আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
302 views
in পবিত্রতা (Purity) by (30 points)
আসসালামু ওয়ালাইকুম শায়খ,
#আমার প্রতিমাসে নিয়মিত সঠিক ডেটেই পিরিয়ড হয় এবং পিরিয়ডের সময় ৬ষ্ঠ দিন পর্যন্ত ব্লিডিং হয় এবং ৭ম দিনে সাদাস্রাব আসে অত:পর ৭ম দিন থেকেই সালাত শুরু করি।

#কিন্তু এ মাসে পিরিয়ড এর ৭ম দিনে কোনো সাদাস্রাব দেখতে পাই নি তবে কোনো লাল/হলুদ স্রাব ও দেখতে পাইনি,টিস্যু দিয়ে চেক করে পরিষ্কার পেয়েছি। তাই অভ্যাসবশত ভালো হয়ে গেছে ভেবে ৭ম দিনেই পবিত্রতা অর্জন করে সালাত, সাওম,কোরআন তেলাওয়াত শুরু করি।

#৯ম দিনে আছরের ওয়াক্তে আবার হালকা লাল বর্নের স্রাব দেখতে পাই অত:পর তার ঘন্টাখানেক পরে পরিষ্কার  টিস্যু দেখে আবার পবিত্রতা অর্জন করে সকল এবাদত শুরু করি।কিন্তু প্রতিবার পিরিয়ড শেষে যেমব সাদাস্রাব দেখতে পাই তেমন কিছুই দেখতে পাইনি

#৯ম দিন আছরের ওয়াক্তে লাল স্রাব দেখার পর আর কোনো লাল/সাদাস্রাব কিছু আসেনি,১০ দিন ১০ রাত পূর্ণ হবার পর ১১ তম দিন দুপুরে পরিষ্কার সাদাস্রাব দেখতে পাই তারপর আবার ফরজ গোসল করে দুপুর থেকে সালাত আদায় করি।উল্লেখ যে, আমার ইতোপূর্বে কখনোই অনিয়মিত পিরিয়ড/ইস্তেহাজা র রোগ ছিল না

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে-

১)আমি আসলে কতদিন পর্যন্ত হায়েজ গণনা করব ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা।সর্বোচ্চ সীমা ১০দিন ১০ রাত কিন্তু আমার ত ১১ তম দিনে দুপুরে সাদাস্রাব আসল যা ইতোপূর্বে কখনোই হয় নি।

২)আমি ত অভ্যাসগত ভাবে ৭ম দিন থেকে সালাত এবং ৮ম দিন থেকেই সাওম পালন করছি,আমার এই আমল গুলো কি সব বরবাদ?রোজা গুলো কি পুনরায় কাজা করতে হবে?

৩)আমি ত ভালো হয়ে গেছি ভেবে ৮ম দিন থেকেই কোরয়ান স্পর্শ করে তেলাওয়াত করেছি এতে কি আমার গুনাহ হবে?

৪)পরবর্তী মাসে আমি সাদাস্রাব আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করব নাকি অভ্যাসমত ৭ম দিন থেকেই সব সালাত, সাওম শুরু করব?আর সাদাস্রাবের জন্য সর্বোচ্চ কতদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব??
by (30 points)
মাঝে মাঝে বিভিন্ন মেয়েলি/গোপনীয় ব্যাপার যেসব কথা পুরুষদের বলা যায়না এমন প্রয়োজনে অফিসের পুরুষ স্যারের কাছ থেকে ২/৩ ঘন্টায় ছুটি নিতে হয়,সেক্ষেত্রে যদি শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নেই তবে কি আমার মিথ্যা বলার গুনাহ হবে??
by (565,890 points)
না,এক্ষেত্রে মিথ্যা বলার গুনাহ হবেনা।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে। 
উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা।
(কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)

তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)
,

أن النساء کن یبعثن بالکرسف إلی عائشۃ رضی اللہ تعالیٰ عنھا فکانت تقول : لا حتی ترین القصۃ البیضاء‘‘ ( المؤطأ للإمام مالک : ۱/۵۹۱ ،  : مصنف ابن عبد الرزاق، حدیث نمبر : ۱۱۵۹ )
সারমর্মঃ আয়েশা সিদ্দিকা রাঃ সেই সমস্ত মহিলাদের বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা দেখিতে না পাও। 
,
আরো জানুনঃ
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে, 
"৯ম দিনে আছরের ওয়াক্তে আবার হালকা লাল বর্নের স্রাব দেখতে পাই অত:পর তার ঘন্টাখানেক পরে পরিষ্কার টিস্যু দেখে আবার পবিত্রতা অর্জন করে সকল এবাদত শুরু করি"

সুতরাং ৯ম দিন আসর পর্যন্ত আপনার হায়েজ হয়েছে বলে ধরে নিবেন।

এক্ষেত্রে  ঘন্টাখানেক দ্বারা কি উদ্দেশ্য?  
আসরের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগেই পরিষ্কার টিস্যু দেখে থাকলে আপনি ৯ম দিন আসরের ওয়াক্ত থেকেই নামাজ আদায় করবেন।

আর যদি মাগরিবের ওয়াক্তে পরিষ্কার টিস্যু দেখে থাকেন,সেক্ষেয় আপনি ৯ম দিন মাগরিবের ওয়াক্ত থেকে নামাজ আদায় করবেন।

দশদিন পরেও যদি এমন কিছু আসে,তাহলে সেটিকে ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা ধরা হবে। 
আরো জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
আপনি ৯ দিন হায়েজ গণনা করবেন।
এক্ষেত্রে ৯ম দিন আসরের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগেই পরিষ্কার টিস্যু দেখে থাকলে আপনি ৯ম দিন আসরের ওয়াক্ত থেকেই নামাজ আদায় করবেন।

আর যদি ৯ম দিন মাগরিবের ওয়াক্তে পরিষ্কার টিস্যু দেখে থাকেন,সেক্ষেয় আপনি ৯ম দিন মাগরিবের ওয়াক্ত থেকে নামাজ আদায় করবেন।

(০২)
হ্যাঁ, রোযা গুলির কাজা আদায় করতে হবে।
আমল গুলি বরবাদ হলেও আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ছওয়াব দিবেন,ইনশাআল্লাহ, তিনি আপনাকে নিরাশ করবেননা।

(০৩)
আপনি আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নিবেন।
অনিচ্ছাকৃত হওয়ায় আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ক্ষমা করবেন।

(০৪)
আপনি পরবর্তী মাসে হায়েজ বন্ধ হওয়ার অপেক্ষা করবেন।
সাদা স্রাব না আসলেও যদি হায়েজ আসা বন্ধ হয়,তাহলেই গোসল করে নামাজ আদায় শুরু করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...