জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
মুসাফিরের জন্য যোহর আসর ও ইশার ফরয নামায দুই রাকাত পড়া (কসর) ওয়াজিব; চার রাকাত (পূর্ণ পড়া) নাজায়েয,এতে সে গুনাহগার হবে । কারণ মুসাফিরের নামাযের বিধান হল কসর।
তবে যদি ভুলে ৪ রাকাত পড়ে ফেলে তাহলে ২ রাকাত পড়ে যদি বৈঠক করে থাকে তাহলে প্রথম ২ রাকাত ফরয হবে, আর বাকি ২ রাকাত নফল হিসেবে ধর্তব্য হবে। কিন্তু সালাম ফিরাতে দেরী হওয়ায় সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।
(মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/৫৪১)
যদি নামাযের শেষে সেজদায়ে সাহু দেয়, তাহলে নামায হয়ে যাবে,(মাকরুহের সহিত)। আর যদি সেজদায়ে সাহু না দেয়, তাহলে নামায পুনরায় পড়তে হবে।
যদি ২ রাকাতের পর বৈঠক না করে থাকে, তাহলে নামায হয় নি, নামাযটি পূণরায় পড়তে হবে।
(মারাকিল ফালাহ ২৩১; শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৮)
আয়েশা রাযি. বলেন,
فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ
মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)
অপর হাদিসে এসেছে,
عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)
باب مَنْ لَمْ يَتَطَوَّعْ فِي السَّفَرِ دُبُرَ الصَّلاَةِ وَقَبْلَهَا
সফরকালে ফরয সালাতের আগে ও পরে নফল সালাত আদায় না করা।
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَنَّ حَفْصَ بْنَ عَاصِمٍ، حَدَّثَهُ قَالَ سَافَرَ ابْنُ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ فَقَالَ صَحِبْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ أَرَهُ يُسَبِّحُ فِي السَّفَرِ، وَقَالَ اللَّهُ جَلَّ ذِكْرُهُ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ).
ইয়াহ্ইয়া ইবনু সুলাইমান (রহঃ) ... হাফস ইবনু আসিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) একবার সফর করেন এবং বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহচর্যে থেকেছি, সফরে তাঁকে নফল সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখিনি এবং আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ “নিশ্চই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাবঃ ২১১)
وأما الثالث․․․ فہو تغییر بعض الأحکام فذکر المصنف منہا قصر الصلاة والمراد وجوب قصرہا حتی لو أتمّ فإنہ آثم وعاصٍ؛ لأن الفرض عندنا من ذوات الأربع رکعتان في حقہ لا غیر إلخ (۲/ ۲۲۹، ط: زکریا)
যদি মুসাফির পুরো নামাজ পড়ে,তাহল সে গুনাহগার হবে,,,,,,।
فلو أتمّ وقعد في الثانیة صحّ وإلا فلا أي وإن لم یقعد علی رأس الرکعتین لم یصحّ فرضہ الخ (البحر الرائق، ۲/۲۳۰، ط: زکریا)
যদি কেহ চার রাকাত নামাজই পড়ে নেয়,২য় রাকাতে বৈঠক করে,তাহলে নামাজ ছহীহ হয়ে যাবে।
অন্যথায় নামাজ ছহীহ হবেনা,,,,,।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি শরয়ী সফরের দুরত্বে আপনি যান,তাহলে কসর নামাজই পড়তে হবে।
এটা ওয়াজিব।
,
(উল্লেখ্য অন্যান্য কিছু মাযহাব,এবং কিছু ইসলামী স্কলারদের মত হলো মুসাফিরের জন্য কসর পড়া জায়েয, তবে ওয়াজিব নয়।
তাদের মতানুসারীরা সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।)