শরীয়তের বিধান মতে মহিলাদের ঘরে নামাজ আদায় করা উত্তম।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﻗَﺮْﻥَ ﻓِﻲ ﺑُﻴُﻮﺗِﻜُﻦَّ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺒَﺮَّﺟْﻦَ ﺗَﺒَﺮُّﺝَ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺍﻟْﺄُﻭﻟَﻰ ﻭَﺃَﻗِﻤْﻦَ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﺁﺗِﻴﻦَ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻭَﺃَﻃِﻌْﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻴُﺬْﻫِﺐَ ﻋَﻨﻜُﻢُ ﺍﻟﺮِّﺟْﺲَ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﺒَﻴْﺖِ ﻭَﻳُﻄَﻬِّﺮَﻛُﻢْ ﺗَﻄْﻬِﻴﺮًﺍ
তরজমাঃ তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।(সূরা-আহযাব-৩৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
হযরত উম্মে হুমাইদ আস সাআদী রাযি. থেকে বর্ণিত, একবার তিনি রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর নিকট এসে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আপনার পিছনে নামাজ আদায় করতে চাই। নবী করীম ﷺ উত্তরে বললেন,
قَدْ عَلِمْتُ أَنَّكِ تُحِبِّينَ الصَّلاةَ مَعِي وَصَلاتُكِ فِي بَيْتِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلاتِكِ فِي حُجْرَتِكِ وَصَلاتُكِ فِي حُجْرَتِكِ خَيْرٌ مِنْ صَلاتِكِ فِي دَارِكِ وَصَلاتُكِ فِي دَارِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلاتِكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ وَصَلاتُكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلاتِكِ فِي مَسْجِدِي قَالَ فَأَمَرَتْ فَبُنِيَ لَهَا مَسْجِدٌ فِي أَقْصَى شَيْءٍ مِنْ بَيْتِهَا وَأَظْلَمِهِ فَكَانَتْ تُصَلِّي فِيهِ حَتَّى لَقِيَتْ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ
‘আমি ভালো করেই জানি, তুমি আমার পিছনে নামাজ আদায় করতে চাও। কিন্তু তোমার জন্য তোমার রুমে নামাজ আদায় করা অন্য রুমে আদায় করার চেয়ে উত্তম। আর তোমার ঘরের কোনো রুমে আদায় করা বাড়িতে আদায় করার চেয়ে উত্তম। আর তোমার বাড়িতে নামাজ আদায় করা কওমের (এলাকার ) মসজিদে আদায় করার চেয়ে উত্তম। আর তোমার কওমের (এলাকার ) মসজিদে নামাজ আদায় করা আমার পিছনে নামাজ আদায় করার চেয়ে উত্তম। এরপর ঐ মহিলা তার অন্ধকার কুঠরিতে নামাজের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে নেয়। এবং মৃত্যু পর্যমত সেখানেই নামাজ আদায় করতে থাকে।’ (মুসনাদে আহমাদ ৩৭/৪৫)
,
আরো জানুনঃ
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
শরীয়তের বিধান হলো তারাবিহ এর ক্ষেত্রে যদি পুরুষ ইমাম হয়,এবং তার ইক্তেদায় পিছনে পর্দার সহিত মহিলারাও ঘরে শরিক হয়,এবং ইমামের পিছনে অন্য পুরুষরাও মুক্তাদী হয় অথবা মহিলাদের মধ্যে যদি ঐ ইমামের মাহরাম কেহ থাকে,তাহলে এভাবে তারাবিহ এর জামাতের সুযোগ রয়েছে।
তবে উত্তম হলো এখানে শুধু ঘরের মহিলারাই শামিল হবে,বাহিরের মহিলাদের সেখানে জমা হওয়ার দাওয়াত দিবেনা।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৫/৫৪. ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়্যাহ ১/৩৪৭.ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম ৪/২৫০)
کما تکرہ إمامۃ رجل لہن في بیت لیس معہن رجل غیرہ ولا محرم منہ کأختہ أو زوجتہ أو أمتہ أما إذا کان معہن واحد ممن ذکر أو أمہن في المسجد لا یکرہ۔ (الدر المختار مع الشامي ۲؍۳۰۷ زکریا)
সারমর্মঃ
অনুরূপ ভাবে মহিলাদের ঐ ইমামের ইমামতি মাকরুহ, যেখানে তার সাথে অন্য কোনো পুরুষ না থাকে,অথবা ঐ ইমামের কোনো মাহরাম মহিলা (যেমন তারা স্ত্রী,বোন,মা) সেখানে শরিক না থাকে।
হ্যাঁ যদি ইমামের সাথে কোনো একজন পুরুষ থাকে,অথবা তার মাহরাম মহিলা সেই জামাতে থাকে,তাহলে এটি মাকরুহ নয়।
والفتوی الیوم علی الکراہۃ فی کل الصلوات لظہور الفساد۔ (الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۱؍۱۵۷
সারমর্মঃ
বর্তমান যামানায় প্রত্যেক নামাজেই মহিলাদের জন্য ঘর হতে বের হওয়া মাকরুহ,ফিতনা ফাসাদ প্রকাশ পাওয়ার কারনে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বৃহত্তর স্বার্থে মানে অনেকগুলো মানুষ নামাজে রেগুলার হবে - এই জন্য প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে তারাবিহ এর জামাতের আয়োজন করা যাবেনা।
এটি মাকরুহে তাহরিমি হবে।
"মাকরুহে তাহরিমি করলে ওই অর্থে লাভ নেই এবং না করলে ক্ষতি নাই ধরনের কাজ"
এটি সম্পূর্ণ ভূল কথা। মাকরুহ তাহরিমি কাজ নাজায়েজ,যাহা হারামের নিকটতম।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে তারাবিহ এর জামাত জায়েজ হবেনা।