কিত। একই দম্পতিকে নিয়ে। প্রেক্ষাপট একই।

১। খালওয়াতে সহীহা না হলে স্বামীর অগোচরে অজান্তে স্বামীর মেসেজের দ্বারা মুযাকারা প্রেক্ষাপটে কেনায়া বাক্যে এক তালাকে বায়েন পতিত হলে এর কয়েকদিন পর স্বামী রেজয়ী তালাকের নোটিশ পাঠালে এবং নোটিশ পাঠানোর পর স্বামী মৌখিকভাবে ৩ তালাক দিলে এবং স্ত্রীকে পরবর্তীতে এই তিন তালাক দেয়ার কথা ইমেইলে জানান যে, "তোমাকে ৩ তালাক দিয়েছি"। এই স্ত্রীর জন্য কি কেনায়া বাক্যর এক তালাক বায়েন এর পর পরবর্তীতে দেয়া তিন তালাক প্রযোজ্য হবে?

উস্তায রেজয়ী তালাকের নোটিশটা সাধারণ টাইপ করা। প্রতিপক্ষ হিসেবে স্ত্রীর নামের বানানে ভুল ছিলো। যেমন আফিয়া তানহার জায়গায় আফিয়া তাসনিম এমন। তবে বাবা মায়ের নাম ঠিকানা সঠিক ছিল। নোটিশ দাতা হিসেবে স্বামীর নামের বানানেও কিনচিৎ ভুল ছিলো। যেমন মাহমুদ হুজাইফার জায়গায় মাহমুদ হুযাইফা। তবে মা বাবার নাম ঠিকানা সঠিক ছিলো। নোটিশটা কাউন্সিলর বরাবর ছিলো। আরও লেখা ছিলো.. সম্পর্কের অবর্গতা দূর করার সব রকম চেষ্টায় ব্যর্থ হইয়া সম্পর্ক ছিন্ন করার মনস্থ করিয়াছি।..কাবিন নামার শর্ত ভঙ্গ করায় ও নানা কারণ বশত গভীর চিন্তা করিয়া বাধ্য হইয়া প্রতিপক্ষকে রেজিস্ট্রিকৃত তালাকের রেজাই গ্রহণ করিলাম।..এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনার নিকট কপি প্রেরণ করিলাম৷ প্রতিপক্ষের নিকটও ইহার নকল প্রেরণ করিলাম। নিচে সাক্ষীর কোনো অপশন ছিলো না। নিচে তালাক দাতার স্বাক্ষর আর তারিখের অপশন ছিলো। স্বামী তালাক দাতার স্বাক্ষরের সামান্য নিচে তারিখ বরাবর সাইন দেন। তবে স্ত্রীর কাছে প্রেরিত কপিটা আসল ছিলো সাইনটা ফটোকপির ছিলো না। এছাড়া অন্য কোনো স্ট্যাম্প বা সিল কিছু ছিলো না।

২। উস্তায এরূপ নোটিশ যেখানে উপরে বড় করে তালাকের নোটিশই লেখা। নোটিশ দাতা হিসেবে স্বামী এবং প্রতিপক্ষ হিসেবে স্ত্রী। কিন্তু নোটিশের মধ্যে লেখা প্রতিপক্ষকে রেজিস্ট্রিকৃত তালাকের রেজাই গ্রহণ করিলাম লেখা। কিন্তু লেখাটা প্রদান করিলাম হবে না উস্তায যেহেতু স্বামী স্ত্রীকে নোটিশ দিচ্ছে। স্বামী যদি নোটিশ তালাকের জন্য নিজে তৈরি করে বা সাইন করে স্ত্রীকে পাঠান বা স্ত্রী তালাক চেয়েছে বলে ভয় বা শুধরানোর জন্যই পাঠান এবং সবাইকে জানান নোটিশ পাঠিয়েছেন তালাকের তাহলে কি এই উদ্যোগ গ্রহণের জন্যই তালাক পতিত হয়ে যাবে এক বায়েন তালাক হিসেবে? নোটিশের মধ্যে নির্দিষ্ট তালাকের সংখ্যার উল্লেখ নেই। নোটিশে আরও লেখা প্রতিপক্ষ আমার স্ত্রী ছিলো বটে কিন্তু..... ইত্যাদির জন্য সম্পর্ক ছিন্ন করার মনস্থ করিয়াছি।... প্রতিপক্ষকে রেজিস্ট্রিকৃত তালাকের রেজাই গ্রহণ করিলাম।

