আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
372 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
ছাত্র অবস্থায় আমাদের বিয়ে হয়েছে।যে যার বাড়িতে থাকি এবং আলাদা জায়গায় পড়াশোনা করি।আলহামদুলিল্লাহ আমি এবং আমার স্ত্রী পরস্পরের উপর সন্তুষ্ট। পারিবারিক ভাবে আমাদের বিয়ে দিলেও শ্বশুর শ্বাশুড়ি  ছাত্র অবস্থায় বিয়েটা একটু খারাপ চোখে দেখে।বিয়ের পরও মেয়ের পড়ালেখার খরচ দেওয়াটা তারা মন থেকে মেনে নিতে পারে না। আর আমার পক্ষেও তার পড়াশোনার খরচ দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্ত আমরা দুইপক্ষই মনে করি পড়াশোনা চালায়ে যাওয়া জরুরি। আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ির সাথে একদম মন থেকে বাবা মায়ের মতই আচরন করার চেষ্টা করি।কিন্তু ইদানিং তারা নিজ থেকে আমার তেমন খোজ খবর নেয় না।যে মানুষ দুজনকে বাবা মা বলে ডাকি তাদের এমন আচরন মেনে নিতে কষ্ট  হয়।আমার করনীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (708,560 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনারা তারাতারি বিয়ে করেছেন,এটা অবশ্যই প্রশংসনীয়।নিজ ঈমান আমলকে উত্তম ত্বরিকায় হেফাজতের মাধ্যমই বিয়ে।

বিয়ে সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
(يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ ، مَنْ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ ، وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ)
হে যুবকদের দল! তোমাদের মধ্যে যারা সামর্থবান,তারা যেন বিয়ে করে নেয়।কেননা বিয়ে চক্ষুকে নিচু রাখে এবং লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে।আর যাদের বিয়ের সামর্থ্য নেই তারা যেন রোযা রাখে।কেননা রোযা ঢাল স্বরূপ।(সহীহ বোখারী-১৯০৫,সহীহ মুসলিম-১৪০০)

নিজ পিতা মাতা আর শাশুড় শাশুড়ীর সম্মান ও মর্যাদা শরীয়তে সমান নয়।নিজ মায়ের পায়ের নিচে বেহেস্ত।তবে শাশুড়ীর পায়ের নিচে বেহেশত নয়।প্রত্যেক মানুষের সবচেয়ে উত্তম ব্যবহারের একমাত্র অধিকারী তার মা অতপর তার বাবা।মা এবং বাবার আদেশকে মান্য করা ওয়াজিব।তবে শশুড় শাশুড়ীর আদেশকে মান্য করা ওয়াজিব হবে না।
ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ লিখেন,
ويلزم الإنسان طاعة والديه في غير المعصية وإن كانا فاسقين ، وهو ظاهر إطلاق أحمد ، وهذا فيما فيه منفعة لهما ولا ضرر ، فإن شق عليه ولم يضره : وجب ، وإلا فلا 
গোনাহের কাজ ব্যতীত মুবাহ কাজে,মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা ওয়াজিব।যদি তার ফাসিকও হয়।এটা তখন যখন তাতে মাতাপিতার ফায়দা থাকবে,এবং সন্তানের জন্য ক্ষতিকারক হবে না।যদি সন্তানের উপর কষ্টদায়ক হয় তবে ক্ষতিকারক না হয়, তাহলে তখন মাতাপিতার আদেশ মান্য করা ওয়াজিব।(আল-ফাতাওয়াল কুবরা-৫/৩৮১)

আল্লামা হাসক্বাফী রাহ লিখেন,
لَا يَحِلُّ سَفَرٌ فِيهِ خَطَرٌ إلَّا بِإِذْنِهِمَا. وَمَا لَا خَطَرَ فِيهِ يَحِلُّ بِلَا إذْنٍ وَمِنْهُ السَّفَرُ فِي طَلَبِ الْعِلْمِ
যে সফরে ক্ষতির আশংকা থাকবে সে সফর মাতাপিতার অনুমতি ব্যতীত বৈধ নয়।আর যে সফরে ক্ষতির সম্ভাবনা নাই,সে সফর মাতাপিতার অনুমতি ব্যতীত বৈধ।এর মধ্যে একটি হলো,ইলম অন্বেষণের জন্য সফর করা।অর্থাৎ ইলম অর্জনের জন্য সফর করা মাতাপিতার অনুমতি ব্যতীত ও বৈধ।

যেহেতু স্বামী স্ত্রী একজন অপরজনের অতি আপনজন,তাই একে অন্যর পিতামাতাকে আপন করে নেয়াই উচিৎ ও কাম্য।কেননা এদ্ধারা নিজের পারস্পারিক মহব্বত অটুট থাকবে।এবং ভালবাসা দীর্ঘস্থায়ী হবে।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রত্যেকেই সে তার শাশুড় শাশুড়ীর সাথে উত্তম আচরণ করকে।তাদেরকে সম্মান করবে।যদি শাশুড় শাশুড়ী কারো উপর নারাজ হয়, তাহলে এর জন্য তার উপর শাশুড় শাশুড়ীর পক্ষ্য থেকে কোনো বদ-দু'আর প্রভাবিত পড়বে না যদি তারা দিয়ে থাকে।

আপনি আপনার শাশুড় শাশুড়ীর সাথে সাধ্যমত উত্তম ব্যবহার অভ্যাহত রাখুন।এটাই আপনার জন্য কল্যাণকর।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...