আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
88 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
edited by
১.অজু ছাড়া মোবাইলে কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে?

২. অজু ছাড়া (মুসহাফ) কুরআন না ধরে পড়া যাবে? "সহজ কুরআন" নামের একটা কিতাব আছে, যেখানে ৪৭টি সুরা রয়েছে, অজু ছাড়া সেটা ধরা যাবে?সুরা পড়া যাবে?
৩.সবসময় কুরআন হাতে নিয়ে বসে তেলাওয়াত করার সুযোগ হয়ে উঠেনা, অলসতা বা ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয়না। তাই জানতে চাই শুয়ে-বসে-দাঁড়িয়ে বা যখন যেভাবে ইচ্ছা (খতম ছাড়া বা খতমের নিয়তে) মোবাইলে কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে?

৪. মাত্র কয় পারার জন্য রমজানে কুরআন খতম হচ্ছেনা এমন কারোর এক/দুই পারা কুরআন পড়ে দিতে পারব?যাতে তার খতম দিতে সুবিধা হয়

৫.মোবাইলে কারীদের শুরু থেকে একদম শেষ পর্যন্ত(ফাতিহা-নাস) কুরআন তেলাওয়াত শুনলে সোয়াব পাব? রমজান মাসের মধ্যে পুরো কুরআন তেলাওয়াত শুনে শেষ করলে কেমন সওয়াব পাব উস্তাদ?

৬.হায়েজ অবস্থায় রাতে মুখস্ত বা মোবাইলে দেখে সুরা মুলক,ওয়াকিয়া সহ অন্যান্য আমলি সুরা পড়া যাবে?

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
কাগজে লিখিত আমাদের সামনে বিদ্যমান কুরআন সম্পর্কে উলামায়ে কেরামগণ বলেন,এ মুসহাফ-কে অজু ব্যতীত স্পর্শ করা জায়েয হবে না।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/793

মুবাইল স্কীন বা অধুনা নব আবিস্কৃত যন্ত্রের স্কীনে ভেসে থাকা কুরআন কি আমাদের সামনে বিদ্যমান মুসহাফের মত?
এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম বলেন,স্কীনে ভেসে থাকা কুরআন,আর আমাদের কাছে বিদ্যমান কুরআনের মুসহাফ, উভয়টা সমান নয়।কেননা স্কীনে ভেসে থাকা কুরআন একবার আসে আবার চলে যায়।সে হিসেবে আমাদের সামনে বিদ্যমান কুরআনের যে হুকুম, সেই হুকুম স্কীনে ভেসে থাকা কুরআনকে দেয়া যাবে না।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! 
বিনা অজুতে মুবাইল স্কীনে ভেসে থাকা কুরআনে কারীম-কে স্পর্শ জায়েয কি না? এ সম্পর্কে এতটুকুই বলা যায় যে,উলামায়ে কেরাম স্কীনে ভেসে থাকা কুরআনকে বাস্তবিক কুরআনের হুকুম দেননা।
শায়েখ আব্দুর রহমান আল-বার্রাক দাঃবা কে স্কীনে ভেসে থাকা কুরআন সম্পর্কে জিজ্ঞাস করা হয়েছিলো।প্রতিউত্তরে তিনি বলেছিলেন,
জানা কথা যে,মূখস্থ থেকে কুরআনে কারীমকে তেলাওয়াত করার জন্য হাদাসে আসগর থেকে পবিত্র হওয়া শর্ত নয়।বরং হাদাসে আকবর থেকে পবিত্র হলেই চলবে।তবে যদিও শর্ত নয় তথাপি হাদাসে আসগর থেকে নিজেকে পবিত্র করে নেয়াটাই উত্তম।কেননা এটা আল্লাহর কালাম।সুতরাং সম্মানের তাকাযা হল,অপবিত্র অবস্থায় কুরআনকে তেলাওয়াত না করা চায় হাদাসে আসগরই হোকনা কেন? 
তবে আমাদের সামনে মুসহাফকে স্পর্শ করার জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্ত হলো,পবিত্র হওয়া।কেননা হাদীসে মাশহুরে এসেছে-
( ﻻ ﻳﻤﺲ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ ﺇﻻ ﻃﺎﻫﺮ )
কোনো অপবিত্র ব্যক্তি কুরআনকে স্পর্শ করতে পারবে না।
তাবেঈন তাবে-তাবেঈন এবং সমস্ত উলামাদের কাছ থেকে এটাই বর্ণিত রয়েছে।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
হাদাসে আকবর থেকে অপবিত্র অবস্থায় স্কীনে ভেসে থাকা কুরআন-কে স্পর্শ করা 
কখনো জায়েয হবে না।আর হাদাসে আসগরের সময়ও কোনে মুসলমানের জন্য স্পর্শ করা কাম্য হতে পারে না।বরং স্পর্শ করাটটা সম্পূর্ণই অনুচিৎ বলে বিবেচিত হবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/145


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) অজু ছাড়া মোবাইলে কুরআন তেলাওয়াত করা অনুত্তম।

(২) অজু ছাড়া (মুসহাফ) কুরআন না ধরে পড়া যাবে। "সহজ কুরআন" নামের যে কিতাবের কথা আপনি বলেছেন, যেখানে ৪৭টি সুরা রয়েছে, অজু ছাড়া সেই কিতাব ধরা যাবে না। তবে না ধরে সুরা পড়া যাবে।

(৩)শুয়ে-বসে-দাঁড়িয়ে বা যখন যেভাবে ইচ্ছা (খতম ছাড়া বা খতমের নিয়তে) মোবাইলে কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে। তবে আদবের সাথে সম্মান দিয়ে কুরআন তিলাওয়াত করাই উত্তম।

(৪দ) এক/দুই পারা কুরআন পড়ে সওয়াব যে কাউকে বখশিয়ে দেয়া যাবে।তবে কারো খতম সম্পন্ন করার কোনো নিয়ম নাই।

(৫)মোবাইলে কারীদের শুরু থেকে একদম শেষ পর্যন্ত(ফাতিহা-নাস) কুরআন তেলাওয়াত শুনলে সওয়াব তো অবশ্যই পাবেন। রমজান মাসের মধ্যে পুরো কুরআন তেলাওয়াত শুনে শেষ করলে আরো বেশী সওয়াব পাবেন।তবে তিলাওয়াত করার মত সওয়াব পাবেন না।

(৬)হায়েজ অবস্থায় রাতে মুখস্ত বা মোবাইলে দেখে সুরা মুলক,ওয়াকিয়া সহ অন্যান্য আমলি সুরা পড়া যাবে না। হ্যা, দু'আর নিয়তে চার কুল, সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত, সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত ইত্যাদি পড়তে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...