[ পরবর্তীতে স্ত্রী জানতে চান নোটিশের এইসকল মিসটেকের ব্যাপরে স্বামীর কাছে ইমেইলে। স্বামী জানান এগুলো প্রিন্টিং মিসটেক। ওনার মনে তিন তালাকের সংকল্প ছিলো। স্ত্রীকে স্বামী কবে তালাক দিয়েছেন এটা স্বামীকে অন্য কেউ জিজ্ঞেস করলে স্বামী ওনাদেরও বলেন নোটিশে ফাইনালি সাইন যেদিন করেন সেদিনের কথা। আর বলেন একবারে তিন তালাক দিয়েছেন। আরও বলেন এর আগে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কাগজপত্র গুচ্ছাচ্ছিলেন। কিন্তু নোটিশে তিন তালাকের উল্লেখ নেই। রেজিস্ট্রিকৃত তালাকের রেজাই তিন তালাকেরই হয় স্বামী এটা ধরে নিয়ে তিন তালাকের সংকল্প করে স্ত্রীকে নোটিশ পাঠান নাকি তখন জেনে বুঝেই উক্ত ভুলগুলো সম্পর্কে অবগত থেকেই স্ত্রীকে নোটিশ পাঠান স্ত্রীকে শুধরাতে বিষয়গুলো পরিষ্কার নয়৷ যদিও পরবর্তীতে স্ত্রী স্বামীর কাছে ইমেইলে জানতে চাইলে উনি বলেন এগুলো প্রিন্টিং মিসটেক। উনি মনে তিন তালাকের সংকল্প করেছিলেন। মনে সংকল্প করলে কেন তাহলে তিন তালাকের নোটিশ করেননি আর প্রিন্টিং মিসটেকগুলো কি ইচ্ছেকৃত ছিলো নাকি অনিচ্ছাকৃত তাও অজানা। তবে অনিচ্ছাকৃত প্রিন্টিং মিসটেক করবেন আর ওগুলো ঠিক না করে ওভাবেই স্ত্রীকে পাঠাবেন যদি সত্যিই উনি তিন তালাকের নিয়তে নোটিশ স্ত্রীকে পাঠান কিন্তু নোটিশেও উল্লেখ করবেন না তিন তালাকের কথা এটা কেমন যেন বিশ্বাস হতে চায় না। যেখানে নোটিশ উনি নিজে সাইন করে বিদেশ থেকে সরাসরি পাঠিয়েছেন স্ত্রীকে। কেউ জানতে চাইলে বলেছেন নোটিশ যেদিন সাইন করে পাঠিয়েছেন সেদিনই তালাক দিয়েছেন। নোটিশ পাঠানোর আগে, পরে উনি সবাইকে জানিয়েছিলেন যে উনি স্ত্রীকে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠাবেন এবং পাঠিয়েছেন। তিন তালাকের বিষয়ে স্ত্রী অন্য কারো মাধ্যমে পরবর্তীতে জানতে চাইলে তাকে বলেছেন একবারে তিনটা দিয়েছেন আগে কোনো এক তালাক দেননি আর তালাক দিয়েছেন যেদিন নোটিশ পাঠান সেদিন। কিন্তু স্ত্রীর মনে সংশয় কাজ করে স্ত্রী ধারণা করেন নোটিশ পাঠানোর আগে বা নোটিশ পাঠানোর সময় স্বামী তিন তালাক মুখ বলেননি। মুখে উচ্চারণ করেছেন হয়তো আরও কিছুদিন পর। হতে পারে নোটিশ পাঠানোর আরও প্রায় ২০ দিন পর। স্ত্রী জানতে চান পরবর্তীতে স্বামীর কাছে ইমেইলে নোটিশ পাঠানোর সময়ই তিন তালাক বলেছিলেন কিনা। স্বামী রিপ্লাই দেন নোটিশ পাঠানোর সময় তিন তালাক উচ্চারণ করেননি। কিছুদিন পর উচ্চারণ করেছেন। কোন দিন কয় তারিখ জানতে চেয়েছিলেন স্ত্রী কিন্তু স্বামী জানাননি। স্ত্রী আরও জানতে চান নোটিশ পাঠানোর সময় মনে তিন তালাকের সংকল্প থাকলে নোটিশে কেন উল্লেখ করেননি কিন্তু স্বামী কোনো রিপ্লাই দেননা। ]

