আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
304 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
retagged by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ
বই এর ভিতর কোন ছবি থাকলে তার জন্য কি সমস্যা হবে?বাসায় মানুষের কোন ছবি যদি উল্টানো থাকে তাহলে সমস্যা হবে? ছবি কোন কোন অবস্থানে থাকলে নামায হবে না আর রহমতের ফেরেশতারা আসবে না?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
 بسم الله الرحمن الرحيم 

ঘরে প্রাণীর ছবি, প্রতিকৃতি, ইত্যাদি সংরক্ষণ করা হারাম। যে ঘরে এসব থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। 

যেমন:
আবু তালহা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ، وَلَا صُورَةٌ
“ফেরেশতাগণ ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর অথবা ছবি থাকে। (সুনানে আন-নাসায়ী হা/৫৩৪৭-সহিহ)

ইবনে ‘আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রী মাইমূনাহ রা. আমার নিকট বর্ণনা করেন:
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: জিবরাঈল আলাহিস সালাম আমার সাথে রাতে সাক্ষাত করার ওয়াদা করেছিলেন কিন্তু সাক্ষাত করেননি।
অতঃপর তাঁর মনে পড়লো যে, আমাদের খাটের নীচে একটি কুকুর ছানা আছে। তিনি এটাকে বের করে দিতে আদেশ দিলে তা বের করা হলো। অতঃপর তিনি নিজেই পানি দিয়ে সে স্থানটা ধুয়ে ফেলেন।
এরপর জিবরাঈল আ. তাঁর সাথে সাক্ষাতের সময় বললেন: “যে ঘরে কুকুর এবং ছবি থাকে সে ঘরে আমরা কখনো প্রবেশ করি না।”
সকালবেলা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুকুর মারতে আদেশ দিলেন। এমনকি ছোট বাগান পাহারার কুকুর হত্যা করারও আদেশ দেন, বড় বাগানের পাহারাদার কুকুর ছাড়া।
(সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: পোশাক-পরিচ্ছেদ, অনুচ্ছেদ-৪৭ ছবি সম্পর্কে, হা/৪১৫৭-সহিহ)

عن على رضى الله تعالى عنه قال صنعت طعاما فدعوت النبى صلى الله عليه و سلم فجاء فدخل فراى سترا فيه تصاوير فخرج وقال ان الملكئة لا تدخلو بيتا فيه تصاوير .

অর্থঃ হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত| তিনি বলেন, আমি খাদ্য তৈরী করে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দাওয়াত দিলাম| হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসে, ঘরে প্রবেশ করে প্রাণীর ছবিযুক্ত একটি পর্দা দেখে, ঘর হতে বের হয়ে গেলেন| এবং বললেন, “নিশ্চয়ই ফেরেশতারা ঐ ঘরে প্রবেশ করেননা, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে|”

[ নাসাঈ শরীফ ২/ ৩০০ ]


★ছবি যুক্ত ঘরে নামাজ পড়া মাকরুহ।
নামাযীর মাথার উপর সামনে ডানে, বায়ে এবং জুতোর মধ্যে এবং সিজদার স্থানে প্রাণীর ছবি থাকলে নামায মাকরূহ তাহরিমী হবে|
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
عن انس رضى الله تعالى عنه قال كان قر ام لعائشة سترت به جانب بيتها , فقال النبى صلى الله عليه وسلم اميطى عنى لا تزال تصاوير. تعرض لى فى صلاتى.

অর্থঃ হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত| তিনি বলেন, হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার একখানা (প্রাণীর ছবিযুক্ত) পর্দা ছিল, যা তিনি উনার ঘরের এক পাশে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন| হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললেন, “হে হযরত ছিদ্দিকা আলাইহাস সালাম পর্দাটি আমার থেকে দূরে সরিয়ে নিন| কারণ এর ছবিগুলো নামাযে আমার দৃষ্টি ও মন আকৃষ্ট করে।” [ বুখারী শরীফ ২/ ৮৮১,ফাতহুল বারী ১০/ ৩৯১]

عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال لا يصلى فى بيت فيه تماثيل.

অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, “ঐ ঘরে নামায পড়োনা যে ঘরে প্রাণীর মূর্তি বা ছবি থাকে|” 
[ মুছান্নিফ ইবনে আবী শায়বা ২/ ৪৬ ]

عن عيسى بن حميد رحمة الله عليه قال عقبة الحسن فال ان فى مسجدنا ساحة فيها تصاوير انحروها.

অর্থঃ হযরত ঈসা বিন হুমাইদ রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত| তিনি বলেন, হযরত ওকবাতুল হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আমাদের মসজিদে প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা কাপড় রয়েছে| তখন হযরত ঈসা বিন হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, তুমি (মসজিদ থেকে) ওটা সরিয়ে ফেল|

[ মুছান্নিফ ইবনে আবী শায়বা ২/ ৪৬ ]

عن ابى عشمان رحمة الله عليه قال حدثنى لبابة عن امها وكانت تخدم عثمان بن عفان ان عثمان بن عفان كان يصلى الى تابوت فيه تماثيل فامر به فحك.

অর্থঃ হযরত আবু উসমান রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত| তিনি বলেন, লুবাবাহ উনার মাতা হতে আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, উনার মাতা হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খেদমতে ছিলেন, আর হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু প্রাণীর ছবিযুক্ত একটি সিন্দুকের দিকে নামায পড়ছিলেন| অতঃপর হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আদেশে ওটা নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হলো।

[মুছান্নিফ ইবনে আবী শায়বা ২/ ৪৬ ]

ويكره لبس ثوب فيه تمثال روح. وان يكون فوق رأسه او بين يديه او بحذائه ان يمنة او يسرة او محل سجود.

অর্থঃ প্রাণীর ছবিযুক্ত কাপড় পরিধান করে নামায পড়া মাকরূহ তাহরিমী এবং নামাযীর মাথার উপর সামনে ডানে, বায়ে এবং জুতোর মধ্যে এবং সিজদার স্থানে প্রাণীর ছবি থাকলে নামায মাকরূহ তাহরিমী হবে|

[ রদ্দুল মুহতার ১/৬৪৮, ফতওয়ায়ে আলমগীরী ১/ ১১৯, খুলাছাতুল ফতওয়া ১/৫৮]

ويكره ان يكون فوق رأسه فى السقف او بين يديه او بحذائه تصاوير او صورة معلقة. واشدها كراهة ان تكون امام المصلى ثم من فوق راسه. ثم على يمينه ثم على شماله ثم خلفه.

অর্থঃ নামায মাকরূহ তাহরিমী হবে যদি নামাযীর মাথার উপর, ছাদের মধ্যে অথবা জুতোর মধ্যে অথবা ঝুলন্ত অবস্থায় প্রাণীর ছবি থাকে এবং নামায শক্ত মাকরূহ তাহরিমী হবে প্রাণীর ছবি নামাযীর সামনে বা মাথার উপরে বা ডানে বা বায়ে বা পেছনে থাকলে|

[ ফতহুল কাদীর ১/ ৩৬২, বাহরুর রায়িক ২/ ২৭]
.
★প্রশ্নে উল্লেখিত  বইয়ের ভিতরে ছবি থাকলে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।   
তবে ছোট বাচ্চাদের বই ব্যতিত অন্যান্য বইয়ে ছবি জায়েজ নয়।
,
কিছু উলামায়ে কেরামদের মতে ছোট বাচ্চাদের বইয়েও ছবি জায়েজ নয়।

★ বাসায় মানুষের কোন ছবি যদি উল্টানো থাকে তাহলে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।
উল্টো রাখা অবস্থায় সেই ঘরে ফেরেশতাও প্রবেশ করবে। 
,
★ঘরে ছবি থাকলে নামাজ হবেনা,বিষয়টি এমন নয়,নামাজ হয়ে যাবে,তবে মাকরুহে তাহরিমি হবে।   
তবু নামাজির পিছনের দিকে ছবি থাকলে নামাজ মাকরুহ হবেনা।  
,
★প্রানীর ছবি যদি উল্টানো না থাকে,প্রকাশ্য খোলা থাকে,তাহলে সেই ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করবেনা।
তবে এটি ঢাকা থাকলে বা উল্টানো থাকলে ফেরেশতা প্রবেশ করবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...