আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
230 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)

মুহতারাম,

আসসালামু আলাইকুম।

আমি একজন ২৭ বছর বয়স্ক নারী, সাধ্যমত ইসলামী শরীয়ত মেনে চলার চেষ্টা করি। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে পারিবারিকভাবে জনৈক ব্যক্তির সাথে আমার বিবাহের আক্বদ সম্পন্ন হয়। আমার বিবাহের মোহরানা ১২,৫০,০০০/- (বার লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা ধার্য করা হয়, যার মধ্যে আনুমানিক ১ লাখ টাকা গহনা বাবদ আক্বদের সময় আদায় করা হয়। বাকি মোহরানার কিছু অংশ পাত্রপক্ষ বিবাহের অনুষ্ঠানের সময় পরিশোধ করবে বলে জানায়, তবে অনুষ্ঠান কবে করবে তার কোন তারিখ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। আক্বদের পর থেকেই স্বামী তার ইচ্ছায় আমার বসবাসস্থলে অর্থাৎ আমার বাবার বাসায়  সপ্তাহে ১/২ দিন আসতো (যেহেতু সে আমাকে তার নিজ গৃহে উঠিয়ে নেয় নাই) ও রাতে থাকতো, এবং এ পর্যায়ে শুরু থেকেই সে আমার সাথে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক করে। তবে আক্বদের পর থেকেই তার গুরুতর চারিত্রিক সমস্যা এবং সংশ্লিষ্ট অনৈসলামী ও অনৈতিক কার্যকলাপ ধরা পড়ে। প্রায় পাঁচ মাস তাকে বুঝানোর বহু চেষ্টা করেছি, কিন্তু সে শুধরাতে অস্বীকৃতি জানায়। এই অবস্থায় নিরুপায় হয়ে আমি পারিবারিকভাবে আলোচনা করে তার থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। যদিও এতে আমার এবং আমার পরিবারের সামাজিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে প্রচুর ক্ষতি হবে, তার সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই কারণ একজন চরিত্রহীন, ইসলামবিরোধী কার্যকলাপে প্রতিনিয়ত অভ্যস্ত ব্যক্তির সাথে স্বামী-স্ত্রীর পবিত্র সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয়। 

আমার বিবাহের কাবিননামার ১৮ নং পয়েন্টে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল। সেই প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এই মাসের শুরুতে অর্থাৎ বিবাহের প্রায় ছয় মাস পরে পারিবারিক সিদ্ধান্তে আমি নিজের উপর “তালাকে তাফউইজ” বা অর্পিত তালাক কার্যকর করেছি এবং বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কাজি অফিসের মাধ্যমে আমি আমার স্বামীকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছি।

এমনতাবস্থায় মেহেরবানি করে নিচের প্রশ্নগুলোর শরীয়তসম্মত বিস্তারিত উত্তর প্রদান করলে বাধিত হবঃ  

১) আমি জানি, সাধারণ অবস্থায় স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেয়ার সময় বিশেষ নিয়মে তিন বার দিতে হয়। এখন আমার ক্ষেত্রে স্বামীকে প্রদত্ত তালাকে তাফউইজ এর নোটিশটি কি তিন তালাকের সমতুল্য? যদি না হয়, তাহলে কখন এবং কিভাবে ২য় ও ৩য় তালাক অর্পন করতে হবে?

২) আমরা জেনেছি যে, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী তালাকে তাফউইজ এর নোটিশ পাঠানোর তিন (০৩) মাস পর তালাকটি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। আমার প্রশ্ন হল, ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী আমার নিজের উপর অর্পিত তালাকটি কি অনতিবিলম্বে অর্থাৎ এখনই কার্যকর হয়েছে, নাকি তিন মাস পর কার্যকর হবে?

৩) এই তিন মাসের মধ্যে আমার উপর ইসলামী কী কী বিধিবিধান আরোপযোগ্য হবে? যেমন, আমি প্রয়োজনে (মেডিকেল কলেজে ক্লাস করার জন্য) বাইরে যেতে পারব কিনা?

৪) আমি স্বল্প জানামতে, “খুলা তালাক” হলে স্ত্রীকে দেয়া মোহরানা স্বামীকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে এটি “খুলা তালাক” নয়, বরং স্বামীর চারিত্রিক দোষের কারণে স্বামী কর্তৃক প্রদত্ত তালাক নেয়ার ক্ষমতাবলে স্ত্রী নিজের উপর তালাক আরোপ করেছেন (ইতোমধ্যে স্বামী তার স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন)। এমতাবস্থায় শরীয়তমতে স্ত্রী কি স্বামীর কাছ থেকে অনাদায়কৃত মোহরানা দাবি করতে পারেন? অর্থাৎ আমি কি তার কাছে শরীয়ত মোতাবেক আমার মোহরানার অনাদায়কৃত টাকা দাবি করতে পারি? 

উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর বিস্তারিত উত্তর লিখিত আকারে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব। আপনার উত্তরের জন্য আল্লাহ্‌ আপনাকে উত্তম জাযা দান করুন, আমিন। 

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
তালাক প্রদান করা সম্পূর্ণ স্বামীর অধীকার। হ্যা শরীয়ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্ত্রীকে নিজের উপর তালাক প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে। যেমন,স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক প্রদানের অনুমতি প্রদান করলে,স্ত্রী নিজেকে তালাক দিতে পারবে। তাছাড়া স্বামী খোরপোষ না দিলে,স্ত্রী কাযী সাহেবের নিকট অভিযোগ দায়ের করতে পারবে। কিংবা স্বামী নিখোঁজ হলে বা ধ্বজভঙ্গ হলে কোর্ট বিবাহ ভঙ্গের রায় দিতে পারবে।

স্বামীর খোঁজখবর না থাকলে স্ত্রী চার বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। চার বছর অপেক্ষার পরও যদি স্বামীর কোনো খোঁজখবর না মিলে,কোর্ট স্বামীর পক্ষ্য থেকে বিবাহ ভঙ্গ করে দিবে।স্ত্রী তালাক দিতে পারবে না।তালাক দেয়ার অধীকার স্ত্রীর নেই। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/4506


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
তালাক গ্রহণের সময় আপনি যদি এক তালাক বা দুই তালাক কিংবা তিন তালাক, এমন কিছু উল্লেখ না করেন, তাহলে তালাক গ্রহণ করলাম দ্বারা এক তালাক পতিত হবে। এবং তিন মাস পর ঐ এক তালাক বায়েন হয়ে যাবে। তিন মাস পর আপনি যে কোনো জায়গায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন।

(২)
তিনমাস পরই আপনার তালাকটি কার্যকর হবে।

(৩)
আপনি যেহেতু স্বামীর বাড়ীতেই যাননি, তাই আপনি আপনার বাবার বাড়ীতেই অবস্থান নিবেন। এবং বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ীর বাইরে যাবেন না। মেডিকেল কলেজে ক্লাস করার জন্য যেতে পারবেন।তবে রাতে বাড়ীতেই থাকার চেষ্টা করবেন। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/104


(৪)
এটা খুলা তালাক নয়।বরং তাফবীযে তালাক। সুতরাং মহরকে ফিরিয়ে দিতে হবে না। তালাকের অধিকার দেয়া না থাকলে, তখন স্ত্রী যদি স্বামীকে মালের বিনিময়ে তালাক দিতে বলে, তাহলে সেটাকেই খুলা তালাক বলে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...