উস্তায আপনাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো আমার তালাকের নোটিশের ছবিটা যদি আবারও দেখতেন ইন শা আল্লাহ।

৩। উস্তায আমি একটা লেখায় পেয়েছিলাম স্বামী যখন নিজে তালাকের নোটিশ তৈরি করতে উদ্যোগী হন বা কাউকে স্ত্রীর জন্য নোটিশ করতে বলেন এবং সবাইকে জানান স্ত্রীকে নোটিশ পাঠাচ্ছেন বা পাঠিয়েছেন তখনই তালাক পতিত হয়ে যায় লেখকের লেখার অপেক্ষার বা স্বামীর সাইনের বা স্ত্রীর কাছে পৌঁছানোর অপেক্ষার প্রয়োজন হয় না। আর তালাক পতিত হয় নোটিশে যে সংখ্যার উল্লেখ থাকে তার ওপর। নির্দিষ্ট সংখ্যা না থাকলে এক তালাক হয় যদিও স্বামীর মনে তিন তালাকের সংকল্প থাকে। বা নোটিশ স্ত্রীকে শুধরাতে বা ভীতির জন্যই করা হোক না কেন। আমি কি এটা সঠিক জানি উস্তায? উক্ত নোটিশের যে বিষয়টা নোটিশের মধ্যে তো আবার লেখা রেজিস্ট্রিকৃত তালাকের রেজাই গ্রহণ করিলাম সেটা যে কারণেই লেখা হোক। আর স্বামী যদি মনে এরূপ ভেবে থাকেন রেজিস্ট্রিকৃত তালাক তো তিন তালাকেরই হয় আলাদাভাবে উল্লেখ করার দরকার নেই। তাহলেও কি তালাক হলে এক তালাক হবে? তাহলে কি স্বামীর নিয়ত, মনের ভাবনা, স্বীকারোক্তি ইত্যাদির ওপর কয় তালাক এবং তালাক পতিত হওয়া না হওয়া নির্ভর করবে? ঐ সময়ে স্বামীর মনের ইত্যাদি ভাবনা তো অজানা। স্বামী তো বিস্তারিত খোলামেলাভাবে প্রকাশ করছেন না।

৪। উস্তায স্বামী যদি তালাকের বিষয়ে কোনো কারণে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় বা প্রকৃতপক্ষে মূল ঘটনা বা নিয়তকে এড়িয়ে পরবর্তীতে অন্য কথা বলে এক্ষেত্রে হুকুম কী? তালাকের বিষয়ে স্বামীর পরবর্তীতে বলা ভাষ্যর ভিত্তিতে হুকুম হবে নাকি তালাকের সময় প্রকৃত নিয়ত আর হালতের ভিত্তিতে হুকুম হবে?

