ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
কাগজে লিখিত আমাদের সামনে বিদ্যমান কুরআন সম্পর্কে উলামায়ে কেরামগণ বলেন,এ মুসহাফ-কে অজু ব্যতীত স্পর্শ করা জায়েয হবে না।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/793
মুবাইল স্কীন বা অধুনা নব আবিস্কৃত যন্ত্রের স্কীনে ভেসে থাকা কুরআন কি আমাদের সামনে বিদ্যমান মুসহাফের মত?
এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম বলেন,স্কীনে ভেসে থাকা কুরআন,আর আমাদের কাছে বিদ্যমান কুরআনের মুসহাফ, উভয়টা সমান নয়।কেননা স্কীনে ভেসে থাকা কুরআন একবার আসে আবার চলে যায়।সে হিসেবে আমাদের সামনে বিদ্যমান কুরআনের যে হুকুম, সেই হুকুম স্কীনে ভেসে থাকা কুরআনকে দেয়া যাবে না।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
বিনা অজুতে মুবাইল স্কীনে ভেসে থাকা কুরআনে কারীম-কে স্পর্শ জায়েয কি না? এ সম্পর্কে এতটুকুই বলা যায় যে,উলামায়ে কেরাম স্কীনে ভেসে থাকা কুরআনকে বাস্তবিক কুরআনের হুকুম দেননা।
শায়েখ আব্দুর রহমান আল-বার্রাক দাঃবা কে স্কীনে ভেসে থাকা কুরআন সম্পর্কে জিজ্ঞাস করা হয়েছিলো।প্রতিউত্তরে তিনি বলেছিলেন,
জানা কথা যে,মূখস্থ থেকে কুরআনে কারীমকে তেলাওয়াত করার জন্য হাদাসে আসগর থেকে পবিত্র হওয়া শর্ত নয়।বরং হাদাসে আকবর থেকে পবিত্র হলেই চলবে।তবে যদিও শর্ত নয় তথাপি হাদাসে আসগর থেকে নিজেকে পবিত্র করে নেয়াটাই উত্তম।কেননা এটা আল্লাহর কালাম।সুতরাং সম্মানের তাকাযা হল,অপবিত্র অবস্থায় কুরআনকে তেলাওয়াত না করা চায় হাদাসে আসগরই হোকনা কেন?
তবে আমাদের সামনে মুসহাফকে স্পর্শ করার জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্ত হলো,পবিত্র হওয়া।কেননা হাদীসে মাশহুরে এসেছে-
( ﻻ ﻳﻤﺲ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ ﺇﻻ ﻃﺎﻫﺮ )
কোনো অপবিত্র ব্যক্তি কুরআনকে স্পর্শ করতে পারবে না।
তাবেঈন তাবে-তাবেঈন এবং সমস্ত উলামাদের কাছ থেকে এটাই বর্ণিত রয়েছে।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
হাদাসে আকবর থেকে অপবিত্র অবস্থায় স্কীনে ভেসে থাকা কুরআন-কে স্পর্শ করা
কখনো জায়েয হবে না।আর হাদাসে আসগরের সময়ও কোনে মুসলমানের জন্য স্পর্শ করা কাম্য হতে পারে না।বরং স্পর্শ করাটটা সম্পূর্ণই অনুচিৎ বলে বিবেচিত হবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/145
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) অজু ছাড়া মোবাইলে কুরআন তেলাওয়াত করা অনুত্তম।
(২) অজু ছাড়া (মুসহাফ) কুরআন না ধরে পড়া যাবে। "সহজ কুরআন" নামের যে কিতাবের কথা আপনি বলেছেন, যেখানে ৪৭টি সুরা রয়েছে, অজু ছাড়া সেই কিতাব ধরা যাবে না। তবে না ধরে সুরা পড়া যাবে।
(৩)শুয়ে-বসে-দাঁড়িয়ে বা যখন যেভাবে ইচ্ছা (খতম ছাড়া বা খতমের নিয়তে) মোবাইলে কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে। তবে আদবের সাথে সম্মান দিয়ে কুরআন তিলাওয়াত করাই উত্তম।
(৪দ) এক/দুই পারা কুরআন পড়ে সওয়াব যে কাউকে বখশিয়ে দেয়া যাবে।তবে কারো খতম সম্পন্ন করার কোনো নিয়ম নাই।
(৫)মোবাইলে কারীদের শুরু থেকে একদম শেষ পর্যন্ত(ফাতিহা-নাস) কুরআন তেলাওয়াত শুনলে সওয়াব তো অবশ্যই পাবেন। রমজান মাসের মধ্যে পুরো কুরআন তেলাওয়াত শুনে শেষ করলে আরো বেশী সওয়াব পাবেন।তবে তিলাওয়াত করার মত সওয়াব পাবেন না।
(৬)হায়েজ অবস্থায় রাতে মুখস্ত বা মোবাইলে দেখে সুরা মুলক,ওয়াকিয়া সহ অন্যান্য আমলি সুরা পড়া যাবে না। হ্যা, দু'আর নিয়তে চার কুল, সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত, সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত ইত্যাদি পড়তে পারবেন।