আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
96 views
in সাওম (Fasting) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ।

আমার নানু ৬৪+ বয়স। ২০১৮ সালে ডক্টররা বলছিলো উনি আর বাঁচবে না। উনার জন্য আর কোনো চিকিৎসা নেই। কিছু ডক্টর ক্যান্সার বলছিলো। এখনও নানু বেঁচে আছেন কিন্তু অনেক অসুস্থ। এই অবস্থায় নানুর রোজা রাখার বিধান কি?? উনি রোজা রাখলে অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে যায়। আর গরম পানি তো একটু পর পর খাইতেই হয়।

১/ এমন অবস্থায় উনি কি রোজা  না রাখতে পারবে??

উনার মাহরাম কেউ নেই দুই মেয়ের জামাই ছাড়া। উনি ছোট মেয়ের বাসায় থাকে কিন্তু ছোট মেয়ের আর্থিক অবস্থা ভালো না। বড় মেয়ের আর্থিক অবস্থা ভালো কিন্তু তারা উনাকে সাথে রাখতে চায় না। তবে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা ঔষূধের খরচ দেয়।
এখন এমন অবস্থায় যদি রোজা না রেখে কাফফারা দিতে হয় তাহলে কতটুকু কাফফারা দিতে হবে?? উনার এই ঔষূধ খরচ ২ হাজার ছাড়া আর কোনো টাকা নেই। ঔষূধ কিনে যা বাঁচে তা জমা করার চেষ্টা করে। আবার ছোট মেয়ে বিপদে পড়লে তাকে টাকা দেয় এই জমানো থেকে।

২/ এমন অবস্থায় উনার কি রোজার কাফফারা দিতে হবে?? আর দিলেও কত দিবে??

৩/ উনার অতীতের যে রোজাগুলা রাখতে পারে নি সেগুলোর জন্য কি করবে?? কি পরিমাণ কাফফারা দিবে??

উনার ছোট মেয়ে, মেয়ের জামাইর তো আর্থিক অবস্থা ভালো না উনারা তাই নানুর কাফফারা আদায় করা সম্ভব  হচ্ছে না।
এ অবস্থায় কি করতে হবে??

জাযাকাল্লাহ খইরন।

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
https://ifatwa.info/14499/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
সুরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

شَهۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡهِ الۡقُرۡاٰنُ هُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡهُدٰی وَ الۡفُرۡقَانِ ۚ فَمَنۡ شَهِدَ مِنۡکُمُ الشَّهۡرَ فَلۡیَصُمۡهُ ؕ وَ مَنۡ کَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیۡدُ اللّٰهُ بِکُمُ الۡیُسۡرَ وَ لَا یُرِیۡدُ بِکُمُ الۡعُسۡرَ ۫ وَ لِتُکۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَ لِتُکَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰی مَا هَدٰىکُمۡ وَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۱۸۵﴾

রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না। আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
ছাবেত বুনানী রাহ. বলেন, আনাস ইবনে মালেক রা. যখন বার্ধক্যের কারণে রোযা রাখতে সক্ষম ছিলেন না তখন তিনি রোযা না রেখে (ফিদয়া) খাবার দান করতেন।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযযাক, হাদীস : ৭৫৭০
,
ইকরিমা রাহ. বলেন, ‘‘আমার মা প্রচন্ড তৃষ্ণা-রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং রোযা রাখতে সক্ষম ছিলেন না। তাঁর সম্পর্কে আমি তাউস রাহ.কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, ‘প্রতি দিনের পরিবর্তে মিসকীনকে এক মুদ (বর্তমান হিসাবে পৌনে দুই কেজি) পরিমাণ গম প্রদান করবে’।’’-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৭৫৮১

এক রোযার পরিবর্তে এক ফিদয়া ফরয  হয়। এক ফিদয়া হল, কোনো মিসকীনকে  দু বেলা পেট ভরে খানা খাওয়ানো অথবা এর মূল্য প্রদান করা।

হযরত সায়ীদ ইবনে মুসাইয়্যিব রাহ. বলেন-

وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ

এই আয়াত রোযা রাখতে অক্ষম বৃদ্ধের জন্য প্রযোজ্য।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৭৫৮৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৬৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২৬

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার নানু রোজা রাখলে তার অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে যায়। আর গরম পানি তো একটু পর পর খাইতেই হয়।
কিছু ডাক্তার তার ক্যান্সার আছে বলেছেন।

সব দিক বিবেচনা করে রোযা রাখা যেহেতু আপনার নানুর শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

রোগ বৃদ্ধি পাবে বা রোগ-ভোগ দীর্ঘ হওয়ার প্রবল আশঙ্কা আছে,
(যেমনটি প্রশ্নে উল্লেখিত তথ্যের দ্বারা বুঝা যাচ্ছে) সুতরাং সে ব্যাক্তি রোযা রাখবেনা।

প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির অবস্থা যদি এমন হয় যে অভিজ্ঞ তার সম্পর্কে বলে যে এই অবস্থায় রোযা তার শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

রোগ বৃদ্ধি পাবে বা রোগ-ভোগ দীর্ঘ হওয়ার প্রবল আশঙ্কা আছে,
(যেমনটি প্রশ্নে উল্লেখিত তথ্যের দ্বারা বুঝা যাচ্ছে) সুতরাং আপনার নানু রোযা রাখবেনা

পরবর্তীতে কাজা আদায়ের মতো সুস্থ হলে এর কাজা আদায় করবে,যদি তিনি আর সুস্থ না হয়,তাহলে  প্রত্যেক রোযার জন্য ফিদিয়া আদায় করবে। 

তার নিজ মালিকানায় জায়গা জমি যাহা আছে,তাহা দিয়ে তার ফিদইয়াহ আদায় করতে হবে।
নিজ মালিকানায় যদি কিছুই না থাকে,একেবারেই নিঃস্ব হয়,সেক্ষেত্রে তার আত্মীয় দের মধ্যে হতে কেহ ইহসান ও দয়া করে তার ফিদইয়াহ আদায় করতে পারে।
,
আরো জানুনঃ 

(০২)
কাফফারা আবশ্যক হবেনা।
,
পরবর্তীতে কাজা আদায়ের মতো সুস্থ হলে এর কাজা আদায় করবে,যদি তিনি আর সুস্থ না হয়,তাহলে  প্রত্যেক রোযার জন্য ফিদিয়া আদায় করবে। 

একটি ফিদইয়াহ হলো সদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ টাকা গরিব মিসকিনকে দান করা।

(০৩)
সুস্থ হলে সেগুলোর কাজা আদায় করবে যদি তিনি আর সুস্থ না হয়,তাহলে অতিতের অনাদায় প্রত্যেক রোযার জন্য ফিদিয়া আদায় করবে। 

(০৪)
তার নিজ মালিকানায় জায়গা জমি যাহা আছে,তাহা দিয়ে তার ফিদইয়াহ আদায় করতে হবে।
নিজ মালিকানায় যদি কিছুই না থাকে,একেবারেই নিঃস্ব হয়,সেক্ষেত্রে তার আত্মীয় দের মধ্যে হতে কেহ ইহসান ও দয়া করে তার ফিদইয়াহ আদায় করতে পারে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 90 views
...