৫। উস্তায খালওয়াতে সহীহা যার নেই তার জন্য কোনো দুই তালাক নেই। হয় এক নাহয় তিন তালাক। আমার এই বুঝটা কি সঠিক? সে তালাক স্বামীর অজান্তে কেনায়া বাক্যর মাধ্যমেই হোক আর যেভাবেই হোক এরূপ স্ত্রীর জন্য যেকোনো তালাক হলে সবসময় বায়েন হবে। এরপর স্পষ্ট বা অস্পষ্ট যেভাবেই তালাক হোক তা আর প্রযোজ্য হবে না খালওয়াত না থাকার জন্য।

৬। অনেকে বলেন স্বামীর অজান্তে কিভাবে তালাক হয়। স্বামীও তো ঐ বাক্যর মাধ্যমে নিয়ত করে তালাক দেননি স্বীকার করেছেন। তালাকের মনোভাবে ছিলেন। তালাক দিয়ে দিবেন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। হয়তো ইত্তিলা করেছিলেন। বা রাগ, ক্ষোভ, বা কয়দিন পর যে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দিবেন, নোটিশ পাঠাবেন স্ত্রীর চাওয়া অনুযায়ী সেজন্য স্ত্রীকে আগাম সতর্ক করেছিলেন। বা হয়তো ঐ বাক্য বলার মাধ্যমে বুঝতে চাইছিলেন স্ত্রীর মনোভাব পরিবর্তন হয় কিনা। কিন্তু তাও তালাক হবে তালাকের আলোচনা আর পরিস্থিতি, প্রেক্ষাপটের জন্য। স্ত্রীর ওরকম মেসেজের রিপ্লাইতে ওরকম বাক্য বলাতে যা দ্বারা তালাকের আবেদন রদ করা যায় না এজন্য? কিন্তু স্বামী যদি অস্বীকার করেন উনি ঐ বাক্যর মাধ্যমে তালাক দেননি তখন? তাও কি দিয়ানাতান তালাক হবে উস্তায?

৭। উস্তায যে স্ত্রীর খালওয়াতে সহীহা নেই তার উদ্দেশ্যে স্বামী একবারে বা একসাথে তিন তালাকের নিয়তে মুখ দিয়ে যদি এভাবে উচ্চারণ করেন ১,২,৩ অথবা ৩ টা অথবা ৩ বার তালাক দিলাম অর্থাৎ মুখ দিয়ে বলায় যদি ৩ দ্বারা আলাদা আলাদা সংখ্যা প্রকাশ পায় বা ৩ তালাক দিলাম এভাবে না বলে ৩ টা /৩ বার বলায় শব্দের ভাঙ্গন প্রকাশ পায় তাহলে কি ১ তালাক পতিত হয়ে স্ত্রী বায়েনা হয়ে যাবে?

৮। উস্তায স্বামী নিজে একাকী মুখে তালাক দেয়া বা তিন তালাক দেয়া আর স্বাক্ষী রেখে বা স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে তালাক দেয়া বা তিন তালাক দেয়ার মাঝে কি কোনো পার্থক্য আছে? একটা হাদিসে যে আছে স্বাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক বৈধ নয় এই ব্যাপারটা নিয়ে জানতে চাচ্ছিলাম। তাহলে তালাকের কোনো স্বাক্ষী না থাকলে বা স্বামী একা তালাক দিলে কেউ সেই তালাকের বিষয়ে না জানলে তালাক হবে না বিষয়টা কি এমন?

৯। উক্ত স্বামী স্ত্রী কি পারবে হালালা ব্যতীত পুনরায় বিয়ে করতে?

কেনায়া বাক্যর মেসেজের প্রেক্ষাপটঃ

 উস্তায স্ত্রী কয়েক মাস আগে থেকেই তালাক চেয়ে চেয়ে আসছিলেন। পারিবারিকভাবে সবাই যখন জানছে স্ত্রীর তালাক চাওয়া এবং স্ত্রীর চাওয়া অনুযায়ী স্বামীর তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া এই বিষয়ে সবাই নানা কথা বলছিলো। আলোচনা চলছিলো। স্বামীও নিজের এবং স্ত্রীর পরিবারের সবাইকে জানিয়েছিলেন তালাক দিয়ে দিবেন। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে তিক্ততা চলে এসেছিলো। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেও কথপোকথন হতো না। নিচের বর্ণিত মেসেজ আদান প্রদানের পূর্বের ১০/১২ আগের সর্বশেষ স্বামী স্ত্রীর হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেও তালাকের আলোচনা ছিলো স্ত্রীর তালাক চাওয়া এবং স্বামীর তালাকের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এই নিয়ে। তবে স্বামী নিতে বর্ণিত রিপ্লাই এর মত পূর্বে কখনও নেগেটিভ কোনো রিপ্লাই স্ত্রীকে দেননি। পজিটিভলি দেয়ার চেষ্টা করতেন। চুপ থাকতেন সবর করতেন নয়ত অন্যভাবে রিপ্লাই দিলেও তাতে স্ত্রীকে সংশোধনের জন্য  সতর্কতা হিসেবে উপদেশমূলক পজিটিভ রিপ্লাই থাকত। কিন্তু নিচের স্ত্রীর মেসেজর রিপ্লাইটাই স্বামী প্রথম নেগেটিভলি দেন। গ্রামের বাড়িতে বসে অনেক দিন পর নিজের থেকেই স্ত্রী হোয়াএসঅ্যাপ মেসেজে বাক্যগুলো বলেন। আর স্বামী ওভাবে রিপ্লাই দেন। স্বামী মূলত ইংরেজিতে দিয়েছিলেন রিপ্লাই (We have no relationship now as you wanted. left the text only). স্ত্রী বাংলাতেই মেসেজ করেছিলেন নিচের মত আলাদা আলাদা বাক্যে। তবে স্ত্রী সরাসরি আমাকে ডিভোর্স দেন। কেন দিচ্ছেন না বলেননি বা সরাসরি ডিভোর্স চাননি। যেহেতু আগে থেকেই ডিভোর্স চেয়ে আসছিলেন তাই সবাই যে জানতে চাইছে স্বামী কি সত্যিই ফাইনাল ডিসিশন নিয়ে স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে দিচ্ছেন। স্ত্রীর একটা বিশ্বাস ছিলো উনি যতই চান ওনার স্বামী হয়তো ওনাকে কখনও ডিভোর্স দিতে পারবেন না। স্বামী আসলেই কি করছেন স্বামীর মনোভাব জানতেই স্ত্রী মেসেজ করেছিলেন আর মনে মনে ভেবেছিলেন স্বামী যদি সত্যিই দেশে আসতে পারেন তাহলে কন্টিনিউ করবেন। স্বামীকে এটা বলবেন উনি কথা বলার সুযোগ দিলে। আর যাই হোক নেগেটিভ কিছু বলবেন না। তাই গ্রামে সবাই যে স্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইছেন। স্ত্রীকে বলছেন কেন ডিভোর্স চেয়েছে। তাদের সম্পর্কের কথা জানতে চাচ্ছিলেন। স্বামীও ডিভোর্স দিয়ে দিবে স্ত্রী যেহেতু চায় তাই। এজন্য একরকম আক্ষেপ নিয়ে স্বেচ্ছায় স্বামীকে মেসেজ করে বোঝাতে চাচ্ছিলেন ওনার অবস্থা যে উনি কি আসলেই এখনো বিবাহিত নাকি ডিভোর্সি কিছু বুঝতে পারছেন না। যদিও এই পরিণতি স্ত্রী নিজেই ডেকে এনেছেন। স্ত্রীই দায়ী এজন্য।

১০। নিচে বর্ণিত এই মেসেজের মাধ্যমে কি দিয়ানাতান তালাক হয়েছিলো উস্তায? এক তালাকে বায়েন কি আসলেই হয়েছিলো?

১১। কাযান আর দিয়ানাতান তালাকের মধ্যে পার্থক্য কী? কাযান হলে তাকে প্রকৃতপক্ষে তালাক হিসেবে ধরা হবে না বিষয়টা কি এমন?

বর্ণনা: মুযাকারা প্রেক্ষাপটে স্বামী তালাকের নিয়তে এই মেসেজ করেননি। মেসেজের মাধ্যমে স্ত্রীকে জানান "আমাদের এখন সম্পর্ক নেই যেহেতু তুমি চেয়েছিলে।" পরের বাক্যে আলাদা করে স্ত্রীকে লেখেন "শুধু মেসেজ করো।" স্বামী মেসেজ দুটো করেন স্ত্রীর মেসেজের রিপ্লাইতে। স্ত্রী আলাদা আলাদা বাক্যে মেসেজ করেছিলেন "গ্রামের বাড়িতে আছি। এখানে ঘন্টায় ঘন্টায় সবাই আমাকে জিজ্ঞেস করছে। আমি কি করব বুঝতে পারছি না। আমি কাউকে কিছু বলতেও পারছি না। আমি বিবাহিত নাকি ডিভোর্সি আমি না কিছু বুঝতে পারছি না। আপনার সাথে জরুরি কিছু বিষয়ে কথা ছিলো। আপনি সুযোগ দিলে কল করতাম। আমরা আজই চলে যাব।" স্ত্রীর মনে নিয়ত ছিলো স্বামী আজ কথা বলার সুযোগ দিলে তালাক চাওয়ার ব্যাপারে অটল থাকা বা সম্পর্ক কন্টিনিউ না করার দৃঢ় মনোভাব প্রকাশ করবেন না। স্বামী কথা বলার সুযোগ দিলে ভেবেছিললন স্বামীকে বলার চেষ্টা করবেন যদি স্বামী দেশে আসেন তাহলে কন্টিনিউ করবেন। আর যাই হোক বৈবাহিক সম্পর্ক কন্টিনিউ না করার দৃঢ় মনোভাব পরিহার করে কথা বলার চেষ্টা করবেন।স্ত্রীর মন নমনীয় ছিলো।

স্ত্রী মেসেজ করার কিছুক্ষণ পরেই স্বামী সিন করেন এবং রিপ্লাই দেন হোয়াটসঅ্যাপে। ওনাদের কথোপকথন হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজের মাধ্যমেই হত। স্বামীর রিপ্লাইটা নেগেটিভলি আসে। পূর্বে স্বামী অনেক কথা বলতে চাইলে স্ত্রী কল রিসিভ করতেন না। এড়িয়ে যেতেন৷ স্বামী অনেকভাবে কনভিন্স করতেন। কিন্তু স্ত্রী অনঢ় ছিলেন। আর মেসেজ আদান প্রদানের সময় অনলাইন অফলাইন উভয় প্রেক্ষাপট মুযাকারা ছিলো। পরিবারের সবাই জানতেন স্ত্রী চাইছে বলে বাধ্য হয়ে স্বামী ডিভোর্সের পদক্ষেপ  নিচ্ছে আর অনলাইন প্রেক্ষাপটটাতো আগে থেকেই মুযাকারা প্রেক্ষাপট হয়ে আছে যেহেতু স্ত্রী আগে থেকেই ডিভোর্স চেয়ে আসছে। স্বামী স্ত্রীর ফোনে কথা না হলেও প্রায় মেসেজ কনভারসেশনে স্ত্রীর তালাকের আবেদন স্পষ্টত ফুটে উঠত। স্বামী কাবিননামার শর্ত ভঙ্গ করেননি স্ত্রী তাও তালাক চেয়ে আসছিলেন।

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
وَاعْلَمْ أَنَّ أَصْحَابَنَا - رَحِمَهُمُ اللَّهُ - أَقَامُوا الْخَلْوَةَ الصَّحِيحَةَ مَقَامَ الْوَطْءِ فِي حَقِّ بَعْضِ الْأَحْكَامِ دُونَ الْبَعْضِ فَأَقَامُوهَا فِي حَقِّ تَأَكُّدِ الْمَهْرِ وَثُبُوتِ النَّسَبِ وَالْعِدَّةِ وَالنَّفَقَةِ وَالسُّكْنَى فِي هَذِهِ الْعِدَّةِ وَنِكَاحِ أُخْتِهَا وَأَرْبَعٍ سِوَاهَا وَحُرْمَةِ نِكَاحِ الْأَمَةِ عَلَى قِيَاسِ قَوْلِ أَبِي حَنِيفَةَ وَمُرَاعَاةِ وَقْتِ الطَّلَاقِ فِي حَقِّهَا وَلَمْ يُقِيمُوهَا مَقَامَ الْوَطْءِ فِي حَقِّ الْإِحْصَانِ وَحُرْمَةِ الْبَنَاتِ وَحِلِّهَا لِلْأَوَّلِ وَالرَّجْعَةِ وَالْمِيرَاثِ، وَأَمَّا فِي حَقِّ وُقُوعِ طَلَاقٍ آخَرَ فَفِيهِ رِوَايَتَانِ وَالْأَقْرَبُ أَنْ يَقَعَ.
«تبيين الحقائق شرح كنز الدقائق وحاشية الشلبي» (2/ 144)
জেনে রাখা ভালো যে, হানাফি ফকিহগণ খালওয়াতে সহিহাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত গণ্য করেন, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না।হানাফি ফকিহগণ মহর, সন্তানের নসব, ইদ্দত এবং ভরণপোষন, উক্ত স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করা, এবং এ স্ত্রী ব্যতীত আরো চারটি বিয়ে করা বা বাদি বিয়ে করা এর ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন। তবে সিফাতে এহসান সাব্যস্ত হওয়া , উক্ত স্ত্রীর মেয়ে হারাম হওয়া, এবং ঐ স্ত্রী তার পূর্বে তিন তালাক প্রদানকারী স্বামীর জন্য হালাল হওয়া, এবং রাজআত, ও মিরাছের ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না। এক তালাকের পর অন্য তালাক পতিত হওয়ার ক্ষেত্রে কি গ্রহণযোগ্য?  সে সম্পর্কে উলামাদের মতবিরোধ তাকলেও গ্রহণযোগ্য মত হল, উক্ত খালওয়াতের কারণে এক তালাকের পরবর্তী তালাক পতিত হবে।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
খালওয়াতে সহীহা এবং সহবাস না হলে কোনো ইদ্দতকাল না থাকলে স্বামীর অগোচরে অজান্তে স্বামীর মেসেজের দ্বারা মুযাকারা প্রেক্ষাপটে কেনায়া বাক্যে এক তালাকে বায়েন পতিত হলে এর কয়েকদিন পর স্বামী রেজয়ী তালাকের নোটিশে সাইন করলে এবং স্পষ্টত স্বামী নিজে একা মৌখিকভাবে একসাথে ( ৩ তালাক দিলাম/দিচ্ছি /দিয়েছি) বললে এবং স্ত্রীকে  "তোমাকে ৩ তালাক দিয়েছি" এই মেসেজ করলে তিন তালাকও পতিত হবে।

(২) ইদ্দতকাল না থাকায় কেনায়া বাক্যের ঐ এক বায়েন তালাকের পর স্পষ্ট শব্দে হলে তখন তালাক পতিত হবে।

(৩) উক্ত স্বামী স্ত্রী হালালা ব্যতীত পুনরায় বিয়ে করতে পারবে না।

(৪) জ্বী,এক তালাক বায়েন হয়েছিলো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।
by (590,550 points)
মুহতারাম!
আপনি কি জানতে চান?

by (5 points)
reshown by
সম্মানিত উস্তায আমাদের খালওয়াতে সহীহা হয়নি। আপনি কলের মাধ্যমে পরে আমাকে বলেছিলেন এক তালাক হবে তিন তালাক পতিত হবে না। কিন্তু আমি তো আপনার সাথে কলে কথা বলার আগে এই প্রশ্নগুলো করেছিলাম আর এখানে তো উত্তরে আপনি বলেছেন তিন তালাক পতিত হবে। এজন্য  আগে যে আরেকটা প্রশ্ন করেছিলাম যেটাতে প্রাসঙ্গিক এই বিষয়টা আসলে উত্তরে উস্তায ওলি উল্লাহ বলেছিলেন তিন তালাক পতিত  হবে না সেটার লিংক শেয়ার করেছিলাম আপনার উত্তরের কমেন্টে । আফওয়ান উস্তায। 
by (590,550 points)
আপনি একেকবার একেকভাবে বললে উত্তরে ভিন্নতা থাকবে।সুতরাং আপনি একটি কাগজে লিখে ঐ প্রশ্নটি শুধুমাত্র একজন মুফতিকেই জিজ্ঞাসা করবেন।
by (5 points)
edited by
জ্বী উস্তায। একভাবেই তো লিখেছিলাম উস্তায। "খালওয়াতে সহীহা এবং সহবাস না থাকলে" এভাবেই তো লিখেছি উস্তায এখানে। কিন্তু আপনি তো এখানে লিখেছেন তিন তালাক পতিত হবে। এজন্য বুঝতে পারতেছিলাম না। ব্যাখা দেখেও মনে হয়েছে পতিত হবে না কিন্তু তাও আপনি যেহেতু লিখেছেন এজন্য মনে হয়েছে অন্য কোনো বিষয় হয়তো থাকতে পারে তাই। আরও একটা প্রশ্নের উত্তরে লিখেছিলেন খালওয়াতে সহীহা এবং সহবাস কিছুই না হলে এক তালাকে বায়েন হবে। এর পর স্পষ্ট শব্দে তালাক দিলে সেটাও পতিত হবে। কিন্তু আমার প্রশ্নগুলো একই না হলেও মেসেজ, নোটিশ, মুখে বলা ইত্যাদি বিষয়গুলোর বিস্তারিত বিভিন্ন দিক জানতে বার বার একই প্রসঙ্গ এসেছে ডিটেইলস ব্যাখ্যা লেখায়। তখন দেখলাম উত্তরগুলো দুই রকম। উপরে উস্তাযদের নামের ওখানে দেখলাম আপনি আর ওলি উল্লাহ উস্তায আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছেন। কনফিউজড হয়ে যাই তাই। এজন্য আমি কমেন্টে আপনাদের উত্তরের লিংকগুলো শেয়ার করেছিলাম কোনটা সঠিক বুঝতে। আমি তো মূল বিষয় সবসময় একই রেখে প্রশ্ন করেছিলাম প্রাসঙ্গিক অন্যান্য আরও বিষয়গুলো জানতে। কিন্তু তাও উত্তরে ভিন্নতা দেখে বুঝতে পারছিলাম না। পরে কমেন্টের রিপ্লাই না পেয়ে আমি আপনাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা করছিলাম ফোনে বা অন্য কোনো মাধ্যমে বিস্তারিত। হটলাইনে আপনার আর ওলি উল্লাহ উস্তাযের নাম্বার দেয়া নেই। কিন্তু ifatwa সাইটেই আপনার নামের সাইনের ওপর টাচ দেয়ার পর আপনার বিস্তারিত প্রফাইল শো করে আর ওখানে একটা হোয়াটসঅ্যাপ লিংক পাই ফিমেইলদের। তখন লিংকের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে আমি আপনার সাথে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করি। 
by (590,550 points)
আপনার সাথে মুবাইলে কথা বলতে চাই।
by (590,550 points)
আমাকে ওয়াটসাফে আবার নক দিবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...